
ছবি: সংগৃহীত
ছবি সংরক্ষণ ও ব্যবস্থাপনায় দীর্ঘদিন ধরে জনপ্রিয়তা ধরে রেখেছে গুগল ফটোস। কিন্তু সময়ের সঙ্গে ব্যবহারকারীদের চাহিদা ও কাজের ধরণ বদলাচ্ছে। ফলে অনেকেই গুগল ফটোসের সীমাবদ্ধতায় বিরক্ত হয়ে অন্য সমাধানের খোঁজ করছেন। এমনই এক ব্যবহারকারী জানালেন কেন তিনি গুগল ফটোস ছেড়ে দিয়েছেন এবং কীভাবে মাইক্রোসফট ওয়ানড্রাইভ হয়ে উঠেছে তার ছবি ও ভিডিও সংরক্ষণের নতুন ঠিকানা।
নতুন রূপে ওয়ানড্রাইভের অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ
ওয়ানড্রাইভের নতুন অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ একেবারে নতুনভাবে উপস্থাপন করেছে ফটো গ্যালারি। অ্যাপটি খুললেই প্রথম চোখে পড়ে পরিচ্ছন্ন ও সুসংগঠিত গ্যালারিভিউ। দিন, মাস বা বছর অনুযায়ী ছবি দেখার অপশন থাকায় পুরনো স্মৃতি খুঁজে পাওয়া সহজ হয়। অ্যালবাম ও ফেভারিট সেকশনে সরাসরি যাওয়ার সুবিধাও রয়েছে।
উন্নত এআই-সার্চ ও মোমেন্টস ট্যাব
প্রথমে কিছুটা দুর্বল থাকলেও এখন ওয়ানড্রাইভের এআই-সার্চ দারুণভাবে কাজ করছে। "Beach" লিখলেই সব সমুদ্রতীরের ছবি একত্রিত হয়ে আসে। মোমেন্টস ট্যাব তো আরও চমকপ্রদ—এটি শুধু একটি ফিচার নয়, বরং স্মৃতি ঘেঁটে দেখার এক নতুন অভিজ্ঞতা। ‘On This Day’, ‘Recent Trips’, ‘Life Lately’ এবং ‘Photo Shuffle’—এই সেকশনগুলো নস্টালজিয়া তৈরি করে।
বায়োমেট্রিক নিরাপত্তায় এগিয়ে
আজকের সময়ে ফটো অ্যাপের ক্ষেত্রে নিরাপত্তা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অথচ গুগল ফটোসে এখনো অনেক সীমাবদ্ধতা রয়েছে বায়োমেট্রিক ফিচার নিয়ে। সেখানে ওয়ানড্রাইভ অ্যাপে ফিঙ্গারপ্রিন্ট দিয়ে পুরো অ্যাপ লক করা যায়, যা ব্যক্তিগত ছবি রক্ষা করে। এর Personal Vault ফিচার দিয়ে গোপন ছবি বা ডকুমেন্টও বাড়তি নিরাপত্তায় রাখা যায়।
শেয়ারে বেশি নিয়ন্ত্রণ
ওয়ানড্রাইভ ব্যবহারকারীদের ছবি শেয়ারিংয়ে দেয় বাড়তি সুবিধা। কোনো লিংক শেয়ার করার সময় আপনি নির্ধারণ করতে পারেন কতদিন সেটি থাকবে—একদিন, এক সপ্তাহ বা নিজের মতো করে। চাইলে পাসওয়ার্ডও বসানো যায়, ফলে লিংক পেলেও অনুমতি ছাড়া কেউ দেখতে পারবে না।
১ টেরাবাইট জায়গা, খরচেও সাশ্রয়
ব্যবহারকারীর ছবি ও ভিডিও মিলিয়ে প্রায় ৩০০ গিগাবাইট স্পেস লাগে। গুগলের স্টোরেজ প্ল্যানের সীমাবদ্ধতায় ২০০ গিগাবাইটের পরই সরাসরি ২ টেরাবাইটে যেতে হয়, যা ব্যয়বহুল ও অনাবশ্যক। সেখানে মাইক্রোসফট ৩৬৫ সাবস্ক্রিপশনে ১ টেরাবাইট ওয়ানড্রাইভ স্টোরেজ পাওয়া যায়, যা তার প্রয়োজনের জন্য একেবারে যথেষ্ট।
উইন্ডোজের সঙ্গে নিখুঁত সংযুক্তি
পিক্সেল ৮ ফোন থেকে যখন ব্যবহারকারী তার উইন্ডোজ পিসিতে যান, ওয়ানড্রাইভের মাধ্যমে তার সমস্ত ছবি সরাসরি পাওয়া যায়। কোনো ওয়েব ইন্টারফেস বা আলাদা অ্যাপ চালু করতে হয় না। উইন্ডোজের ফটোস অ্যাপ, ফাইল এক্সপ্লোরার, এমনকি স্টার্ট মেনুতেও সরাসরি ছবির অ্যাকসেস পাওয়া যায়।
কিছু সীমাবদ্ধতা থাকলেও গ্রহণযোগ্য
ওয়ানড্রাইভে ফটো এডিটিং ফিচার এখনো সীমিত, আর এআই এডিটিং টুলস এখনো গুগল ফটোসের মতো শক্তিশালী নয়। তবে ব্যবহারকারীর মতে, এসব ছোটখাটো দিক বাদ দিলে সামগ্রিক অভিজ্ঞতা এতটাই ভালো যে, তিনি গুগল ফটোস ছেড়ে মাইক্রোসফট ওয়ানড্রাইভ-কে বেছে নিয়েছেন।
ফলে, ছবি সংরক্ষণ, নিরাপত্তা, স্মৃতি রিভিউ এবং সহজ ব্যবহার— সব মিলিয়ে ওয়ানড্রাইভ এখন অ্যান্ড্রয়েড ব্যবহারকারীদের জন্য একটি নতুন ও নির্ভরযোগ্য সমাধান হয়ে উঠেছে।
এম.কে.