স্টাফ রিপোর্টার, সিলেট অফিস ॥ ভারত হয়ে সৌদি আরব যাওয়ার উদ্দেশ্যে সিলেট থেকে ভারতের করিমগঞ্জে গিয়ে মৃত্যুবরণকারী জকিগঞ্জের আব্দুল আহাদের (৬০) লাশ শুক্রবার দেশে নিয়ে আসা হয়েছে। শুক্রবার বেলা ২টায় জকিগঞ্জ সীমান্ত পথে আসাম রাজ্যের পুলিশ ও বিএসএফ, বাংলাদেশের বর্ডার গার্ড ও ইমিগ্রেশন পুলিশের কাছে আব্দুল আহাদের লাশ হস্তান্তর করে। আইনী কার্যক্রম শেষে পরিবারের কাছে আব্দুল আহাদের লাশ হস্তান্তর করা হবে। জকিগঞ্জ থেকে ভারতের করিমগঞ্জ পাড়ি দেয়ার পর গত মঙ্গলবার আব্দুল আহাদের মৃত্যু ঘটে। আহাদের মৃত্যুর পর তার লাশ নিয়ে বেকায়দায় পড়ে যায় অপর সঙ্গী ৪জন। এক পর্যায়ে এই লাশ ফেলতে গিয়েই তারা ধরা পড়ে যায়। করিমগঞ্জ থেকে আটক সিলেটের জকিগঞ্জ ও কানাইঘাট এলাকার বাসিন্দা ৪ যুবক কম টাকায় সৌদি আরবে যাওয়ার জন্য ভারতে পাড়ি দিয়েছিল। সেখানে গিয়ে তারা ভারতের পাসপোর্ট সংগ্রহের চেষ্টাও করেছিল। পুলিশের কাছে এমন বক্তব্য দিয়েছে তাদের পরিবারের সদস্যরা। পরিবারের সদস্যদের বরাত দিয়ে স্থানীয় পুলিশ জানায়, মূলত পাঁচজন বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে করিমগঞ্জে পৌঁেছ। এর মধ্যে মোঃ আবদুল আহাদ নামের একজন মারা যায়। আর তার লাশ ফেলতে গিয়েই পুলিশের হাতে ধরা পড়ে বাকি চারজন। বৃহস্পতিবার জকিগঞ্জে প্রত্যেকের গ্রামের বাড়িতে গিয়ে পুলিশ এমন তথ্য পেয়েছে। আটককৃতরা কোন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত নয় বলেও স্থানীয় লোকজন পুলিশকে জানিয়েছে। অসম পুলিশ ওই চার যুবককে সন্দেহভাজন জঙ্গী বলে ১৪ দিনের রিমান্ডে নিয়েছে। গত মঙ্গলবার আসাম রাজ্যের করিমগঞ্জের নিলাম বাজার এলাকা থেকে এদের আটকের পর থেকেই তাদের জঙ্গী হিসেবে সন্দেহ করছে রাজ্য পুলিশ। সেইসঙ্গে সেখানকার স্থানীয় দৈনিকে আটককৃতদের সঙ্গে আইএসের যোগসূত্র রয়েছে বলেও সংবাদ প্রকাশ করেছে। করিমগঞ্জ পুলিশের কাছে আটককৃতরা জানিয়েছে তাদের বাড়ি সিলেট জেলার জকিগঞ্জে। সিলেট পুলিশও এর সত্যতা পেয়েছে। এরমধ্যে করিমগঞ্জ পাড়ি দেয়ার পর মোঃ আবদুল আহাদ মারা যান। তার বাড়ি উপজেলার নিয়াগুল গ্রামে। তার বাবা মোজাম্মেল আলী। তিনি বাড়ির কাউকে না বলে ভারতে যান। পরের দিন ছেলের কাছে ফোন করে জানান, কম টাকায় সৌদিতে কাজের উদ্দেশ্যে যাওয়ার জন্য তারা ভারতে অবস্থান করছে। এরপর তার পরিবারের লোকজন বুধবার জানতে পারে করিমগঞ্জে তার মৃত্যু ঘটেছে। আটককৃতরা হলো উপজেলার কালাকুটার মাহমুদ আলীর পুত্র সাব্বির আহমদ, শাহজাহানপুর গ্রামের মাসুক আহমদের পুত্র সুমন আহমদ ও আনারসা গ্রামের হাজী মুছব্বির আলীর পুত্র দিলওয়ার ওরফে জামাল ও কানাইঘাটের শাহিদ আহমদ।
পুলিশের কাছে তাদের পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, এরা সবাই কম টাকায় সৌদি আরবে যাওয়ার জন্য ভারতে যায়। করিমগঞ্জের কোন এক দালাল চক্রের কাছ থেকে জানতে পারে সেখানে ভারতীয় পাসপোর্ট সংগ্রহ করলেই কম টাকায় সৌদি যেতে পারবে। স্থানীয় লোকজন জানান, আটককৃতদের কোন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ততা বা তাদের বিরুদ্ধে জঙ্গী কার্যক্রমের কোন তথ্য তাদের জানা নেই।