ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

বাংলাদেশ ব্যাংকের অর্থ চুরির নায়ক কিম ওংয়ের আদ্যোপান্ত

প্রকাশিত: ০৪:০৩, ২২ মার্চ ২০১৬

বাংলাদেশ ব্যাংকের অর্থ চুরির নায়ক কিম ওংয়ের আদ্যোপান্ত

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ চীনা ব্যবসায়ী কিম সিন ওং। যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউইয়র্ক থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের অর্থ ফিলিপিন্সে পাচার ও লোপাটের মূল হোতা হিসেবে বলা হচ্ছে এই ব্যক্তিকে। অর্থ চুরির ঘটনায় আরেক অভিযুক্ত মায়া দেগুইতোকে জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে এমন ধারণা ফিলিপিন্সের সিনেট সদস্য সেরগে ওসমেনার। মাত্র দশ বছর বয়সে চীন থেকে ফিলিপিন্সে এসে টোব্যাকো কোম্পানির সামান্য চাকুরে থেকে অবৈধ ব্যবসার জড়িয়ে বিস্ময়কর উত্থান ঘটে এই চীনা নাগরিকের। ১৫ বছর আগেই ফিলিপিন্সের সিনেটের মুখোমুখি হন বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের অর্থ পাচার ও লোপাটের মূল হোতা এই কিম সিন ওং। ২০০১ সালের ২৩ আগস্ট তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল অবৈধ মাদক ব্যবসা ও বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকা-ে জড়িত থাকার অভিযোগে। কিন্তু প্রেসিডেন্সিয়াল এ্যান্টি অর্গানাইজড ক্রাইম টাস্কফোর্সের হাতে কোন জোরালো প্রমাণ ছিল না কিমকে আটকানোর। ফিলিপিন্সে ড্রাগ লর্ড হিসেবে উত্থান ঘটে কিম ওং নামের এই চীনা ব্যবসায়ীর। মাত্র দশ বছর বয়সে চীন থেকে ফিলিপিন্সে আসেন কিম ওং। কলেজের পড়াশোনা ছেড়ে একটি টোবাকো কোম্পানির এজেন্টের চাকরি নেন কিম। খুব কম সময়ের মধ্যে গার্মেন্টস ব্যবসার পাশাপাশি ম্যানিলাতে তিনটি নামীদামী রেস্টুরেন্টও খুলে বসেন কিম। ফিলিপিন্সে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের অর্থ পাচারের পুরো ঘটনার পরিকল্পনা ও সমন্বয়কারী চীনা এই ব্যবসায়ী- এমন ইঙ্গিত সিনেটের। আরসিবিসি ব্যাংকের জুপিটার শাখার ব্যবস্থাপক মায়া দেগুইতোকে সিনেটের রুদ্ধদ্বার শুনানির জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতেই এমন ধারণা সেরগে ওসমেনার। ব্লু-রিবন কমিটির সিনেটর সেরগে ওসমেনা বলেন, ‘চুরির পুরো ঘটনার একজন সমন্বয়কারী ছিলেন। মনে হচ্ছে কিম ওয়ং-ই সেই ব্যক্তি। তবে এ বিষয়ে তার নিজ বক্তব্য উপস্থাপনের সুযোগ দিতে হবে।’ প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, কিম ওংয়ের নির্দেশে আরসিবিসি ব্যাংকের জুপিটার শাখায় ৫টি জাল এ্যাকাউন্ট খোলেন দেগুইতো। ব্লু-রিবন কমিটির সিনেটর সেরগে ওসমেনা বলেন, ‘মায়া দেগুইতো এবং কিম ওয়ং আগে থেকেই পরস্পর পরিচিত। মিদাস হোটেলে এক বৈঠকে জাল ৫টি এ্যাকাউন্ট খোলার জন্য মায়াকে ভুয়া ৫ ব্যক্তি নাম-ঠিকানা দেন কিম ওয়ং। এরপর ওই এ্যাকাউন্টগুলোতে ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার আসার পর সেগুলোকে পেসোতে রূপান্তরের জন্য ফিলরেমকে ব্যবহারের পরামর্শও দিয়েছিল এই কিম ওয়ং।’ গত ৪ মার্চ থেকে ওং চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরে রয়েছেন বলে জানিয়েছেন তার আইনজীবী। ফিরে এলেই তাকে সিনেট কমিটির জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি করা হবে বলে জানিয়েছেন ব্লু-রিবন কমিটির সদস্যরা।
×