ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৮ মে ২০২৫, ১৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

মোহনপুরে দহকুলা নদী এখন মরা খাল

সংবাদদাতা, ভাঙ্গুড়া, পাবনা

প্রকাশিত: ০১:০০, ২৭ মে ২০২৫

মোহনপুরে দহকুলা নদী এখন মরা খাল

বাঁধ নির্মাণের ফলে দু’টি নদী এখন মরা খালে পরিণত হয়েছে

পাবনার উল্লাপাড়ার মোহনপুর দহকুলা নদী এখন বোরো ফসলের মাঠ দহকুলা নদী  চার ঘাটের মুখে বাঁধ নির্মাণের ফলে দু’টি নদী এখন মরা খালে পরিণত হয়েছে। এই নদীর একদিকে প্রবাহিত হয়ে গূমানী নদীতে মিলিত হয়ে বাঘাবাড়ীর সঙ্গে সংযুক্ত হয়। অপরদিকে উল্লাপাড়ার ভেতর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে হুরো সাগরের সঙ্গে মিলিত হয় বলে এলাকাবাসী জানান। দহকুলা নদীর পাড়েই ঐতিহাসিক দহকুলা হাট নামে পরিচিত সেই হাটের আর অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায় না বললেই চলে। বর্তমানে দহকুলা নদী নাব্যতা হারিয়ে তার তলদেশে কৃষকরা বোরো ধানের ব্যাপক আবাদ করেছে।

উল্লাপাড়া উপজেলার ভেতর দিয়ে প্রবাহিত দহকুলা নদীর তলদেশে ব্যাপক  ধানের আবাদের চেষ্টা চলছে।  কৃষক আফজাল হোসেন জানান, দীর্ঘদিন যাবত নদীর নব্যতা হারিয়ে যাওয়ার ফলে দ্রুত দহকুলা নদী শুকিয়ে যায়। এই সময় যার যার সামনে কৃষকরা বোরো ধান, বাঙ্গি,  তরমুজ, উস্তা, পটল, খিরাসহ বিভিন্ন ফসলের আবাদ করে ব্যাপক সাফল্য পেয়েছে।
সরেজমিনে জানা গেছে, বর্ষা মৌসুমেও এই নদীতে পানির স্রোতের তোড়ে তীরবর্তী অনেক বাসিন্দাদের ঘরবাড়ি ভাসিয়ে নিয়ে গৃহহীন করে দিয়েছিল। এদের অনেকেই বসতবাড়ি পুনরায় নির্মাণ করে ঘুরে দাঁড়িয়েছেন। বর্তমান শুকনো মৌসুমে নিরব-নিথর যৌবন হারানো এই দহকুলা নদীর বুকে বোরো ধান চাষ হচ্ছে। এখন সবুজে সবুজে ভরে গেছে নদীর বুক। হাইব্রিড আগাম জাতের ধান রোপণ করায় আর অল্প কিছু দিন পরই কৃষকরা তাদের সোনার ফসল ঘরে তুলতে পারবেন। আর দিন দিন এই নদীতে বোরো আবাদের পরিমাণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। এক সময় বর্ষাকালে পাট বাঁশের হাট নামে পরিচিত উত্তরবঙ্গের পাট ব্যবসায়ীরা নৌকায় করে নারায়ণগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে রপ্তানি করত। এই হাট থেকে হাজার হাজার বাঁশ ক্রয়  করে ভুর বানিয়ে নদী দিয়ে ভাসিয়ে বিভিন্ন জায়গায় নিয়ে যাওয়া হত।
উল্লাপাড়া উপজেলার চরমোহনপুর দহকুলা নতুন গাও কালিয়াক কুপির কাধা বলতোল কালিয়াখর গ্রামের কৃষক আমজাদ হোসেন, জয়নাল আবেদীন, আনসার আলী শেখ, জব্বার আলীসহ অনেকের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এ বছর নদীর চরে জমিতে খিরা, উস্তা, ঝিঙ্গা, পটল, মিষ্টি কুমড়া, বোরো ধান আবাদ করেছি। নদীর বুকে বোরো ধান উৎপাদন করতে সেচের প্রয়োজন হয় না। নদীতে পলি মাটি পড়ায় এবার ধানের ফলন ভালো হয়েছে। আগেই ফসল ঘরে তুলতে পারব। 
নদীর বুকে জমিগুলো সমান্তরাল নয়। তাই আলাদা ছোট ছোট প্লটে জমি প্রস্তুত করে বোরো চাষ করেছি। নদীর বুকে প্রতি বিঘা জমি থেকে ২০-২৫ মণ ধান উৎপাদন হয়। এতে আমরা লাভবান হচ্ছি। এ ব্যাপারে  উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জানান, প্রতিবছরই উপজেলার দহকুলা নদীতে পানি কমে গেলে নদীর চরে এলাকার কৃষকরা বোরো ধান রোপণ করে থাকেন। নদীর বুকের জমিতে বোরো ধানের উৎপাদন এটি বাড়তি খাদ্যের যোগান হিসেবে যোগ হয়। তাই এ সংক্রান্ত বিষয়ে আমরা কৃষকদের পরামর্শ দিয়ে সার্বিক সহযোগিতা করে যাচ্ছি।

আরো পড়ুন  

×