
ছবি: সংগৃহীত।
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স বলেছেন, “ভোগ নয়, ত্যাগ ও নিঃস্বার্থ জনসেবার মানসিকতা নিয়ে নেতাকর্মীদের রাজনীতি করতে হবে। ব্যক্তিগত চাওয়া-পাওয়ার হিসাব কষে রাজনীতিতে সফল হওয়া যায় না।”
মঙ্গলবার দুপুরে ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট পৌর শহরের উত্তর খয়রাকুড়ি এলাকায় উপজেলা মিলনায়তনে উপজেলা কৃষক দলের সাবেক সভাপতি জয়নাল আবেদিন ফকিরের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত স্মরণসভা ও দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
স্মরণসভায় প্রিন্স জয়নাল আবেদিন ফকিরের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে বলেন, “তিনি ছিলেন একজন ত্যাগী, আদর্শবাদী ও নিবেদিতপ্রাণ নেতা। নেতা হয়েও কর্মীর মতো হাসিমুখে কাজ করেছেন। দল সরকারে থাকাকালীনও কোনো ব্যক্তিগত চাওয়া-পাওয়ার হিসাব করেননি।”
তিনি আরও বলেন, “বর্তমান নেতাকর্মীদের উচিত জয়নাল আবেদিন ফকিরের জীবন থেকে শিক্ষা নিয়ে দেশ ও জনগণের কল্যাণে নিঃস্বার্থভাবে কাজ করা।”
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব বলেন, “বিএনপি একটি জনপ্রিয় দল। গুটিকয়েক বিপথগামী নেতাকর্মীর অনৈতিক কর্মকাণ্ডের দায় দল নেবে না। আওয়ামী লীগ যখন ক্ষমতায় ছিল, তখন তাদের দুর্নীতিবাজ ও সন্ত্রাসীদের পৃষ্ঠপোষকতা করেছে; কিন্তু বিএনপি তা করে না এবং ভবিষ্যতেও করবে না। বরং এমন নেতাকর্মীদের বহিষ্কার করে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থাও নিচ্ছে।”
তিনি আরও বলেন, “দুইটি ইসলামী দল ও একটি নবীন রাজনৈতিক দল উদ্দেশ্যমূলকভাবে বিএনপির বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে। তারা লন্ডনে ড. ইউনূস ও তারেক রহমানের মধ্যে অনুষ্ঠিত বৈঠক নিয়ে অস্বস্তিতে রয়েছে। কারণ, সেই বৈঠকে আগামী ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের সম্ভাবনার বিষয়টি উঠে এসেছে। নির্বাচন হলে এসব দলের গুরুত্ব কমে যাওয়ার আশঙ্কায় তারা সমস্বরে বিএনপির বিরুদ্ধে মিথ্যাচারে লিপ্ত হয়েছে।”
তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, “ইনশাআল্লাহ, আগামী নিরপেক্ষ নির্বাচনে জনগণের রায় নিয়ে বিএনপি রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণ করবে এবং সরকার গঠন করে জনআকাঙ্ক্ষা ও অঙ্গীকার বাস্তবায়নে কাজ করবে।”
এজন্য দলের প্রতিটি কর্মীকে সৎ, ত্যাগী, নিষ্ঠাবান ও নিবেদিত হতে হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
প্রিন্স বলেন, “বিএনপির প্রতি জনগণের প্রত্যাশা যেমন বেশি, তেমনি দায়িত্বও অনেক। রয়েছে নানা চ্যালেঞ্জ ও শঙ্কা। নেতাকর্মীদের 'কি পেলাম' সে ভাবনা বাদ দিয়ে ‘দেশ ও জনগণকে কি দিতে পারছি বা পারবো’ — সেই চিন্তা করতে হবে।”
তিনি নেতাকর্মীদের বৈধ ও নৈতিক আয়ের প্রতি গুরুত্ব দিতে বলেন, তবে সেটিই যেন তাদের একমাত্র লক্ষ্য না হয়। দেশপ্রেম ও জনসেবাই রাজনৈতিক কর্মীর মূল লক্ষ্য হওয়া উচিত — বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
সভায় তিনি কৃষক দলের নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, “আগামী নির্বাচনের প্রস্তুতি হিসেবে এখন থেকেই ঘরে ঘরে ধানের শীষের প্রচার শুরু করতে হবে।”
সভায় সভাপতিত্ব করেন উপজেলা কৃষক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসেন এবং সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক আবদুল হান্নান। অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন— কেন্দ্রীয় কৃষক দলের সহ-সভাপতি আবুল বাসার আকন্দ, হালুয়াঘাট উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক আসলাম মিয়া বাবুল, সদস্য সচিব আবু হাসনাত বদরুল কবীর, সদস্য সচিব আবদুল আজিজ খান এবং মরহুম জয়নাল আবেদিন ফকিরের পুত্র, জেলা জাসাসের সহ-সভাপতি রাব্বী কায়সার আরাফাত।
সায়মা ইসলাম