
ছবি: সংগৃহীত
বরগুনার কুয়েত প্রবাসী হাসপাতাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে জরায়ু অপসারণের সময় পেটে ৭ ইঞ্চি একটি কাঁচি রেখে সেলাই দিয়েছিলেন চিকিৎসকরা। সাত মাস পর সেটি অপসারণ করা হয়েছে বরিশাল মেডিকেলে। ভুক্তভোগীর পেটে ধরেছে পচন বুকছেন দুর্বিষহ যন্ত্রণায়। ঘটনা তদন্ত করছেন সিভিল সার্জন।
সাত ইঞ্চির কাঁচি টানা ৭ মাস কাঁচিটি পেটে বয়ে বেরিয়েছেন পটুয়াখালী ৬০ উর্ধ্ব কোহিনুর বেগম। বুকছিলেন অসহ্য যন্ত্রণায়।
পটুয়াখালীর কলাপাড়ার কোহিনুর বেগম গেল বছরের নভেম্বরে বরগুনায় মেয়ের বাড়িতে বেড়াতে এসে অসুস্থ হন, নেওয়া হয় বরগুনা কুয়েত প্রবাসী হাসপাতালে। জরায়ুতে সমস্যা ধরা পড়লে সেখানেই অপারেশন করা হয় তাকে।
জরায়ু অপারেশনের সময় পেটে ৭ ইঞ্চি সাইজের কাচি রেখে দেওয়া পেটে পচন ধরেছে কহিনুর বেগমের খাদ্যনালীতে। তাই কেটে ফেলতে হয়েছে খাদ্যনালী। এতে মলত্যাগ করতে পারছেন না কোহিনুর বেগম। পেট থেকে মল বের হয়ে জমা হচ্ছে ব্যাগে।
স্বজনরা জানান বরগুনা কুয়েত প্রবাসী হাসপাতাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে গত ১৮ নভেম্বর কহিনূর বেগমের জরায়ু অপারেশন করেন ডাক্তার ফারহানা মাহফুজ তার সঙ্গে ছিলেন হাসপাতালটির আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাক্তার সাফিয়া পারভীন অপারেশনের পর কহিনুর বেগমের পেটে ৭ ইঞ্চি সাইজের একটি কাঁচি রেখে সেলাই করে দেওয়া হয়। পরে অপারেশন সফল হওয়ার কথা জানানো হলেও কহিনুর বেগমের অবস্থা দিন দিন আরও অবনতি হয়। পরে তাকে নিয়ে যাওয়া হয় বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।
পরীক্ষা-নিরীক্ষায় কহিনুর বেগমের পেটে একটি কাঁচি সনাক্ত করেন চিকিৎসকরা। পরে গত ১৮ জুন অপারেশন করে তা উদ্ধার করা হয়। দীর্ঘদিন ধরে পেটে কাচি থাকায় পচন ধরেছে কোহিনুর বেগমের খাদ্যনালীতে। এতে খাদ্যনালীর একাংশ কেটে ফেলতে হয়েছে। খাদ্যনালী কেটে ফেলায় মলত্যাগ করতে পারছেন না কোহিনুর বেগম। পেটের সঙ্গে একটি ব্যাগে জমা হচ্ছে মল। এখন মুমূর্ষ অবস্থায় বিছানায় শয্যাশায়ী কহিনুর বেগম। এ ঘটনায় ন্যায় বিচার পেতে অভিযুক্ত চিকিৎসকসহ হাসপাতালের বিরুদ্ধে সিভিল সার্জন এর কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন স্বজনরা।
হাসপাতালটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলছেন এ ঘটনার দায়-দায়িত্ব নিতে হবে চিকিৎসকদের। তিনি আরও বলেন নয় মাসের মধ্যে তারা অন্যত্র অপরারেশ করতে পারে। নয় মাস যাবৎ একটা কাটারি পেটের বিতর থাকতে পারে না।
হাসপাতালে গিয়ে পাওয়া যায়নি অভিযুক্ত দুই চিকিৎসককে। ডাঃ ফারহানা মাহফুজ এর কর্মস্থাল বরগুনা জেনারেল হাসাপাতালে গিয়ে জানাযায় তিনি নয় দিন যাবৎ অনুপস্থিত। পরে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলেও তাদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
তদন্ত করে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস সিভিল সার্জনের
সটঃ ডাঃ মোহাম্মদ আবুল ফাত্তাহ।
ভুক্তভোগী কোহিনূর বেগম বর্তমানে মেয়ের শ্বশুর বাড়িতেই আছেন। চিকিৎসার খরচ যোগাতে হিমশিম খাচ্ছে হতদরিদ্র পরিবারটি।
ছামিয়া