ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সৌদিতে মর্টার হামলায় নিহত বাতেনের বাড়িতে মাতম

প্রকাশিত: ০৫:৩৯, ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৫

সৌদিতে মর্টার হামলায় নিহত বাতেনের বাড়িতে মাতম

সংবাদদাতা, নবীনগর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, ১৯ সেপ্টেম্বর ॥ সৌদি আরবে মর্টার হামলায় নিহত বাংলাদেশী বাতেনের (২৫) বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরের রতনপু র ইউনিয়নের গুলপুকুরিয়া গ্রামে চলছে মাতম। শনিবার বাতেনের গ্রামে গেলে এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়। প্রিয় সন্তানকে হারিয়ে দিশেহারা বাবা-মা। সন্তান হারানোর বেদনায় মা ঝরনা বেগম বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন। বিলাপ করতে করতে তিনি বলছেন, ‘আমার বাতেন কোথায়? আমার বাতেন কোথায়? তাকে এনে দাও’। মায়ের এ আকুতিতে এলাকার আকাশ-বাতাস যেন ভারি হয়ে উঠছিল। বাতেনের বাবার নাম মোঃ মোহন মিয়া। স্ত্রী, তিন ছেলে ও দুই মেয়ে নিয়ে তার সংসার। চাষাবাদের তিন শতাংশ জমি আর দেড় শতাংশ জমির ওপর একটি ঘর ছাড়া সহায়-সম্বল বলতে কিছুই নেই মোহন মিয়ার। বাতেনই ছিল সংসারের একমাত্র আয়ের উৎস। ধার-দেনা ও সুদে তিন লাখ টাকা দিয়ে ২০০৭ সালে ছেলেকে সৌদি আরব পাঠান তিনি। সেখানে সুবিধা করতে পারছিলেন না বাতেন। যা আয় করত, সবই বাবা-মার কাছে পাঠিয়ে দিত। তার পাঠানো টাকায় বাবা তার দুই মেয়ের বিয়ে দেন। পাঁচ বছর আগে বাতেন বিয়ে করে শ্যামগ্রাম গ্রামের লাল মিয়ার মেয়ে রুমা বেগমকে। তাদের কোন সন্তান হয়নি। কোনমতে চলছিল সংসার, ছোট ছেলে দুবার বিদেশে যাওয়ার জন্য দালালের কাছে টাকা দিয়ে মার খায়। অবশেষে বাতেন গত বছর তাকে সৌদি নিয়ে যায়। অসহায় বাবা জানালেন, ছোট ছেলের জন্য তার জমি বিক্রিসহ সুদে ৯ লাখ টাকা ঋণে আছেন। বাতেনের মৃত্যুর সংবাদ শুক্রবার বিকেল চারটায় সৌদি আরব থেকে চাচাত ভাই জিয়াউর রহমান বাড়িতে পৌঁছান । বাতেনের বাবা-মা অভিযোগ করেন, সরকারের পক্ষ থেকে তাঁরা এখন পর্যন্ত কোন সংবাদ পাননি। কিভাবে, কোথায় তার ছেলের লাশ আনার ব্যাপারে খোঁজখবর করবেন, তা তারা জানেন না। তারা দ্রুত ছেলের লাশ দেশে আনার ব্যাপারে সরকারের সাহায্য কামনা করেছেন। এ ব্যপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আজিজুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, আপনাদের কাছ থেকে প্রথম খবর পেলাম, বিষয়টির ব্যাপারে খোঁজখবর নেয়া হবে। তার লাশ দেশে আনার ব্যাপারে সরকারী সকল সহযোগিতা দেয়া হবে।
×