ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

মাছে-ভাতে বাঙালী

প্রকাশিত: ০৪:৪৪, ২৩ এপ্রিল ২০১৬

মাছে-ভাতে বাঙালী

আমাদের ছোট নদী চলে বাঁকে বাঁকে, বৈশাখ মাসে তার হাঁটু জল থাকে...’ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বহুকাল আগে বলে গেছেন এ সময়টায় নদী আর খাল বিলে হাঁটু পানি থাকার কথা। ফাল্গুন চৈত্র থেকেই নদী খাল বিলে পানি শুকাতে শুরু করে। খাল বিল পরিণত হয় হাঁটু পানিতে। আর এ সময়েই ধুম পড়ে যায় বড়শি, জাল কিংবা পলো দিয়ে মাছ ধরার। গ্রাম বাংলায় দলবেঁধে শিশু কিশোর থেকে শুরু নরনারী সমন্বয়ে হাঁটু জল কিংবা কাদা পানিতে মাছ শিকারের নয়নাভিরাম দৃশ্য দেখেনি, বোধকরি এমন একজন মানুষও খুঁজে পাওয়া যাবে না। কথায় আছে ‘মাছে ভাতে বাঙালী’। কে এবং কবে কখন এই প্রবাদটি সৃষ্টি করেছিল, তা বলা না গেলেও এটা নিশ্চিত যে, বরাবরই বাঙালী মাছপ্রিয়। টাকা হলেই বাজারে গিয়ে কিনে এনে খাওয়া যায় পছন্দের মাছ। কিন্তু দল বেঁধে হাওড় বাঁওড় আর নদী খাল বিলে জাল, বড়শি আর পলো দিয়ে মাছ শিকারের যে কী আনন্দ! তা যে বা যারা মাছ শিকারী, একমাত্র তারাই উপলব্ধি করতে পারে। সেই আদিকাল থেকেই চলে আসছে মাছ ধরার উৎসব। যা আজও বিদ্যমান। গ্রামের খালে বিলে দেখা মেলে দেশী মাছের। যারা জেলে বা মাছুয়া তারা বংশ পরম্পরায় মাছ ধরে বিক্রি করেই সংসার পরিচালনা করে। আর যারা শৌখিন তারা শখের বশেই করে থাকে কাজটি। তবে মাছ ধরতে বড়শি বা পলো নিয়ে বসে থাকা খুব ধৈর্যের কাজ। শিকারিদের সেই ধৈর্য আছে। পুকুর পাড়ে গাছের মিষ্টি ছায়ায় বসে বা নদীর ঘাটে ফুরফুরে বাতাসে মাথায় ছাতা আর নানা মসলার সুগন্ধি চার বা টোপ ফেলে ছিপ নিয়ে বসে থাকা বাঙালীর মৎস্য বিলাসের নিটোল চিত্র। সেই আয়োজনে ছিপে ক’টি মাছ ধরা পড়ল সে হিসাব বড় নয়, শিকারের আয়োজন এবং আনন্দটাই এখানে মুখ্য। আবার অনেক শিকারিকেই দেখা গেছে, সারাদিন ছিপ ফেলে বসে মাছ না পেয়ে ম্লান মুখে গুটি গুটি পায়ে বাজার থেকে মাছ কিনে বাসায় ফিরতে। -মানিক সরকার মানিক রংপুর থেকে
×