
ছবি: জনকণ্ঠ
লালমনিরহাট জেলার পাটগ্রাম উপজেলার জোংড়া ইউনিয়নের ইসলাম নগরের ঝাকুয়াটারি এলাকা থেকে টুপামারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় হয়ে সোনার দোলা ও দক্ষিণ বাড়ী পর্যন্ত প্রায় ৫ কিলোমিটার রাস্তা বছরের পর বছর ধরে বেহাল অবস্থায় পড়ে রয়েছে। চলাচলের অনুপযোগী এই সড়কটি নিয়ে চরম দুর্ভোগে রয়েছেন স্থানীয়রা।
গত ২৪ জুন (মঙ্গলবার) সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, পুরো রাস্তাটি বড় বড় গর্তে ভরা এবং কাদায় একেবারে কর্দমাক্ত হয়ে আছে। বৃষ্টির দিনে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়ে ওঠে। রাস্তা দিয়ে হেঁটে চলা দুষ্কর হয়ে পড়ে। প্রতিদিন এই রাস্তা দিয়েই ৪-৫টি গ্রামের শত শত মানুষ—শিশু, শিক্ষার্থী, কৃষক, রোগী ও গর্ভবতী নারী—জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছেন। পা পিছলে পড়ে গিয়ে আহত হওয়ার ঘটনা প্রায় নিয়মিতই ঘটছে।
স্থানীয়রা জানান, টুপামারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাঁচ শতাধিক শিক্ষার্থী প্রতিদিন এই সড়ক ব্যবহার করে। এছাড়া আড়াই হাজারেরও বেশি মানুষ এই রাস্তাটির ওপর নির্ভরশীল।
স্থানীয় বাসিন্দা কামরুজ্জামান বিপ্লব বলেন, “বর্ষা এলেই ভয় পাই। গর্ভবতী নারী বা রোগীকে হাসপাতালে নিতে ভ্যান চলে না, অ্যাম্বুলেন্স তো কল্পনাতেও নেই। কাঁধে করে নিয়ে যেতে হয়। রাস্তায় চলাচল একপ্রকার অসম্ভব। বহু বছর ধরে কোনো সংস্কার হয়নি। বৃষ্টির সময় রাস্তাটি একেবারে অচল হয়ে পড়ে। কৃষিপণ্য পরিবহন, রোগী আনা-নেওয়া, ছাত্রছাত্রীদের যাতায়াতে ভোগান্তির শেষ নেই।”
এ বিষয়ে ১ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. মোমিনুর ইসলাম বলেন, “গত বছর উপজেলা প্রকৌশলী দপ্তরে রাস্তাটির ইট সলিংয়ের জন্য আবেদন করেছি। কিন্তু এখনো কোনো অনুমোদন মেলেনি।”
পাটগ্রাম উপজেলা প্রকৌশলী মো. শরিফুল আলম বলেন, “রাস্তাটির বিষয়ে প্রতিবেদন ইউএনও মহোদয়ের কাছে পাঠানো হয়েছে। বরাদ্দ পাওয়া গেলে দ্রুত কাজ শুরু করা হবে।”
পাটগ্রাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) উত্তম কুমার সেন বলেন, “বর্তমানে টিআর প্রকল্পে কোনো বরাদ্দ নেই। তবে ভবিষ্যতে নতুন বরাদ্দ এলে রাস্তাটিকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।”
এলাকাবাসী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, দীর্ঘদিন ধরে শুধু আশ্বাস দেওয়া হচ্ছে, কিন্তু কোনো কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে না। তারা দ্রুত রাস্তার সংস্কার কাজ শুরুর জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
এম.কে.