
ছবি: সংগৃহীত।
বাংলাদেশসহ বিশ্বজুড়ে দাঁতের ক্ষয় বা ক্যাভিটির সমস্যা ক্রমেই বাড়ছে। অল্প বয়সেই দাঁতের ক্ষয় শুরু হলে তা ধীরে ধীরে সংক্রমণ, ব্যথা এবং এমনকি দাঁত হারানোর কারণ হতে পারে। তবে সঠিক খাদ্যাভ্যাস ও কিছু প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা মেনে চললে সহজেই দাঁতের ক্ষয় ঠেকানো সম্ভব বলে মত দিয়েছেন চিকিৎসক ও ডেন্টাল বিশেষজ্ঞরা।
ডেন্টাল বিশেষজ্ঞরা বলেন, দাঁতের ক্ষয়ের প্রধান কারণ হলো চিনিযুক্ত খাবার ও পানীয়, যা মুখে থাকা ব্যাকটেরিয়ার সঙ্গে বিক্রিয়া করে অ্যাসিড তৈরি করে। এই অ্যাসিডই দাঁতের এনামেল ধ্বংস করে ক্যাভিটি তৈরি করে। তবে কিছু খাবার রয়েছে, যেগুলো দাঁতের স্বাস্থ্য রক্ষায় সহায়ক।
দাঁতের ক্ষয় রোধে যেসব খাবার খেতে পারেন:
১. দুধ ও দুগ্ধজাত খাবার:
দুধ, দই ও চিজে থাকা ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস দাঁতের এনামেল মজবুত করে এবং অ্যাসিডের ক্ষতি থেকে দাঁতকে রক্ষা করে।
২. আঁশযুক্ত ফল ও সবজি:
আপেল, গাজর, শসা ও লেটুসের মতো আঁশযুক্ত খাবার মুখের লালা নিঃসরণ বাড়ায়, যা দাঁতের মধ্যে থাকা খাবারের কণা পরিষ্কার করতে সাহায্য করে।
৩. বাদাম ও বীজজাত খাবার:
বাদামে থাকা মিনারেল দাঁতের ক্ষয় রোধে কার্যকর। বিশেষ করে আমন্ড, আখরোট এবং তিল দাঁতের এনামেল শক্তিশালী করে।
৪. সবুজ চা ও গ্রিন টি:
গ্রিন টি-তে থাকা পলিফেনল দাঁতের ক্ষয়কারী ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করে এবং মুখের পিএইচ ব্যালেন্স বজায় রাখে।
৫. পানি:
প্রতিদিন পর্যাপ্ত পানি পান দাঁতের ক্ষয় রোধে অত্যন্ত জরুরি। এটি মুখের লালা তৈরিতে সাহায্য করে এবং অ্যাসিড ধুয়ে ফেলে।
যে খাবারগুলো এড়িয়ে চলা উচিত:
অতিরিক্ত চিনি ও মিষ্টিজাত খাবার (চকলেট, কোমল পানীয়, চুইংগাম)
স্টিকি বা আঠালো খাবার (খেজুর, টফি)
অ্যাসিডিক ফল ও পানীয় (লেবুর রস, ট্যামারিন্ড)
চিকিৎসকদের মতে, দাঁতের ক্ষয় রোধে খাবারের পাশাপাশি প্রতিদিন দুইবার ব্রাশ করা, সুতা বা ফ্লস ব্যবহার এবং ছয় মাস অন্তর একজন ডেন্টিস্টের পরামর্শ নেওয়া জরুরি। শিশুদের ক্ষেত্রে ছোটবেলা থেকেই দাঁতের যত্নে অভ্যাস গড়ে তোলা প্রয়োজন। অভিভাবকদের উচিত শিশুদের মিষ্টিজাত খাবার কমিয়ে দেওয়া এবং রাতের খাবারের পর অবশ্যই দাঁত ব্রাশ করানোর অভ্যাস করানো।
দাঁতের ক্ষয় একবার শুরু হলে তা পুরোপুরি রোধ করা কঠিন হতে পারে। তাই আগে থেকেই প্রতিরোধ করাই সবচেয়ে কার্যকর উপায়। সুষম খাবার এবং সচেতন জীবনযাপনই দাঁতের সুস্বাস্থ্য রক্ষায় প্রধান ভূমিকা রাখতে পারে।
মিরাজ খান