ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১২ জুলাই ২০২৫, ২৮ আষাঢ় ১৪৩২

যমুনায় অবৈধভাবে বালু উত্তোলন, হুমকিতে কয়েক শতাধিক মানুষের বসতভিটা

নিজস্ব সংবাদদাতা, শিবালয়, মানিকগঞ্জ

প্রকাশিত: ১৯:৩৬, ১০ জুলাই ২০২৫; আপডেট: ২১:১৮, ১০ জুলাই ২০২৫

যমুনায় অবৈধভাবে বালু উত্তোলন, হুমকিতে কয়েক শতাধিক মানুষের বসতভিটা

ছবি: জনকণ্ঠ

মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার তেওতা ইউনিয়নের মুন্সিগান্দি মৌজার যমুনা নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছে প্রভাবশালী একটি চক্র। এতে নদীর পার্শ্ববর্তী চরপয়লা গ্রামের প্রায় আড়াইশো পরিবার চরম ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে। স্থানীয়দের ভাষ্যমতে কয়েক শতাধিক মানুষের বসতভিটা এখন নদীগর্ভে বিলীন হওয়ার আশঙ্কায় রয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রতিদিন ভোররাত থেকে সকাল পর্যন্ত ড্রেজার ও কাটার মেশিন ব্যবহার করে বালু তোলা হচ্ছে। বর্ষা মৌসুমে পানি বৃদ্ধির ফলে নদীপাড়ে এমনিতেই ভাঙন দেখা দিয়েছে। তার উপর বালু উত্তোলনের ফলে নদী পাড় আরও দুর্বল হয়ে যাচ্ছে।

এলাকাবাসীর পক্ষে চরপয়লা গ্রামের বাসিন্দা সিদ্দিক মিয়া গত ৮ জুলাই এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন। তিনি বলেন, "আমাদের বাড়িঘরের একেবারে কাছ থেকে বালু তোলা হচ্ছে। ইতিমধ্যে ভাঙন শুরু হয়েছে। এখনই ব্যবস্থা না নিলে পুরো গ্রাম নদীতে চলে যাবে।"

অভিযোগে বলা হয়, সরকারিভাবে যমুনার রাহাতপুর এলাকায় বালু উত্তোলনের ইজারা থাকলেও সংশ্লিষ্ট চক্রটি সেটি না মেনে মুন্সিগান্দি মৌজার অংশে ড্রেজার বসিয়ে বালু তুলছে। প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে দীর্ঘদিন ধরে এই কার্যক্রম চলছে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, এ নিয়ে প্রতিবাদ জানালে চক্রটির সদস্যরা ভয়ভীতি দেখায়। নানাভাবে হয়রানি করেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক বাসিন্দা বলেন, আমরা কিছু বললেই তারা হুমকি দেয়। রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় তারা অনেক শক্তিশালী, আমরা অসহায়।

বালু উত্তোলনের ফলে একদিকে যেমন সরকার রাজস্ব হারাচ্ছে, অন্যদিকে চরপয়লার মতো নিম্ন আয়ের মানুষজন নিঃস্ব হওয়ার মুখে পড়েছেন। স্থানীয়দের দাবি, দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে পুরো গ্রাম নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যেতে পারে।

তেওতা ইউপি চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন বলেন, "আমি সবসময় অবৈধ বালু উত্তোলনের বিরুদ্ধে। আমার ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি স্পটে নদীভাঙন মারাত্মক রূপধারণ করেছে।‌ বিষয়টি আমি সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট অবগত করেছি।"

এ বিষয়ে মানিকগঞ্জ জেলা প্রশাসক ড. মো. মানোয়ার হোসেন মোল্লা সাংবাদিকদের জানিয়েন, বিষয়টি গুরুত্বসহকারে দেখা হচ্ছে। ইউএনও এবং এসিল্যান্ডকে সরজমিনে গিয়ে মোবাইল কোর্ট পরিচালনার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। 

Mily

×