
ছবি: সংগৃহীত।
শিশুর কথা বলা ও চিন্তাশক্তির বিকাশে কোনো ওষুধের চেয়ে বেশি কার্যকর হলো অভিভাবকের ভালোবাসা, সময় ও ইতিবাচক সামাজিক যোগাযোগ—এমনটাই জানিয়েছেন শিশু বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. আবিদ হোসেন মোল্লা। তিনি বারডেম জেনারেল হাসপাতাল ও ইব্রাহিম মেডিকেল কলেজের শিশু স্বাস্থ্য বিভাগের জ্যেষ্ঠ চিকিৎসক।
সম্প্রতি এক বক্তব্যে তিনি বলেন, “শিশুর সঙ্গে কথা বলার সময় চোখে চোখ রেখে, হাসিমুখে কথা বলুন। কোনো কাজ করতে পারলে বা কোনো প্রশ্নের সঠিক উত্তর দিতে পারলে শিশুকে অবশ্যই উৎসাহ দিন। এতে তার আত্মবিশ্বাস বাড়বে এবং শব্দভাণ্ডার বা ভোকাবুলারি দ্রুত সমৃদ্ধ হবে।”
তিনি বলেন, শিশু যেন চেপে না যায় বা নিজেকে গুটিয়ে না নেয়, সে জন্য তাকে পর্যাপ্ত মনোযোগ দিতে হবে। তার ভাব প্রকাশের প্রবণতা বাড়াতে হবে। শিশুদের ভাষা ও বুদ্ধিমত্তার বিকাশে সামাজিক ইন্টারঅ্যাকশনই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
ডা. আবিদ উদাহরণ দিয়ে বলেন, “একদিন চিড়িয়াখানায় নিয়ে যাওয়া, বিভিন্ন পশুপাখি দেখা, এসব অভিজ্ঞতা শিশুদের মধ্যে উত্তেজনা তৈরি করে। এই উত্তেজনা তাদের মস্তিষ্ককে উদ্দীপ্ত করে এবং কিছু বলার বা প্রকাশ করার আগ্রহ তৈরি করে।”
তিনি আরও বলেন, “আমি সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছি শিশুর জীবনের প্রথম তিন বছরে সামাজিক যোগাযোগে। এই সময়েই শিশুর মৌলিক বিকাশ ঘটে। যদি আমরা এই সময়ে তাকে যথাযথভাবে সময় দিই, তাহলে সে আর পাঁচটা শিশুর মতোই মানসিক ও ভাষাগতভাবে এগিয়ে যেতে পারবে।”
তিনি সতর্ক করে বলেন, “এই ঘাটতি পূরণে কোনো ওষুধ, চিকিৎসা বা কৌশল তেমন কার্যকর হবে না। তাই আমাদের উচিত দৈনন্দিন ব্যস্ততা থেকে সময় বের করে শিশুর সঙ্গে মানসম্পন্ন সময় কাটানো।”
বিশেষজ্ঞের পরামর্শ অনুযায়ী—শিশুকে সময় দিন, মুখোমুখি কথা বলুন এবং বাস্তব অভিজ্ঞতায় যুক্ত রাখুন। তাহলেই শিশুর ভাষাগত ও মানসিক বিকাশ হবে আরও মজবুত ও টেকসই।
মিরাজ খান