
দেশের সবচেয়ে বড় আমের হাট কানসাট বাজার থেকে পচা ও ফাটা আম সংগ্রহ করছে দেশের নামিদামি জুস কোম্পানিগুলো। তারা প্রতি কেজি ৫ টাকা থেকে শুরু করে ২০ টাকার মধ্যে এসব আম কিনছে। জুস কোম্পানির আম কেনার জন্য চলতি মৌসুমে শুধু কানসাট বাজারেই অন্তত ১০টি আড়ত রয়েছে।
জুস কোম্পানির কেনা আমের দামকে অন্যান্য আমের সঙ্গে তুলনা করে সম্প্রতি বেশ কয়েকটি গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন আমচাষিরা। চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার কানসাট বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
উপজেলার মুসলিমপুর-হামেদনগর এলাকা থেকে আসা রফিক আলী বলেন, “আমি প্রতিদিন আশপাশের এলাকা থেকে ঝরে পড়া আম কম দামে কিনে জুসের আড়তে বিক্রি করি। দুদিনে প্রায় ৩৫ ক্যারেট আম দিয়েছি আড়তে। কেজি প্রতি আমার ৩-৪ টাকা লাভ হয়।” তিনি জানান, তাঁর মতো আরও অনেকে রয়েছেন যারা ঝরে পড়া আম সংগ্রহ করে বিক্রি করছেন।
কানসাট বাজারে জুস কোম্পানির জন্য আম কেনা আড়তদার বাবুল বলেন, “জুস কোম্পানির জন্য ৫-২০ টাকা কেজি দরে আম কেনা হচ্ছে। এসব আম আমরা বিভিন্ন নামিদামি কোম্পানির প্রতিনিধিদের কাছে সরবরাহ করি।”
আরেক আম ক্রেতা মোরসালিন হক বলেন, “বাজারের একেবারে না চলা, পচা, ফাটা ও কীটধরা আমগুলোই কেনা হয় জুস কোম্পানির জন্য। এসব আম ৫-১৫ টাকার মধ্যে বিক্রি হয়। তারা কোনো দিনই বাজারের ভালো আম কেনে না। শুধু নামেই প্রচার করে, বাস্তবতা দেখলে সেটা বোঝা যায়।”
মুক্তারুল নামে এক আমচাষি বলেন, “সম্প্রতি ঈদ ও ছুটির কারণে আমের বাজার কিছুটা মন্দা ছিল। তবে সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে বাজার চড়া হচ্ছে।” তিনি দাবি করেন, “কানসাটের আমকে ধ্বংস করার জন্য পরিকল্পিতভাবে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। এতে মাঠ পর্যায়ের আম উদ্যোক্তারা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।”
আবদুস সামাদের আড়তের এক প্রতিনিধি রাজু বলেন, “ল্যাংড়া, লকনা, গুটি জাতের ঝরে পড়া পাকা আম ক্রয় করে প্রতিদিন আড়াইশ থেকে ৩শ ক্যারেট বিভিন্ন জুস কোম্পানির কাছে বিক্রি করা হয়। কোম্পানির জন্য আলাদাভাবে শ্রমিক রয়েছে, যাদের কাজ শুধুই জুস কোম্পানির জন্য আম সরবরাহ করা।”
এদিকে শিবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আজাহার আলী আম বাজার পরিদর্শন করে আমদামের বিষয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন।
কৃষি বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, চলতি মৌসুমে চাঁপাইনবাবগঞ্জে ৩৭ হাজার ৫০৪ হেক্টর জমিতে আমবাগান রয়েছে। এতে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩ লাখ ৮৬ হাজার টন।
সজিব