বদরগঞ্জ উপজেলার কালুপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও বদরগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সম্পাদক মোঃ শহিদুল হক মানিক এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে সম্প্রতি শহীদ মিনার সংলগ্ন এলাকায় ঘটে যাওয়া অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার প্রকৃত চিত্র তুলে ধরেছেন। তিনি দাবি করেন, তাকে পরিকল্পিতভাবে রাজনৈতিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করার অপচেষ্টা চালানো হচ্ছে।
বুধবার (২৮ মে) সন্ধ্যায় সংবাদ সম্মেলনে চেয়ারম্যান মানিক বলেন, গত ২ ও ৫ এপ্রিল বদরগঞ্জ শহীদ মিনার সংলগ্ন একটি টিনের দোকান ঘর নিয়ে ইশতিয়াক আহমেদ বাবু ও দোকান মালিক জাহিদুল ইসলামের মধ্যে দীর্ঘদিনের বিরোধের জের ধরে সন্ত্রাসী হামলা, লুটপাট ও মারপিটের ঘটনা ঘটে। তিনি অভিযোগ করেন, জাতীয় পার্টির সাবেক সংসদ সদস্য মোহাম্মদ আলী সরকারের মদদপুষ্ট সন্ত্রাসী বাহিনীর সহায়তায় এই হামলা সংঘটিত হয়।
তিনি জানান, ঘটনার প্রতিবাদে ব্যবসায়ী সমিতির ডাকে ৫ এপ্রিল শহীদ মিনারে মানববন্ধনের আয়োজন করা হলে সেখানেও হামলা চালানো হয়। তিনি নিজে একজন ব্যবসায়ী হিসেবে সেখানে উপস্থিত থাকার কথা বললেও, মানববন্ধন শুরু হতেই সন্ত্রাসীরা তাদের উপর অতর্কিত হামলা চালায়, ভাঙচুর করে তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান মেসার্স মানিক মটরস। এমনকি তার ওপরে এবং কিছু ব্যবসায়ীর ওপর অস্ত্র নিয়ে হামলা ও ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।
চেয়ারম্যান মানিক দাবি করেন, মানববন্ধন চলাকালে সংঘটিত ছুরিকাঘাতে আহত লাভলুর মৃত্যু উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ঘটানো হয়েছে, যেন তাকে (মানিককে) ফাঁসানো যায়। তিনি এ ঘটনায় তার জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, সিসিটিভি ফুটেজেই প্রমাণ রয়েছে আমি ঘটনার সঙ্গে জড়িত নই। আমি পরিস্থিতির শিকার।
এ সময় তিনি বলেন বিভিন্ন মিডিয়ায় তার বিরুদ্ধে প্রকাশিত সংবাদকে মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলেও দাবি করেন। বিশেষ করে দুইটা পত্রিকার প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, আমার নির্যাতনে আমার বড় ভাই পা হারিয়েছেন যা সম্পূর্ণরূপে মিথ্যা ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। মূলত সড়ক দুর্ঘটনায় আমার ভাই পা হারিয়েছেন।
তিনি অভিযোগ করেন, দীর্ঘ ২০-২৫ বছর ধরে মোহাম্মদ আলী সরকার তার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ হিসেবে বারবার নির্বাচনে পরাজিত হয়ে প্রতিহিংসাপরায়ণ মনোভাব নিয়ে তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চালিয়ে আসছেন। চেয়ারম্যান মানিক জানান, তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও পারিবারিক কৃষিজমিও বারবার হামলার শিকার হয়েছে, সর্বশেষ হামলায় তার দোকান থেকে ৮ লক্ষাধিক টাকা ও ১০টি মোটরসাইকেল লুট করা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরও বলেন, শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর মোহাম্মদ আলী সরকার ও চৌধুরী পরিবারের সঙ্গে আওয়ামী সন্ত্রাসীদের সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ হয়ে ওঠে এবং তাদের মদদেই এসব হামলা সংগঠিত হয়।
চেয়ারম্যান মানিক সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনারা জাতির বিবেক। আমি আপনাদের মাধ্যমে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি যেন একটি নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত দোষীদের আইনের আওতায় আনা হয় এবং নিরপরাধ ব্যবসায়ীদের নামে দায়েরকৃত মামলা প্রত্যাহার করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনের শেষে চেয়ারম্যান সাংবাদিকদের সরেজমিন তদন্তের আহ্বান জানান এবং লাভলু হত্যার বিচার বিভাগীয় তদন্ত ও অপরাজনীতির মূলোৎপাটনের জন্য বদরগঞ্জবাসীর প্রতি আহ্বান জানান।
আফরোজা
