ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

পদাতিকের নতুন নাটক গহনযাত্রার বিশেষ প্রদর্শনী

প্রকাশিত: ০৫:৫২, ১২ জুলাই ২০১৬

পদাতিকের নতুন নাটক গহনযাত্রার বিশেষ প্রদর্শনী

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ধর্মীয় উগ্রবাদের কাছে যেন অসহায় হয়ে পড়ছে মানবতার বাণী। বিস্তৃত হচ্ছে মৌলবাদের শাখা-প্রশাখা। ধর্মান্ধদের আগ্রাসনে বারবার কেঁপে উঠছে গোটা পৃথিবী। তাই উগ্রপন্থার চরম নির্মমতার শিকার হচ্ছে শান্তিপ্রিয় মানুষ। এই ধর্মান্ধতার কাহিনীকে উপজীব্য করে ঢাকার মঞ্চে এসেছে পদাতিক নাট্য সংসদের (টিএসসি) নতুন নাটক গহনযাত্রা। নাটকটি রচনা করেছেন রুবাইয়াৎ আহমেদ। নির্দেশনা দিয়েছেন সুদীপ চক্রবর্তী। প্রযোজনাটিতে একক অভিনয় করছেন শামছি সারা সায়েকা। গত জুন মাসে কারিগরি মঞ্চায়নের পর সোমবার অনুষ্ঠিত হলো গহনযাত্রা প্রযোজনাটির বিশেষ প্রদর্শনী। সন্ধ্যায় অতিথি ও সংবাদমাধ্যমকর্মীদের জন্য শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার এক্সপেরিমেন্টাল থিয়েটার হলে মঞ্চস্থ হয় নাটকটি। শীঘ্রই প্রযোজনাটির উদ্বোধনী মঞ্চায়ন হবে বলে পদাতিক নাট্য সংসদের পক্ষ থেকে জানানো হয়। প্রযোজনাটি প্রসঙ্গে নির্দেশক সুদীপ চক্রবর্তী বলেন, সব ধর্মই শান্তি ও মানবতার কথা বলে। তবে ধর্ম ব্যবসায়ীদের আগ্রাসনে কোণঠাসা হয়ে পড়েছে শান্তি ও সম্প্রীতি। ধর্মান্ধদের সহিংসতায় প্রাণ হারাচ্ছে নিরপরাধ মানুষ। এই সহিংসতার বিরুদ্ধে প্রতিবাদী প্রযোজনা গহনযাত্রা। নাটকের কাহিনীতে এই ভূখ-ের কোন এক স্থানে জন্ম নেয় উগ্রপন্থার। সেই উগ্রপন্থার অনুসারীরা প্রত্যাখ্যান করে বিপরীত সব মতবাদকে। পেশিশক্তি দিয়ে প্রতিষ্ঠিত করতে চায় নিজেদের অন্ধ মতবাদকে। এজন্য তারা ক্রমাগত চালিয়ে যায় ধ্বংসলীলা। বইয়ে দেয় রক্তগঙ্গা, হত্যা করে অগণিত মানুষ, ধর্ষিত হয় অসংখ্য নারী। ভিন্ন মতাদর্শের এক ক্ষুদ্র সম্প্রদায়ের মানুষদের তারা ধরে নিয়ে বন্দী করে রাখে। বন্দীদশা থেকে পালাতে চায় অনেকে। তবে মৃত্যুই হয় তাদের শেষ ঠিকানা। বন্দীদের মধ্যে শুধু বেঁচে যায় সালমা নামের এক নারী। কিন্তু খোলা প্রান্তরে পড়ে থাকা লাশগুলো সমাহিত করবে বলে বেঁচে গিয়েও ফিরে আসে সালমা। একসময় সালমা নিজের অভ্যন্তরে অনুভব করে অপর কারো অস্তিত্ব। সেই অস্তিত্ব হয়ত তারই বর্ধিত কোন রূপ কিংবা অপররূপে সে নিজেই অথবা অন্যকিছু। সেই অস্তিত্ব সঙ্গী হয় তার। মৃতদের সমাহিত করার পর সালমা খোঁজ করে তার প্রার্থিত পুরুষের। খুঁজে পায় ল্যাম্পপোস্টে ছিন্নমস্তক ঝুলে থাকা সেই কাক্সিক্ষত পুরুষ। ঘটনাচক্রে সালমা ধরা পড়ে উগ্রপন্থীদের হাতে। প্রথমে তাকে ধর্ষণ করা হয়। এরপর আগুনে পুড়িয়ে হত্যার জন্য নিয়ে যাওয়া হয় বধ্যভূমিতে। আগুনে দগ্ধ হওয়ার পূর্বে সালমা যাচনা করে পরমের সান্নিধ্য। ক্ষমা চায় তাদের জন্য যারা এই পরিণতির কুশীলব। আপন অন্তর্ধানের মধ্য দিয়ে সব অনাচার আর বিভেদ যেন লুপ্ত হয় পৃথিবী থেকে সেই প্রার্থনায় নত হয় সালমা। প্রযোজনাটির সঙ্গীত পরিকল্পনা করেছেন সাইম রানা। আতিকুল ইসলাম জয়ের আলোক পরিকল্পনায় রূপসজ্জা পরিকল্পনা করেছেন শামছি আরা সায়েকা।
×