ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৫ জুন ২০২৫, ১২ আষাঢ় ১৪৩২

পাকশী ইপিজেড রোড চলাচলের অযোগ্য

ঈশ্বরদীতে খানাখন্দে ভরা সড়ক

স্টাফ রিপোর্টার

প্রকাশিত: ২১:১৭, ২৪ জুন ২০২৫

ঈশ্বরদীতে খানাখন্দে ভরা সড়ক

রেলগেট থেকে সাঁড়া গোপালপুর তালতলা রোডের একাধিক গর্তে ট্রাক ও ট্রাক্টর পড়ে বেহাল দশার একাংশ

ঈশ্বরদী তালতলা হয়ে পাকশী ইপিজেড রোড চলাচলের অযোগ্য হয়ে জনভোগান্তি বৃদ্ধি পেলেও দেখার কেউ নেই। ঈশ্বরদী রেলগেট থেকে ইপিজেড ও পাকশী রেলওয়ে বিভাগীয় অফিসের মধ্যে চলাচলের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ রোডের বর্তমান অবস্থা  দেখে মনে হবে রোড দুটির কোনো অভিভাবক নেই। রেলগেট থেকে সাঁড়া গোপালপুর তালতলা পর্যন্ত প্রায় তিন কিলোমিটার অভিভাবকহীন রোডটি দেখলেই মনে হবে ঈশ^রদীতে এমন খানাখন্দে ভরা আর কোনো রোড নেই।

দীর্ঘদিন থেকে এই রোডটি চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। একইভাবে রুপপুর টানেল থেকে হার্ডিঞ্জ ব্রিজ স্টেশন পর্যন্ত প্রায় এক কিলোমিটার রোডটিরও অবস্থা তথৈবচ। অভিভাবকহীন এই রোড  দুটি দীর্ঘদিন সংস্কার না করায় প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা। বর্তমানে চলাচলের অযোগ্য ও নাজুক হয়ে পড়া রোড দুটি মেরামতের দাবি উঠেছে রেল বিভাগ, ইপিজেডসহ বিভিন্ন মহলের পক্ষ থেকে। এমনকি ঈশ^রদী-পাকশীতে আশা দেশী-বিদেশী পর্যটক ও দর্শণার্থীরাও এই রোড দুটির নানা প্রকার খানাখন্দ ও ধুলাবালি এবং দূর্ঘটনা নিয়ে বিরুপ মন্তব্য করতেও দ্বিধাবোধ করছেন না।

এমনকি রোড দুটির কর্তৃপক্ষকেও ভর্ৎসনা করছেন। পাকশী বিভাগীয় রেল অফিস, ঈশ^রদী ইপিজেড ও সাঁড়াগোপালপুল এলাকার অসংখ্য ভুক্তভোগী, ইপিজেড শ্রমিক, বিভিন্ন প্রকার যানবাহন মালিক ও চালকদের অভিযোগে জানা গেছে, সংশ্লিষ্ট বিভাগের অনিয়ম, দুর্নীতি, অযোগ্যতা ও অদক্ষ দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের অবহেলার কারণে প্রতিদিন হাজার হাজার পদথচারী, যাত্রী, শ্রমিক, যানবাহন চালক, পাকশী রেলওয়ে বিভাগীয় অফিসসহ বিভিন্ন সরকারী-বেসরকারী অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং বিভিন্ন শিল্প কারখানার মালিকদের অসহনীয় ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে।

বিভিন্ন স্থানে গর্ত ও খানাখন্দের সৃষ্টি হওয়ায় রোড দুটির অবস্থা এতই নাজুক যে, পায়ে হেঁটে চলাচল করাও দুস্কর হয়ে পড়েছে। রোড দুটিতে মালবাহী ও যাত্রীবাহী অসংখ্য যানবাহন চলাচলের কারণে সৃষ্ট প্রচন্ড পরিমাণ ধুলাবালিতে নিকটস্থ বাড়িঘরে বসবাস করাও দুস্কর হয়ে পড়েছে। একইভাবে রুপপুর টানেল থেকে পাকশী রেল স্টেশন হয়ে পাকশী টোল প্লাজা পর্যন্ত রোডটি দিয়ে প্রতিদিন অন্তত: ৫/৬শ’ মালবাহী ও বালু বহনকারী ট্রাক চলাচল করে। এ কারণেই মূলত: রোডটি ভেঙ্গে চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে।

সুবিধাবাধিরা নিজেদের অবৈধ টাকার পাহাড় গড়তেই মূলত: সরকারের কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত রোডটি ধ্বংস করে দিয়েছে। বিশেষ করে রেলগেট-তালতলা রোডের অনেক স্থানে বিশালাকৃতির অসংখ্য গর্ত সৃষ্টি হওয়ায় প্রায় প্রতিদিনই মালবাহী ট্রাকসহ নানা প্রকার যানবাহন আটকে থাকছে। এতে করে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে বিনোদনের জন্য পাকশী পদ্মা নদীর জোড়া সেতু এলাকায় আসা দেশি-বিদেশি হাজারও বিনোদন প্রিয় মানুষদেরও বিড়ম্বনার শিকার হতে হচ্ছে। নদী এলাকার বাতাসে উড়ে আসা ধুলোবালি কণায় অনেকের চোখের সমস্যাও হচ্ছে।

আবার অনেককে শ্বাসকষ্টের মতো রোগেও আক্রান্ত হতে হচ্ছে। সব মিলিয়ে রেলগেট থেকে সাঁড়া গোপালপুর তালতলা পর্যন্ত প্রায় তিন  কিলোমিটার দীর্ঘ রোডে একটি যানবাহনের  যেখানে  পাঁচ মিনিট সময় লাগার কথা। সেখানে রোডের নাজুক অবস্থার কারণে প্রায় ঘণ্টাকাল সময় লাগছে। একই কারণে রুপপুর টানেল থেকে হার্ডিঞ্জ ব্রিজ স্টেশন হয়ে পাকশী টোল পর্যন্ত প্রায় এক কিলোমিটার রোডটিতেও ৫/৭ মিনিটের স্থলে সময় লাগছে ৪০/৫০ মিনিট। এ অবস্থায় পথচারী থেকে শুরু করে বিভিন্ন প্রকার যানবাহনের শ্রমঘণ্টা ও ব্যয় বেড়ে যাচ্ছে। রুপপুর টানেল-হার্ডিঞ্জ ব্রিজ স্টেশন রোডটি মেরামত না করায় হাজার হাজার ট্রেন যাত্রীদের সঙ্গে জোড়া সেতু ও পদ্মানদী এলাকা ঘুরতে আসা বিনোদনপ্রিয় মানুষগুলো বিমুখ হয়ে পড়ছে।

স্থানীয বিভিন্ন প্রকার দোকানিদেরও খাদ্যপণ্যে ধুলিকণা ঢুকে ক্ষতি হচ্ছে খাদ্যপণ্য ও ব্যবসার। এ অবস্থায় ঈশ্বরদী ইপিজেডের বিভিন্ন শিল্প কারখানার কর্মকর্তা-কর্মচারি, শ্রমিক, পাকশী বিভাগীয় রেল অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারি, ট্রেন যাত্রী ও যানবাহন মালিক দেশী-বিদেশী চাকরীজীবি এবং বিনোদন প্রিয় মানুষ ও পথচারিদের পক্ষ থেকে জরুরিভাবে রোড দুটি মেরামতের দাবি জানানো হয়েছে।

×