ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ২৮ জুলাই ২০২৫, ১২ শ্রাবণ ১৪৩২

দিনমজুর স্বামীকে গলা কেটে হত্যার দায় স্বীকার স্ত্রীর

ওমর ফারুক, জীবননগর, চুয়াডাঙ্গা

প্রকাশিত: ২২:৪৬, ২৭ জুলাই ২০২৫

দিনমজুর স্বামীকে গলা কেটে হত্যার দায় স্বীকার স্ত্রীর

চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলার হাসাদাহ ইউনিয়নের মাধবপুরে মনিরুল ইসলাম (৫০) নামের এক দিনমজুরকে গতকাল শনিবার দুপুরে গলা কেটে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় মামলার ৫ ঘণ্টার মধ্যে পাশ্ববর্তী আলমডাঙ্গা থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাঁর স্ত্রী পাপিয়া খাতুনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি প্রাথমিক জিজ্ঞেসাবাদে স্বামীকে হত্যার দায় স্বীকার করেছেন। আজ সোমবার জীবননগর থানা-পুলিশ সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। 

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, পাপিয়া জানিয়েছেন, বিয়ের পর থেকেই মনিরুল তাঁর স্ত্রী পাপিয়াকে শারিরীকভাবে নির্যাতন করত। তাঁর স্বামী পরকীয়ার সম্পর্কেও লিপ্ত ছিল। এসব নিয়ে পারিবারিক কলহ চলছিল। এর মধ্যে সম্প্রতি মনিরুল স্ত্রীর কাছ থেকে টাকা নিয়ে পাশ্ববর্তী গ্রামে ভিটা জমি কেনেন। জমিটা পাপিয়া তাঁর নামে রেজিস্ট্রি করার কথা থাকলেও দেননি মনিরুল৷ 

পুলিশ সূত্রে আরও জানা গেছে, এছাড়া পাপিয়ার ছেলে রাজুর বিদেশ যাওয়ার টাকা নিয়ে ঝামেলা চলছিল। এসব বিষয় নিয়ে শনিবার সকাল থেকে মনিরুল, তাঁর স্ত্রী পাপিয়া ও ছেলে রাজুর সঙ্গে কলহ চলছিল। এর একপর্যায়ে মনিরুল স্ত্রীকে বাড়ি থেকে বের হয়ে যেতে বলেন। তখন পাপিয়া বলেন, হয় এই বাড়ি তুই থাকবি, নাই আমি থাকব। এর একপর্যায়ে একটি হাঁসুয়া দিয়ে স্বামীর গলাই কোপ দেয় পাপিয়া। পরে পাপিয়া পালিয়ে আলমডাঙ্গায় খালার বাড়িতে চলে যান। তিনি ভারতে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছিল। রাত ৪টার দিকে তাকে আলমডাঙ্গার বাসাবাড়ির খালার বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।

পুলিশ সূত্রে আরও জানা গেছে, নিহত মনিরুল ইসলাম জীবননগর উপজেলার বালিহুদা গ্রামের মৃত দিদার উদ্দিন মন্ডলের ছেলে। শনিবার দুপুরের দিকে মনিরুল ইসলামকে গলা কেটে করে হত্যা করা হয়। বেলা ১টার দিকে প্রতিবেশীরা মনিরুল ইসলামের গলাকাটা মরদেহ ঘরে পড়ে থাকতে দেখে জীবননগর থানা-পুলিশে খবর দেয়। 

এদিকে এ ঘটনার পর থেকে পলাতক ছিলেন তাঁর ছেলে রাজু (২৬) ও স্ত্রী পাপিয়া (৪২)। পরে রাতে আলমডাঙ্গায় অভিযান চালিয়ে পাপিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়। প্রতিবেশী আকিদুল ইসলাম বলেন, ঘটনার পর মনিরুল ইসলামের ছেলে রাজু (২৫) তার কাছে মোবাইল ফোনে খবর নেয় তারা পিতা মারা গেছে কিনা? এ বিষয়ে জীবননগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মামুন হোসেন বিশ্বাস বলেন, রাতে ভাইকে হত্যার ঘটনায় মনিরুলের ভাই জহির বাদী হয়ে জীবননগর থানায় মামলা করেন। ঘটনাস্থল থেকে একটি হাঁসুয়া ও একটি কুড়াল জব্দ করা হয়েছে। এরপর অভিযান চালিয়ে মনিরুলের স্ত্রী পাপিয়াকে আলমডাঙ্গা থানার বাসবাড়িয়া এলাকায় তাঁর খালার বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। পাপিয়া স্বামীকে হত্যার দায় স্বীকার করেছেন।

আঁখি

আরো পড়ুন  

×