
ছবি: সংগৃহীত।
কিডনি শরীরের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলোর মধ্যে একটি। এটি আমাদের শরীরের বর্জ্য নিষ্কাশন, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ এবং রক্ত বিশুদ্ধ রাখার মতো গুরুত্বপূর্ণ কাজ করে। কিন্তু দৈনন্দিন জীবনের কিছু সাধারণ বদভ্যাস কিডনিকে নীরবে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। সময়মতো সতর্ক না হলে কিডনি বিকলের ঝুঁকি বেড়ে যায় বহুগুণ।
বিশেষজ্ঞদের মতে, নিচের ৫টি অভ্যাস ধীরে ধীরে কিডনির স্বাভাবিক কার্যক্ষমতা হ্রাস করে, যা দীর্ঘমেয়াদে কিডনি বিকল হওয়ার দিকে ঠেলে দেয়।
১. অপর্যাপ্ত পানি পান:
প্রতিদিন কম পানি পান করলে শরীরের বর্জ্য কিডনির মাধ্যমে ঠিকমতো বের হয় না। ফলে কিডনিতে জমে যেতে পারে ক্ষতিকর টক্সিন ও খনিজ, যা ধীরে ধীরে কিডনির কার্যকারিতা নষ্ট করে দেয়। প্রতিদিন অন্তত ৮–১০ গ্লাস পানি পান করা উচিত।
২. নিয়ম ছাড়া ব্যথানাশক সেবন:
অনেকে দীর্ঘ সময় নিয়ম না মেনে ব্যথানাশক ওষুধ (যেমন: প্যারাসিটামল, ন্যাপ্রোক্সেন বা আইবুপ্রোফেন) সেবন করেন। এই ওষুধগুলোর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় কিডনির রক্তপ্রবাহ ব্যাহত হয়, যা কিডনির ক্ষতি করতে পারে।
৩. অতিরিক্ত লবণ ও প্রক্রিয়াজাত খাবার খাওয়া:
লবণ ও সোডিয়ামসমৃদ্ধ খাবার অতিরিক্ত গ্রহণ করলে রক্তচাপ বেড়ে যায় এবং কিডনির ওপর অতিরিক্ত চাপ পড়ে। একইভাবে ফাস্টফুড ও প্রক্রিয়াজাত খাবারে থাকা প্রিজারভেটিভ কিডনির কোষে দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতি করে।
৪. ঘন ঘন প্রস্রাব চেপে রাখা:
অনেকেই কাজের চাপে বা আলস্যে বারবার প্রস্রাব আটকে রাখেন। এতে মূত্রথলিতে ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ এবং পরবর্তীতে কিডনিতে ইনফেকশন ও ক্ষতির ঝুঁকি থাকে।
৫. অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপ:
এই দুটি রোগ কিডনি বিকলের প্রধান কারণ। যারা নিয়মিত চিকিৎসা ও ডায়েট অনুসরণ করেন না, তাদের কিডনিতে রক্ত সরবরাহ কমে যায়, ফলে কিডনি ক্ষতিগ্রস্ত হতে শুরু করে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, বেশিরভাগ কিডনি রোগ শুরুতে নিরব থাকে। তাই নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা, সুস্থ অভ্যাস ও সময়মতো চিকিৎসা গ্রহণ ছাড়া বিকল কিডনি ঠেকানো সম্ভব নয়।
কিডনির রোগ ধীরে ধীরে দেখা দিলেও একবার সমস্যা শুরু হলে তা থামানো কঠিন হয়ে পড়ে। তাই এখনই সময় সচেতন হওয়ার। এই ৫টি বদভ্যাস বর্জন করে প্রতিদিন কিছুটা সতর্ক থাকলেই কিডনিকে রাখা যাবে সুস্থ ও কর্মক্ষম।
মিরাজ খান