ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ১৩ জুলাই ২০২৫, ২৯ আষাঢ় ১৪৩২

দারিদ্র্যতাকে জয় করে জিপিএ-৫ পেয়েছে সুব্রত, কলেজে ভর্তি নিয়ে অনিশ্চয়তায় পরিবার

নিজস্ব সংবাদদাতা, ফরিদপুর

প্রকাশিত: ১৮:১৮, ১১ জুলাই ২০২৫; আপডেট: ১৮:১৮, ১১ জুলাই ২০২৫

দারিদ্র্যতাকে জয় করে জিপিএ-৫ পেয়েছে সুব্রত, কলেজে ভর্তি নিয়ে অনিশ্চয়তায় পরিবার

ছবি: জনকণ্ঠ

প্রচণ্ড দারিদ্র্য, অসুস্থতা ও সীমাহীন কষ্টকে উপেক্ষা করে এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ অর্জন করেছে ফরিদপুরের সালথা উপজেলার সুব্রত কুমার কুন্ডু। তবুও ভবিষ্যৎ নিয়ে দুশ্চিন্তায় তার পরিবার, কারণ কলেজে ভর্তি ও উচ্চশিক্ষা চালিয়ে নেওয়া নিয়ে তৈরি হয়েছে বড় অনিশ্চয়তা।

সুব্রত সালথা উপজেলার বল্লভদী ইউনিয়নের বিষ্ণুদি গ্রামের বাসিন্দা। তার বাবা সুধীর কুন্ডু একজন ক্ষুদ্র মুদি দোকানদার এবং মা গৃহিণী। অভাব-অনটনে চলা পরিবারে মোবাইল ফোন পর্যন্ত নেই, নেই পড়ালেখার অনুকূল পরিবেশ।

সুব্রত বল্লভদী ইউনিয়নের ফুলবাড়িয়া উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয়। যেখানে পাশের হার মাত্র ৩৩.৩৩ শতাংশ, ৬৪ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে পাস করেছে মাত্র ২১ জন। মানবিক বিভাগ থেকে পরীক্ষা দিয়ে সে অর্জন করেছে জিপিএ-৫।

পরীক্ষার ঠিক আগে অসুস্থ হয়ে পড়ে সুব্রত। জ্বর, সর্দি-কাশিতে ভুগে দুর্বল হয়ে গেলেও হাল ছাড়েনি সে। মায়ের কাঁধে ভর করে এবং বাবার সাহসী কথায় অনুপ্রাণিত হয়ে নিয়মিত পরীক্ষা দিয়ে অবশেষে তাক লাগানো ফলাফল অর্জন করে।

তবে এই সাফল্যের মাঝেও যেন অন্ধকার। পরিবারে অর্থনৈতিক সামর্থ্যের অভাবে তার কলেজে ভর্তি ও উচ্চশিক্ষার স্বপ্ন বাধাগ্রস্ত হতে চলেছে। প্রয়োজনীয় বই-খাতা, কোচিং কিংবা পরিবহন খরচ জোগাড় করাই দুঃসাধ্য হয়ে উঠেছে পরিবারটির জন্য।

সুব্রতের মা-বাবার আকুতি—যদি কোনো দয়ালু ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান এই মেধাবী ছাত্রটির পাশে দাঁড়ায়, তবে সে আরও দূর যেতে পারবে, দেশ ও সমাজের জন্য হতে পারবে এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।

এ বিষয়ে সালথা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আনিছুর রহমান বালী বলেন, "সুব্রতকে অভিনন্দন জানাই। তার পড়ালেখার ক্ষেত্রে যেকোনো সহযোগিতায় উপজেলা প্রশাসন পাশে থাকবে।"

সায়মা ইসলাম

×