ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৬ জুলাই ২০২৫, ১১ শ্রাবণ ১৪৩২

নাঙ্গলকোটে দুই গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষ, গুলিবিদ্ধ ১৫, আহত ১০

নিজস্ব সংবাদদাতা, নাঙ্গলকোট, কুমিল্লা

প্রকাশিত: ১৯:৫২, ২৫ জুলাই ২০২৫

নাঙ্গলকোটে দুই গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষ, গুলিবিদ্ধ ১৫, আহত ১০

কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে দুই গোষ্ঠীর মধ্যে দফায়-দফায় সংঘর্ষে উভয়পক্ষের ১৫ জন ছররা গুলিবিদ্ধ ও ১০ জন আহত এবং বাড়িঘর ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার (২৫ জুলাই) সকাল ১২টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত উপজেলার বক্সগঞ্জ ইউনিয়নের দক্ষিণ আলীয়ারা গ্রামের ছালেহ আহম্মদ মেম্বার ও আবুল খায়ের মেম্বার গোষ্ঠীর মধ্যে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ঘটনাস্থলে যৌথ বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।

সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধরা হলেন, রুস্তম আলীর স্ত্রী শরীফা বেগম, ছেলে তারা মিয়া, দুলাল মিয়ার ছেলে রিয়া, আবুল খায়েরের ছেলে শেখ ফরিদ, নাতি আশরাফুল, সালেহ আহম্মদের ছেলে নূরুদ্দিন, আব্দুর রহমানের ছেলে জামাল, আবুল খায়েরের ছেলে শহীদ, তারা মিয়ার ছেলে তামিম, এনাম মিয়ার ছেলে জাহিদুল, রোকম আলীর ছেলে কবির আহম্মদ, রুস্তম আলীর ছেলে আবু তাহের, বশির আহম্মদের স্ত্রী হোশনেয়ারা, জাকির হোসেনের স্ত্রী সুফিয়া বেগম, ও তার ছেলে ওসমান।

আহতরা হলেন, বাহার উদ্দিনের স্ত্রী পরান বেগম, দেলোয়ার হোসেনের ছেলে জয়, আলাউদ্দিনের স্ত্রী মরিয়ম বেগম, জালাল আহম্মদের ছেলে জিয়াউল হক, আব্দুল মোনাফের ছেলে আবুল কাশেম, মফজলের ছেলে বাহাদুর, আলী আহম্মদের ছেলে সোহাগ ও শাহআলমের ছেলে সুমন।

এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, গত ১৩ জুলাই ছালেহ আহম্মদ গোষ্ঠীর ছালেহ আহম্মদের গরু আবুল খায়ের গোষ্ঠীর আবুল খায়েরের ছেলে শেখ ফরিদের জমিনের ধান খায়। এ নিয়ে ছালেহ আহম্মদ গোষ্ঠীর লোকজন আবুল খায়ের গোষ্ঠীর লোকজনের উপর হামলা করে। এ সময় আবুল খায়েরের ৪ ভাই আলাউদ্দীন মেম্বার, পেয়ার আহম্মদ, জাফর আহম্মেদ, কালাম, সোহাগ ও মন্নানের বাড়িঘরে হামলা ও লুটপাট করেন। এ ঘটনায় উভয়পক্ষ থানায় ৪টি ও আদালতে ১টি সহ ৫টি মামলা দায়ের করা হয়।

গত বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) রাতে থানা পুলিশ মামলার আসামি ছালেহ আহম্মদ গোষ্ঠীর শেখ ফরিদকে মুরাদনগর থেকে আটক করে। তার আটকের খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে ছালেহ আহম্মদ গোষ্ঠীর লোকজন আলীয়ারা উত্তর পাড়া জাফর আহম্মদের দোকানের সামনে আবুল খায়ের গোষ্ঠীর শেখ আহম্মদের উপর হামলা করে। পরে উভয়পক্ষ এলজি, রামদা, লাঠিসোটা নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। শুক্রবার সকাল ১১টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত উভয় গোষ্ঠীর মধ্যে দফায়-দফায় হামলা ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে নাঙ্গলকোট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ গুলিবিদ্ধদের কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেন।

হামলায় আহত আবুল খায়ের গোষ্ঠীর আবুল কাশেম জানান, ছালেহ আহম্মদের ছেলে নুরউদ্দিন, রিয়াদ ও দুলাল এলজি দিয়ে আমাদের গোষ্ঠীর লোকজনের উপর গুলি করে। এতে গুলিবিদ্ধসহ ১৪/১৫ জন আহত হয়েছে।

ছালেহ আহম্মদ গোষ্ঠীর রিয়াদ হোসেন বলেন, আবুল খায়ের গোষ্ঠীর আবদুল মন্নানের ছেলে তৌহিদ, ইলিয়াছের ছেলে আলমগীর, আলাউদ্দিনের ছেলে আজিম, আবুল কাশেমের ছেলে জুয়েল, ইসমাইলের ছেলে তোতা মিয়া সহ বেশ কয়েকজন এলজি নিয়ে গুলি সহ দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। এতে আমাদের ১২ জন গুলিবিদ্ধসহ ১৫ জন আহত হয়। এ ঘটনায় ছালেহ আহম্মদ মেম্বার ও আবুল খায়ের মেম্বারের মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করলেও তাদের মুঠোফোন বন্ধ থাকায় তাদের বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিক্যাল অফিসার ডা. সীমা মজুমদার বলেন, হাসপাতালে ৬ জন গুলিবিদ্ধসহ ১৪ জনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। গুলিবিদ্ধদের কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়েছে।

নাঙ্গলকোট থানার ওসি এ কে ফজলুল হক বলেন, ঘটনা শোনার পর-পরই পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে সংঘর্ষকারীরা এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায়। তবে গুলিবিদ্ধ কাউকে পাওয়া যায়নি। বর্তমানে এলাকার পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। এ পর্যন্ত কেউ অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

আফরোজা

×