
ছবি: জনকণ্ঠ
শেরপুরে অনূর্ধ্ব-১০ বছর বয়সী শিশুদের অংশগ্রহণে ব্যতিক্রমী এক হা-ডু-ডু খেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ৫ জুলাই শনিবার বিকেলে সদর উপজেলার চরশেরপুর ইউনিয়নের যোগিনীমুরা এলাকায় যুবসমাজের উদ্যোগে এ ফাইনাল খেলা অনুষ্ঠিত হয়। খেলায় লাল দলকে হারিয়ে সবুজ দল জয়ী হয়। পরে বিজয়ী ও বিজিত উভয় দলের মাঝে পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়।
পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ও জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সভাপতি কামরুল হাসান। স্থানীয় সমাজসেবক আলহাজ্ব মো. হাসমত আলীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি নেতা হাসানুর রেজা জিয়া, আখেরমামুদ বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মো. শফিকুল ইসলাম, স্থানীয় সমাজসেবক রাশেদ নাজীব প্রমুখ।
খেলাটি দেখতে দূর-দূরান্ত থেকে হাজারো দর্শনার্থী ভিড় জমান। বিপুল সংখ্যক নারী দর্শকের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। তারা প্রতি বছর ব্যতিক্রমী এ খেলার আয়োজন করার দাবি জানান। শ্রীবরদী উপজেলার পশ্চিম ঝিনিয়া এলাকার মো. মাসুদ বলেন, কালের বিবর্তনে ঐতিহ্যবাহী এ খেলাটি হারিয়ে যেতে বসেছে। বিশেষ করে নতুন প্রজন্ম ও শিশু-কিশোররা তথ্য-প্রযুক্তির এই যুগে হা-ডু-ডু খেলার নামটিও ভুলতে বসেছে। তাই খেলাটির ঐতিহ্য ফিরে পেতে এবং নতুন প্রজন্মকে মাদক ও মোবাইল আসক্তি থেকে দূরে রাখতে এমন আয়োজনের বিকল্প নেই। চরশেরপুর গ্রামের হোসনে আরা বেগম বলেন, এ খেলাকে কেন্দ্র করে কিছুদিন থেকে ছোট ছোট ছেলেরা প্র্যাকটিসে নেমেছিল। তাদের উৎসাহ ছিল চোখে পড়ার মতো। শিশুদের এমন খেলাধুলার মধ্যে রাখলে তারা শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ থাকবে। আরেক দর্শক আকবর মিয়া বলেন, ছোট ছোট ছেলেরা খুবই সুন্দরভাবে খেলেছে। আমরা জুনিয়রদের এমন নান্দনিক খেলা বেশ উপভোগ করেছি। এমন সুন্দর আয়োজন প্রতিবছরই করা প্রয়োজন।
খেলার আয়োজক কমিটির সদস্য নাঈম আহমেদ মনি বলেন, গ্রামীণ ঐতিহ্যের এক সময়ের জনপ্রিয় খেলা হা-ডু-ডু এখন অনেকটাই বিলুপ্তির পথে। গ্রামের কাঁচা রাস্তায়, মাঠ, বাগানে বা খোলা স্থানে জমজমাট ও উৎসবমুখর পরিবেশে হতো এ হা-ডু-ডু খেলা। কিন্তু কালের আবর্তে সেই খেলা এখন আর দেখা যায় না। তাই জনপ্রিয় এ খেলাটি টিকিয়ে রাখা এবং নতুন প্রজন্মকে উজ্জীবিত করতেই শিশুদের নিয়ে এই প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছি। সামনে আরও বড় পরিসরে এ টুর্নামেন্ট আয়োজন করা হবে।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ও জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সভাপতি কামরুল হাসান বলেন, বর্তমানে আধুনিকতার ছোঁয়ায় জাতীয় খেলা হা-ডু-ডু-এর অস্তিত্বই যেন হারিয়ে যেতে বসেছে। আমি এমন আয়োজনকে সাধুবাদ জানাই। প্রতি বছর এ ধরনের আয়োজনে সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দেন তিনি।
শহীদ