ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

৭৫ হাজার কোটি টাকার সংশোধিত এডিপি অনুমোদন

প্রকাশিত: ০৪:৪৮, ১১ মার্চ ২০১৫

৭৫ হাজার কোটি টাকার সংশোধিত এডিপি অনুমোদন

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ ৭৫ হাজার কোটি টাকার সংশোধিত বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচী (আরএডিপি) অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে সরকারী তহবিলের ৫০ হাজার ১০০ কোটি এবং বৈদেশিক সহায়তা থেকে ২৪ হাজার ৯০০ কোটি টাকা ব্যয় করা হবে। মূল এডিপি থেকে বরাদ্দ কমে যাচ্ছে ৫ হাজার ৩১৪ কোটি ৫২ লাখ টাকা। মূল এডিপিতে বরাদ্দ ছিল ৮০ হাজার ৩১৪ কোটি ৫২ লাখ টাকা। মূল এডিপির সরকারী তহবিল থেকে কমছে ২ হাজার ১১৪ কোটি ৫২ লাখ টাকা এবং বৈদেশিক সহায়তা থেকে কমছে ২ হাজার ৮০০ কোটি টাকা। মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (এনইসি) বৈঠকে এ অনুমোদন দেয়া হয়। রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী ও এনইসি চেয়ারপার্সন শেখ হাসিনা। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন পরিকল্পনামন্ত্রী আহম মুস্তফা কামাল। এ সময় অর্থ প্রতিমন্ত্রী এমএ মান্নান, পরিকল্পনা সচিব শফিকুল আজম, পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য ড. শামসুল আলম উপস্থিত ছিলেন। পরিকল্পনা কমিশন সূত্র জানায়, সংশোধিত এডিপিতে প্রকল্প সংখ্যা কমানো হয়েছে। মূল এডিপির ১ হাজার ২২৪টি প্রকল্প থেকে কমিয়ে করা হচ্ছে ১ হাজার ২০৪। এর মধ্যে বিনিয়োগ প্রকল্প থাকছে ১ হাজার ১৪টি, কারিগরি প্রকল্প ১৬৯টি এবং জাপানী ঋণ মওকুফ সহায়তা তহবিল (জেডিসিএফ)-এর ২১টি প্রকল্প। এর আগে পরিকল্পনা কমিশন থেকে ৭২ হাজার কোটি টাকা সংশোধিত এডিপির খসড়া উপস্থাপন করা হয় এনইসিতে। মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোর চাহিদার প্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী ও এনইসি চেয়ারপার্সন আরও ৩ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ বাড়িয়ে দিয়েছেন। বাড়তি অর্থ পরবর্তীতে মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোর অনুকূলে বরাদ্দ দেয়া হবে। পরিকল্পনা কমিশনের খসড়া অনুযায়ী ৭২ হাজার কোটি টাকা সংশোধিত এডিপিতে খাতভিত্তিক বরাদ্দ হচ্ছে, পল্লী উন্নয়ন ও পল্লী প্রতিষ্ঠান খাতে ৭ হাজার ৫ কোটি ৫ লাখ টাকা, ভৌত পরিকল্পনা-পানি সরবরাহ ও গৃহায়ন খাতে ৬ হাজার ৮৪৪ কোটি টাকা, স্বাস্থ্য, পুষ্টি, জনসংখ্যা ও পরিবার কল্যাণ খাতে ৪ হাজার ৭৪১ কোটি ৬১ লাখ টাকা, বিজ্ঞান, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি খাতে ৪ হাজার ৬৩০ কোটি ২৭ লাখ, কৃষি খাতে ৪ হাজার ১৯৭ কোটি ৭১ লাখ টাকা, পল্লী উন্নয়ন ও পল্লী প্রতিষ্ঠান খাতে ৭ হাজার ৫ কোটি টাকা, পানি সম্পদ খাতে ২ হাজার ৮৯ কোটি ৪৫ লাখ টাকা, শিল্প খাতে ১ হাজার ৮৬৩ কোটি ৮০ লাখ টাকা, তেল, গ্যাস ও প্রাকৃতিক সম্পদ খাতে ১ হাজার ৭১ কোটি ১৫ লাখ টাকা, যোগোযোগ খাতে ৭৪৩ কোটি ৫৮ লাখ, ভৌত পরিকল্পনা, পানি সরবরাহ ও গৃহায়ন খাতে ৬ হাজার ৮৪৪ কোটি, ক্রীড়া ও সংস্কৃতি খাতে ১৬৬ কোটি ৯২ লাখ, গণসংযোগ খাতে ১০৯ কোটি ৯৫ লাখ, সমাজকল্যাণ, মহিলা বিষয়ক ও যুব উন্নয়ন খাতে ৪০৯ কোটি ৪ লাখ, জনপ্রশাসন খাতে ১ হাজার ৭০১ কোটি ৪৬ লাখ, জন প্রশাসন খাতে ১ হাজার ৭০১ কোটি ৪৬ লাখ, বিজ্ঞান, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি খাতে ৪ হাজার ৬৩০ কোটি ২৭ লাখ এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান খাতে ৪৫৭ কোটি ৬০ লাখ টাকা। হরতাল-অবরোধেও সঠিক পথেই এডিপি ॥ চলমান হরতাল ও অবরোধের মধ্যেও চলতি অর্থবছরের ৮ মাসে (জুলাই-ফেব্রুয়ারি) বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচী (এডিপি) বাস্তবায়ন হয়েছে ৩৮ শতাংশ। যা গত অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ৩৬ শতাংশ। এক্ষেত্রে তুলনামূলকভাবে ২ শতাংশ এডিপির বাস্তবায়ন বেড়েছে। অন্যদিকে গত জানুয়ারি মাস পর্যন্ত বাস্তবায়নের হার ছিল ৩২ শতাংশ। সে তুলনায় এক মাসের ব্যবধানে বাস্তবায়নের হার বেড়েছে ৬ শতাংশ। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী এসব তথ্য জানা গেছে। মঙ্গলবার এডিপি বাস্তবায়নের তথ্য প্রকাশ করেছেন পরিকল্পনামন্ত্রী আহম মুস্তফা কামাল। রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে এক ব্রিফিং এ তিনি এসব তথ্য দিয়েছেন। এ সময় পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, হরতাল-অবরোধ দেশের উন্নয়নে তেমন কোন ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারেনি। তথ্য অনুযায়ী এডিপি বাস্তবায়নের হার বরং বেড়েছে। তিনি আরও বলেন, এডিপির বাস্তবায়ন সঠিক পথেই রয়েছে। তবে সংশোধন করতে গিয়ে কিছু অর্থ কমানো হয়েছে। এটি স্বাভাবিক বিষয়। কেননা বছরের শুরুতে যে বাজেট করা হয় বছর শেষে তা নাও বাস্তবায়ন হতে পারে। মন্ত্রী জানান, ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মোট ব্যয় হয়েছে ৩২ হাজার ৩৮১ কোটি টাকা যা মোট বরাদ্দের ৩৮ ভাগ। একই সময়ে গত বছর ব্যয় হয়েছিল ২৬ হাজার ৩৪৭ কোটি টাকা যা ওই অর্থবছরের (২০১৩-১৪) মোট বরাদ্দের ৩৬ ভাগ ছিল। পর্যালোচনা করলে দেখা যায় এডিপি বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে এ অর্থ বছরের প্রথম আট মাসে গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ৬ হাজার ৩৪ কোটি টাকা বেশি ব্যয় হয়েছে।
×