ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

পরিকল্পনা কমিশনের ক্ষমতা কমানো হবে আত্মঘাতী

প্রকাশিত: ০৩:৫৭, ৫ সেপ্টেম্বর ২০১৬

পরিকল্পনা কমিশনের ক্ষমতা  কমানো হবে আত্মঘাতী

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ পরিকল্পনা কমিশনকে পুনর্গঠনের নামে এর ক্ষমতা কমানোর বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের প্রস্তাবনাকে আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা। তাদের মতে, এ ধরনের উদ্যোগ বাস্তবায়ন হলে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচীসহ সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পের ত্রুটি-বিচ্যুতি ক্ষতিয়ে দেখার আর কোন সুযোগ থাকবে না। এর ফলে রাষ্ট্রীয় ব্যয় বৃদ্ধিসহ জনগণের টাকা অপচয় ও অপব্যহারেরও সুযোগ সৃষ্টি হবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। ১৯৭২ সালের জানুয়ারিতে যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশের পুনর্গঠন ও উন্নয়ন কাজের পরিকল্পনার জন্য গঠন করা হয় আলাদা পরিকল্পনা কমিশন। শুরুতে ৯টি বিভাগের সদস্যদের প্রতিমন্ত্রী এবং কমিশন চেয়ারম্যানের মন্ত্রীর পদমর্যাদার ক্ষমতা দেয়া হলেও পরবর্তীতে এরশাদ সরকারের আমলে কমিশনের বিভাগ ৬টিতে কমিয়ে এনে এর সদস্যদের মর্যাদা কমিয়ে সচিব সমমানের করা হয়। মাঠপর্যায়ে তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ এবং বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের নেয়া প্রকল্পের বাস্তবতা ও গ্রহণযোগ্যতা যাচাই-বাছাইয়ের মাধ্যমে ত্রুটি বিচ্যুতি পরীক্ষা করে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের এ কমিশনটি। এছাড়া ভবিষ্যত বাংলাদেশের জন্য দীর্ঘমেয়াদী প্রকল্পের পরিকল্পনা করে এ বিভাগ। সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের সদস্য (জ্যেষ্ঠ সচিব) ড. শামসুল আলম বলেন, যেহেতু জনগণের ট্যাক্সের টাকায় প্রকল্পের কাজ হয়ে থাকে। সেজন্য স্বাধীনভাবে মূল্যায়নের প্রয়োজন আছে। অর্থের যথাযথ এবং সদ্ব্যবহার যাতে হয় সেটা নিশ্চিত করা প্রয়োজন। মন্ত্রণালয়গুলো যে প্রকল্প জমা দেয় তার বিচার-বিশ্লেষণ, তার সম্ভাব্যতা, অর্থনৈতিকভাবে লাভজনক হবে কিনাÑ এ সকল বিষয়গুলো পরিকল্পনা কমিশন মূল্যায়ন করে আসছে। তাতে ৩৫ শতাংশ ব্যয় সাশ্রয় হয়। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে পরিকল্পনা কমিশনকে আরও গতিশীল করার কৌশল খুঁজতে গিয়ে সম্প্রতি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এ সংস্থার ক্ষমতা কমানোর পরামর্শ দেয়। তাদের মতে, পরিকল্পনা কমিশনের যাচাই-বাছাইয়ে সময়ক্ষেপণে দেরি হয় প্রকল্প অনুমোদন। বিশ্লেষকরা বলেছেন, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের পরামর্শ কার্যকর হলে, উন্নয়ন প্রকল্পের ত্রুটি-বিচ্যুতি ও সুশাসনের বিষয়ে নজরদারির আর কোন সুযোগ থাকবে না। ফিন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেসের সম্পাদক মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, দীর্ঘসূত্রিতা প্রকল্প বাস্তবায়নে মূল্য বৃদ্ধি পায়। পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের একটা নিজস্ব সক্ষমতার দরকার আছে। সমন্বয়ের দরকার আছে। একটা আরেকটাকে বাদ দিয়ে চলবে না। বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গবর্নর ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, তারা প্রকল্প প্রণয়ন করবে, মনিটর করবে একেবারে নিরপেক্ষভাবে সেটা হবে না। প্রকল্প অনুমোদন হতে বহুদিন লেগে যায়।
×