আগামীকাল এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা শুরু

পূর্ণ সময় ও নম্বরে আগামীকাল বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হচ্ছে এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা। দেশের ১১টি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে একযোগে এ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। নির্বিঘেœ পরীক্ষা আয়োজনে এরই মধ্যে সব কার্যক্রম শেষ করেছে আন্তঃশিক্ষা বোর্ড। বোর্ড কর্মকর্তারা বলছেন, শেষ মুহূর্তে ফরম পূরণের সময় বৃদ্ধি করায় কয়েক হাজার শিক্ষার্থী নতুন করে পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ পেয়েছে। তবে সে সংখ্যাটি এখনো জানাতে পারেনি বোর্ড। আজ বুধবার আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হবে। 
ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক এসএম কামাল উদ্দিন হায়দার জনকণ্ঠকে বলেন, ‘করোনা ও ডেঙ্গুর জন্য ঢাকা শিক্ষা বোর্ডসহ একাধিক বোর্ডে শিক্ষার্থীদের একটি অংশ আন্দোলন করেছে। পরে তারা তাদের ভুল বুঝতে পেরেছে। যে কারণে পরীক্ষায় মনোযোগী হয়েছে’। এইচএসসি পরীক্ষা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই পরীক্ষা পেছানোর কোনো সুযোগ ছিল না। কারণ পরীক্ষার পর উচ্চ শিক্ষায় ভর্তি পরীক্ষা রয়েছে। ফলে পরীক্ষা পিছিয়ে গেলে শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবন মারাত্মকভাবে হুমকির মধ্যে পড়বে।
এখন পর্যন্ত বোর্ডের দেওয়া হিসেবে নয়টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ড, বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড ও বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডে নিয়মিত-অনিয়মিত মিলিয়ে মোট পরীক্ষার্থী ১২ লাখ ৫১ হাজার ১১১ জন। এর মধ্যে নয়টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের অধীন এইচএসসি পরীক্ষার্থী ১০ লাখ ৫৫ হাজারের বেশি। গতবারের তুলনায় এ বছর এইচএসসিতে প্রায় ৭৩ হাজার পরীক্ষার্থী কমেছে। মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের অধীন আলিমে পরীক্ষার্থী কমেছে প্রায় দুই হাজার। আলিমে এবার পরীক্ষার্থী ৮৬ হাজারের বেশি। কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীন মোট পরীক্ষার্থী ১ লাখ ৯ হাজারের বেশি। কমেছে সাত হাজারের মতো।
প্রতিবছর প্রশ্ন ফাঁস ও নকলের অভিযোগ ওঠে বোর্ড পরীক্ষাগুলোতে। অনিয়ম এড়াতে বন্ধ করা হয় কোচিং সেন্টার। কিন্তু তারপরও মুক্তি মেলে না। দেখা যায়, এসএসসি বা এইচএসসি পরীক্ষায় শতাধিকের বেশি পরীক্ষার্থী বহিষ্কার হয়। বাদ যান না শিক্ষকরাও। এ ছাড়াও অনিয়ম, প্রশ্ন ফাঁসের গুজব সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সয়লাব হয়। 
এবার প্রশ্ন ফাঁস ও নকল ঠেকাতে ৩৩ নির্দেশনা দিয়েছে আন্তঃশিক্ষা বোর্ড। এর মধ্যে প্রতি ২০ জন পরীক্ষার্থীর জন্য ১ জন কক্ষ পরিদর্শক এবং প্রতিটি কক্ষে কমপক্ষে ২জন করে দায়িত্ব পালন করবেন। কমপক্ষে ৩ ফুট দূরত্ব বজায় রেখে পরীক্ষার্থীর আসন ব্যবস্থা করতে হবে বলে জানানো হয়। এইচএসসি ও সমমানের তত্ত্বীয় পরীক্ষা শেষ হবে ১০ আগস্ট। ব্যবহারিক পরীক্ষা শুরু হবে ১১ আগস্ট এবং শেষ হবে ২১ আগস্ট।
গত তিন বছরের মধ্যে এবারই পরীক্ষার্থী সবচেয়ে কম। শতাংশের হিসেবে কারিগরি শিক্ষা বোর্ডে এই হার বেশি। এ বিষয়ে আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির সভাপতি ও ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান খন্দোকার এহসানুল কবির বলেন, এমনিতেই দেখা যায় পর্যায়ক্রমে ওপরের শ্রেণিতে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে শিক্ষার্থী ঝরে পড়ার হার বাড়ে। এসএসসি ও এইচএসসি পর্যায়ে এই ঝরে পড়ার অন্যতম কারণ হলো দারিদ্র্য এবং শিক্ষার্থীদের বিয়ে হয়ে যাওয়া।