ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৬ জুলাই ২০২৫, ১১ শ্রাবণ ১৪৩২

সাগর পাড়ে একটুকরো জমি নিয়ে ফরেস্ট ও এসিল্যান্ড এর রশি টানাটানি, স্থাপনা ভাঙচুর

স্টাফ রিপোর্টার, কক্সবাজার

প্রকাশিত: ১৯:৫৯, ২৫ জুলাই ২০২৫; আপডেট: ২০:০০, ২৫ জুলাই ২০২৫

সাগর পাড়ে একটুকরো জমি নিয়ে ফরেস্ট ও এসিল্যান্ড এর রশি টানাটানি, স্থাপনা ভাঙচুর

ছবি: জনকণ্ঠ

কক্সবাজারের রামু উপজেলার মেরিন ড্রাইভের হিমছড়ি ঝর্ণার আশে-পাশের জায়গা নিয়ে উপজেলা প্রশাসন ও বনবিভাগের মধ্য বিরোধ দেখা দিয়েছে। বিরোধের জের ধরে পক্ষে-বিপক্ষে স্থাপনা উচ্ছেদ বা ভাঙচুরের ঘটনা ঘটছে বৃহস্পতিবার। যা নিয়ে বৃহস্পতিবার বনবিভাগের কর্মকর্তাদের সাথে রামু উপজেলার সহকারি কমিশনার ভূমির সাথে প্রকাশ্যে তর্ক হয়েছে। এ সংক্রান্ত একটি ভিডিও ইতিমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার হওয়ার পর বিরোধ নিরসন করার কথা জানিয়েছেন উপজেলা প্রশাসন।


কক্সবাজার টেকনাফ মেরিন ড্রাইভে হিমছড়ি ঝর্ণাকে কেন্দ্র করে বনবিভাগের অধীনে হিমছড়ি জাতীয় উদ্যান, বনবিভাগের প্রশিক্ষণ কেন্দ্র নিসর্গ এবং রামু উপজেলা প্রশাসনের অধীনে হিমছড়ি বাজার, পার্কিং, পাবলিক টয়লেট ঘিরে আশে-পাশের জায়গা নিয়ে এমন বিরোধের সৃষ্টি হয়েছে। যা প্রকাশ্যে এসেছে বৃহস্পতিবার।
স্থানীয় ইউপি সদস্য শফিকুল ইসলাম সোহেল জানিয়েছেন, হিমছড়ি ঝর্ণাটি বনবিভাগের পক্ষে ইজারা প্রদান করা হয়। আর এই ঝর্ণার সামনের বাজার, পার্কিং ইজারা প্রদান করে রামু উপজেলা প্রশাসন। হিমছড়ি বাজারের পূর্বে গত ৪ বছর আগে এনজিওর অর্থায়নে একটি পাবলিক টয়লেট রয়েছে। যা প্রতি বছর ইজারা দেন উপজেলা প্রশাসন। সম্প্রতি পর্যটন স্পট ঝর্ণার কিছু সংস্কার কাজ শুরু করে বনবিভাগ। এ সংস্কারের অংশ হিসেবে নতুন গেট নিমার্ণের জন্য পাবলিক টয়লেটের কিছু অংশ বৃহস্পতিবার সকালে ভেঙ্গে দেয় বনবিভাগ।
বিষয়টি অবহিত হওয়ার পর রামু উপজেলার সহকারি কমিশনার ভূমি ঘটনাস্থলে এসে টয়লেট ভেঙ্গে দেয়ার কারণ জানতে চায় বনবিভাগের কর্মকর্তার কাছে। বনবিভাগ গেট নিমার্ণের প্রয়োজনীয় এবং টয়লেটটি বনবিভাগের জমিতে রয়েছে বলে দাবি করেন। এরপর সহকারি কমিশনার ভূমি হিমছড়ি ঝর্ণার উত্তর পাশে বনবিভাগের প্রশিক্ষণ কেন্দ্র নিসর্গের পাশে অবস্থিত কিছু স্থাপনা ১ নম্বর খাস খতিয়ানের দাবি করে যেগুলো ভাঙচুর করা হয়। বিষয়টি জানা-জানির পর বনবিভাগীয় কর্মকর্তা ঘটনাস্থলে গেলে তর্কের সৃষ্টি হয়।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পাওয়া ভিডিওটি সহকারি কমিশনার ভূমি প্রকাশ্যে বনবিভাগের কর্মকর্তাদের প্রকাশ্যে হুমকি দিয়ে কথা বলতে দেখা গেছে।
বনবিভাগের হিমছড়ির রেঞ্জের রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. হাবিবুল হক জানান, নিসর্গ পুরোটাই বনবিভাগের ২ নম্বর খতিয়ানের অধীনে। যেখানে থাকা বন পাহারার গোল ঘর, ঘেরা-বেড়া, হিমছড়ি জাতীয় উদ্যানের সাইনবোর্ডটি ভেঙ্গে দিয়েছেন সহকারি কমিশনার ভূমি। অথচ দীর্ঘদিন ধরে বনবিভাগের জমিতে পাবলিক টয়লেটটি পরিচালিত হলেও কোন হস্তক্ষেপ করা হয়নি। ঝর্ণার প্রবেশ গেইট নিমার্ণের কারণে তার কিছু অংশ ভাঙ্গতে হয়েছে।
বনবিভাগের দক্ষিণ বন বিভাগীয় কর্মকর্তা মো. নূরুল ইসলাম জানিয়েছেন, শত ভাগ বনবিভাগের জমিতে সহকারি কমিশনার ভূমি ভাঙচুর করেছে। এতে বনবিভাগের ক্ষতি হয়েছে। ঘটনাস্থলে যাওয়ার পর প্রকাশ্যে অপদস্থ করা হয়েছে। বিষয়টি ইতোমধ্যে ঊর্ধ্বতন মহলকে অবহিত করা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে জেলা প্রশাসক উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। কি করে দেখা হচ্ছে। না হয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ঊর্ধ্বতন মহল নিদের্শ প্রদান করেছেন।
এব্যাপারে রামু উপজেলার সহকারি কমিশনার ভূমি মো. সাজ্জাদ জাহিদ রাতুলের মুঠোফোনে একাধিক ফোন করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি। তবে রামু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রাশেদুল ইসলাম জানিয়েছেন, এখানে বনবিভাগে এবং প্রশাসন উভয় পক্ষের জায়গা রয়েছে। আমরা উভয় পক্ষে সরকারের স্বার্থে কাজ করছি। বিষয়টি নিয়ে সহকারি কমিশনার ভূমির সাথে বনবিভাগের ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি হয়েছিল। আমি জানার পর ঘটনাস্থলে গিয়ে এর নিরসন করেছি।
তিনি বলেন, এখানে বিরোধের কিছু না। উভয় পক্ষ তো সরকারের জন্য কাজ করছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভিডিও আসায় একটু বিব্রতকর।

সাব্বির

×