ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

আফগানদের বিপক্ষে সিরিজে নতুন মুখ সৈকত

প্রকাশিত: ০৫:৩৭, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৬

আফগানদের বিপক্ষে সিরিজে নতুন মুখ সৈকত

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ বাংলাদেশ-আফগানিস্তানের মধ্যকার তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ শুরু হতে আর মাত্র দুই দিন বাকি। প্রথম ওয়ানডে দিয়ে রবিবার থেকে সিরিজ শুরু হবে। সিরিজ শুরুর তিনদিন আগে বৃহস্পতিবার ১৩ সদস্যের বাংলাদেশ দল ঘোষণা করেছেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) নির্বাচক কমিটি। প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন নান্নুর ঘোষিত দলে নতুন মুখ একটি। তিনি ঘরোয়া লীগে দাপট দেখানো আবাহনীর ক্রিকেটার মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত। একটি টি২০ খেললেও ওয়ানডেতে প্রথমবারের মতো সুযোগ পেয়েছেন সৈকত। দলে আর কোন নতুন মুখ নেই। তবে আবার জাতীয় দলের চূড়ান্ত স্কোয়াডে ফিরেছেন পেসার শফিউল ইসলাম, রুবেল হোসেন ও স্পিনার তাইজুল ইসলাম। গত বছর নবেম্বরে বাংলাদেশ দল শেষ ওয়ানডে সিরিজ খেলে। জিম্বাবুইয়ের বিপক্ষে সেই সিরিজটি হয়। ১০ মাস পর আবার বাংলাদেশ ওয়ানডে খেলতে নামবে। সিরিজ খেলতে নামবে। জিম্বাবুইয়ের বিপক্ষে সিরিজের দল থেকে আছেন নয়জন। তারা হলেনÑ অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা, ব্যাটসম্যান ইমরুল কায়েস, মুশফিকুর রহীম, নাসির হোসেন, সাব্বির রহমান রুম্মন, ওপেনার তামিম ইকবাল, সৌম্য সরকার, অলরাউন্ডার মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ও সাকিব আল হাসান। এর মধ্যে সৌম্য দলে থাকলেও ইনজুরির জন্য সিরিজ থেকে নাম প্রত্যাহার করে নিয়েছিলেন। সর্বশেষ ওয়ানডে সিরিজ থেকে বাদ পড়েছেন সাতজন। পেসার আল আমিন হোসেন, কামরুল ইসলাম রাব্বি, মুস্তাফিজুর রহমান, ব্যাটসম্যান এনামুল হক বিজয়, লিটন কুমার দাস, স্পিনার আরাফাত সানি ও জুবায়ের হোসেন লিখন বাদ পড়েছেন। যদি টি২০ বিশ্বকাপের দল ধরা হয়, তাহলে সেই দল থেকে বাদ পড়েছেন পেসার আবু হায়দার রনি, আল আমিন হোসেন, মোহাম্মদ মিঠুন, মুস্তাফিজুর রহমান, নুরুল হাসান সোহান, সাকলায়েন সজিব, শুভাগত হোম চৌধুরী, তাসকিন আহমেদ। বাদ পড়া ক্রিকেটারদের মধ্যে আল আমিনের বাদ পড়া নিয়ে সবার মধ্যেই প্রশ্ন তৈরি হয়। কারণ, শফিউলের চেয়ে ঘরোয়া কিংবা আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বিগত দিনগুলোতে আল আমিন বেশি কার্যকর হয়েছে। অস্ত্রোপচারের পর আবার ক্রিকেটে ফিরতে পুনর্বাসন প্রক্রিয়ায় আছেন মুস্তাফিজ। তাই দলে নেই। ঈদের আগে বিসিবি যে আফগানিস্তান ও ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজের জন্য ২০ সদস্যের পুল ঘোষণা করেছে, সেখানেই ছিলেন না পেসার রাব্বি, ব্যাটসম্যান লিটন। তাই চূড়ান্ত দলে থাকারও সম্ভাবনা আগেই নাই হয়ে গেছে। বিজয় পুলে থাকলেও তামিম, সৌম্য ও ইমরুলকে সুযোগ দিতে হলে বিজয়কে তো বাদ দিতেই হবে। স্পিনার সানিকে আগেই বাদ দেয়া হয়েছে। আর লিখনও ছিলেন না ২০ সদস্যের পুলে। মোহাম্মদ মিঠুন, নুরুল হাসান সোহান, সাকলায়েন সজিব, শুভাগত হোমরাও পুলেই জায়গা করে নিতে পারেননি। তবে আফগানিস্তানের বিপক্ষে প্রথম দুই ওয়ানডের জন্য দলটি ঘোষণা করা হয়েছে। আর দলও দেয়া হয়েছে ১৩ সদস্যের। বোলিং এ্যাকশন শুদ্ধ প্রমাণ করার যে পরীক্ষা দিয়েছেন তাসকিন, তার ফল আসবে দ্রুতই। আফগানিস্তানের বিপক্ষে রবিবার সিরিজ শুরু হবে। ২৮ সেপ্টেম্বর দ্বিতীয় ও ১ অক্টোবর তৃতীয় ওয়ানডে অনুষ্ঠিত হবে। এর মধ্যে তাসকিনের ফল এসে পড়লে, আর সেই ফল ইতিবাচক হলে দলে যুক্ত হয়ে যাবেন তিনি। আর নেতিবাচক ফল হলে আল আমিন দলে ঢুকবেন। বাকিরা যারা আছেন, তাদেরও দলে যুক্ত হওয়ার সুযোগ থাকছে। দুই ওয়ানডেতে কেউ যদি বিশেষ খারাপ করেন, তাহলে ২০ সদস্যের পুলে থাকা বাকি ক্রিকেটারদের থেকে তৃতীয় ওয়ানডের জন্য দলে ঢোকানো হবে। এর সঙ্গে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের দলে থাকারও সুযোগ থাকছে। ২০১৪ সালের নবেম্বরে সর্বশেষ ওয়ানডে খেলেছিলেন ৫২ ওয়ানডেতে ৫৮ উইকেট নেয়া শফিউল। প্রায় ২ বছর পর আবার খেলার সুযোগ পাচ্ছেন। গত বছর ওয়ানডে বিশ্বকাপেই খেলেছেন তাইজুল। দেড় বছর পর ২ ওয়ানডে খেলে ৪ উইকেট শিকার করা এ স্পিনার আবার ওয়ানডেতে জাতীয় দলে ফিরলেন। ৬৭ ওয়ানডেতে ৮৭ উইকেট নেয়া পেসার রুবেল হোসেন আবার ফিরেছেন। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে গত বছর সিরিজ খেলেছিলেন। এরপর আবার জাতীয় দলে তাকে দেখা যায়নি। আবার খেলবেন রুবেল। অস্ট্রেলিয়ার ব্রিসবেনে তাসকিনের সঙ্গে বোলিং এ্যাকশন শুদ্ধ করার পরীক্ষা দেয়া আরাফাত সানিকে আফগানিস্তানের বিপক্ষে সিরিজের জন্য বিবেচনা করা হয়নি আগেই। তাই মোশাররফ হোসেন রুবেলকে তড়িঘড়ি করে দলে যুক্ত করা হয়। কিন্তু শেষপর্যন্ত মোশাররফকে চূড়ান্ত দলে রাখা হয়নি। তবে এ বিষয়টি হতাশা তৈরি না করলেও আল আমিনকে দলে না নেয়া হতাশাই জাগিয়েছে। যদিও সর্বশেষ দেশের মাটিতে হওয়া ওয়ানডে সিরিজে আল আমিন বিশেষ কিছু করে দেখাতে পারেননি। জিম্বাবুইয়ের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে তিন ম্যাচে ৪ উইকেট নিয়েছেন। আর টি২০ বিশ্বকাপে ৬ ম্যাচে বোলিং করে নিয়েছেন ৮ উইকেট। ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লীগে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারিদের মধ্যে পঞ্চম স্থানে ছিলেন আল আমিন। ১৬ ম্যাচে ২৫ উইকেট নেন। সেই তুলনায় শফিউল ইসলাম ১০ ম্যাচে ১১ উইকেট নেন। তবে শফিউলকেই বেশি কার্যকর মনে করা হয়। প্রথমবারের মতো প্রধান কোচ চন্দ্রিকা হাতুরাসিংহে, নির্বাচক নান্নু এন্ড গং, ম্যানেজার খালেদ মাহমুদ সুজন, ক্রিকেট অপারেশন্স কমিটির চেয়ারম্যান আকরাম খানের নেতৃত্বে গড়া দল শফিউলকেই নেয়। আর তাসকিনের জন্য এখনও অপেক্ষা করা হচ্ছে। প্রধান নির্বাচক নান্নু দল ঘোষণার পর বলেছেন, ‘আমাদের নির্বাচক কমিটিতেই এখন কোচ (চন্দ্রিকা হাতুরাসিংহে) আছেন। আমাদের সিদ্ধান্তের সঙ্গে কোচও থাকেন। আমরা তিন নির্বাচক ও কোচ মিলেই সিদ্ধান্ত নেই। বিগত দিনগুলোতে দেখবেন আমরা চার সিমার নিয়েই দল গড়েছি। ঘোষিত দলে তিন সিমার আছে। তাসকিনের জন্য অপেক্ষা করতেই হবে। ফল যদি ইতিবাচক হয়, তাহলে দলে নেয়া হবে। এখনও হাতে একদিন সময় আছে। আর যদি নেতিবাচক হয়, তাহলে অন্য কেউ দলে ঢুকবে।’ শফিউলকে নেয়ার বিষয়ে নান্নু বলেন, ‘প্রস্তুতি ম্যাচ ও ফিটনেস ক্যাম্প দেখে শফিউলকেই নেয়া হয়েছে। ফিটনেসেও উন্নতি করেছে। ফিটনেস লেভেলে অনেক ভাল অবস্থানে আছে শফিউল। নতুন বলে সুইং করার ক্ষমতাও আছে তার। অনেক উন্নতি করেছে। ফিল্ডিংয়ে আল আমিনের চেয়েও এগিয়ে শফিউল। তবে সামনে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ রয়েছে। সেখানেও খেলার সুযোগ আছে আল আমিনের।’ বাংলাদেশ দল ॥ মাশরাফি বিন মর্তুজা (অধিনায়ক), সাকিব আল হাসান, তামিম ইকবাল, সৌম্য সরকার, ইমরুল কায়েস, সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহীম, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত, নাসির হোসেন, সাব্বির রহমান রুম্মন, তাইজুল ইসলাম, রুবেল হোসেন ও শফিউল ইসলাম।
×