
মুসলিম উম্মাহর জন্য এক অপার রহমত, ফজিলত ও গুনাহ মাফের বারতা নিয়ে প্রতিবছর ফিরে আসে জিলহজ্ব মাসের প্রথম দশ দিন যা ‘আশারায়ে জিলহজ্ব’ নামে পরিচিত। এই দশক ঘিরে পবিত্র কোরআন ও হাদিসে রয়েছে অসংখ্য ফজিলতের বর্ণনা। বিশিষ্ট আইনজীবী, ইসলামী চিন্তাবিদ ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক ড. তুহিন মালিক তাঁর একটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম পোস্টে এই বিশেষ দশ দিনের মাহাত্ম্য তুলে ধরেছেন।
ড. তুহিন মালিক লেখেন, “আলহামদুলিল্লাহ। দোরগোড়ায় চলে এসেছে মহা ফজিলতপূর্ণ ‘আশারায়ে জিলহজ্ব’। অর্থাৎ জিলহজ্ব মাসের প্রথম দশক।”
তিনি উল্লেখ করেন, আল্লাহ রাব্বুল আলামীন সূরা ফজরের ২ নম্বর আয়াতে যে দশ রাতের কসম করেছেন, মুফাসসিরদের মতে, তা হলো জিলহজ্বের প্রথম দশ রাত। আবার সূরা হজ্বের ২৮ নম্বর আয়াতে ‘নির্দিষ্ট দিনসমূহ’-এর কথাও এসেছে, যেটিকে তাফসীরে ইবনে কাসির অনুযায়ী জিলহজ্বের প্রথম দশ দিন হিসেবে ব্যাখ্যা করা হয়।
হাদিসের আলোকে এই দশকের মর্যাদা ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, “রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন—আল্লাহর নিকট জিলহজ্বের দশ দিনের নেক আমলের চেয়ে অধিক প্রিয় আর কোনো দিনের আমল নেই। সাহাবায়ে কেরাম প্রশ্ন করেন, ‘ইয়া রাসূলুল্লাহ! আল্লাহর রাস্তায় জিহাদও (এর চেয়ে উত্তম) নয়?’ তিনি বলেন, ‘না, আল্লাহর রাস্তায় জিহাদও নয়। তবে ওই ব্যক্তির কথা ভিন্ন, যে নিজের প্রাণ ও সম্পদ নিয়ে জিহাদে বেরিয়ে গেল এবং কোনো কিছু নিয়ে আর ফিরে এলো না।’” (সহীহ বুখারী-৯৬৯)
ড. তুহিন মালিক আরও লিখেন, “রাসূলুল্লাহ (সাঃ) জিলহজ্বের নয়টি রোজা, আশুরার রোজা এবং প্রতি মাসে তিনটি রোজা পালন করতেন।” (নাসাঈ-২৪১৭, ২৩৭২; আবু দাউদ-২১০৬)
তিনি হাদিস উদ্ধৃত করে বলেন, “আরাফার (হজ্বের) দিনে রোজা পালন করলে সামনের এবং পিছনের দুই বছরের গুনাহ আল্লাহ তা'আলা ক্ষমা করবেন বলে আমি আশা পোষণ করি।” (মুসলিম-১১৬২; তিরমিযী-৭৪৯)
এই বরকতময় মৌসুমটি যেন প্রতিটি মুসলমান যথাযথভাবে কাজে লাগাতে পারে, সে আহ্বান জানিয়ে ড. তুহিন মালিক লেখেন, “রাব্বুল আলামীন আমাদেরকে ‘আশারায়ে জিলহজ্বের’ ফজিলতপূর্ণ ইবাদতের মওসুমের সৌভাগ্য অর্জনের তওফিক দান করুন।”
জিলহজ্বের এই প্রথম দশ দিন শুধুই কোনো সাধারণ দিন নয়; বরং এটি নেক আমলের এক স্বর্ণালী সুযোগ, যা কেবল বছরজুড়ে নয়, জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারে। ইসলামী দৃষ্টিকোণ থেকে এই দিনগুলোর গুরুত্ব অনুধাবন করে যথাযথভাবে পালন করাই একেকটি মুসলমানের দায়িত্ব। ড. তুহিন মালিকের এই বর্ণনা সে দিকেই আমাদের মনোযোগ ফেরায়।
আফরোজা