
ছবি: দৈনিক জনকন্ঠ।
ঈদের বাকি মাত্র ৯ দিন। এসময়ে এসেও পুরোপুরি জমে উঠেনি ঈদ বাজার। বেশিরভাগ দোকানিরাই তাই অনেকটা অলস সময় কাটাচ্ছেন। অথচ গেল ঈদুল ফিতরে এ সময়টাতে বেচা-কেনায় পুরোদস্তুর ব্যস্ততায় পার করেছেন দোকানিরা। সুনামগঞ্জের হাওর বেষ্টিত তাহিরপুর উপজেলার প্রধান প্রধান হাট-বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
বিভিন্ন পর্যায়ের ব্যবসায়ী ও সাধারণের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ঈদের খুব নিকটে এসেও বাজারগুলোতে ক্রেতার উপস্থিতি আশানুরূপ না থাকার পেছনে জেলার সবচেয়ে বড় বালুমহাল তাহিরপুরের যাদুকাটা নদীতে কাজ বন্ধ হওয়াকে দায়ী করা হচ্ছে। তাঁদের দাবি, নদীতে কাজ বন্ধ থাকায় এ অঞ্চলের বেশিরভাগ মানুষ কর্মহীন অবস্থান দিন পার করছে। কেউ কেউ আবার কাজের উদ্দেশ্য ইতোমধ্যে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বড় বড় শহরে পাড়ি জমিয়েছেন।
তবে এমন অবস্থা হয়তো শেষপর্যন্ত থাকবে না। শেষদিকে এসে ঈদবাজার জমে উঠবে, এমন প্রত্যাশার কথা জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। তাঁদের দাবি, শেষদিকে অন্তত পরিবারের সদস্যদের আবদার মেটাতে ধারদেনা করে হলেও কিছু কেনাকাটা করার চেষ্টা করবে অনেকে।
সরেজমিনে উপজেলার ব্যস্ততম হাট বাদাঘাট বাজার ঘুরে দেখা গেছে, মার্কেট ও দোকানগুলো ঈদের নানা পণ্যের পসরা সাজিয়ে বসলেও ক্রেতা উপস্থিতি প্রত্যাশার চেয়ে কম। আর বেচাকেনা কম থাকায় দোকানিদের কেউ কেউ ফেসবুক স্ক্রল আবার কেউবা টেলিভিশন দেখে সময় পার করছেন।
ঈদবাজার জমে না উঠার পেছনে কারণ জানতে চাইলে বাদাঘাট বাজারের মার্সেল শো-রুমের স্বত্বাধিকারী আক্তার হোসেন এ প্রতিবেদককে বলেন, যাদুকাটা বালুমহাল ও শুল্ক স্টেশনগুলোতে কাজ না থাকায় অনেক মানুষ বর্তমানে কর্মহীন। কেনাকাটার জন্য নগদ টাকার দরকার। যা এখন সাধারণ মানুষের হাতে নেই। আর আমাদের বেচাকেনার একটা বড় টার্গেট থাকে কুরবানির ঈদকে ঘিরে, এখন পর্যন্ত বেচাকেনা যা দেখছি তাতে খুবই হতাশ।
কাস্টমারদের আনাগোনা প্রত্যাশার তুলনায় জিরো বলতে পারেন৷ এর পেছনে প্রধান কারণ যাদুকাটা নদীতে কাজ বন্ধ থাকা। বর্তমানে শ্রমিকদের ঘরে ঘরে ঈদ আনন্দের বদলে আহাজারি চলছে। ঈদ বাজার নিয়ে এমন অনুভূতির কথা জানান উপজেলার অন্যতম গার্মেন্টস ব্যবসায়ী রয়েল ফ্যাশন এর স্বত্বাধিকারী রয়েল আহমদ।
তাহিরপুর সদর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. জুনাব আলী বলেন, এবছর হাওরে বুরো ধানের ফলন ভালো হওয়ায় কিছুটা স্বস্তি বিরাজ করছে মানুষের মধ্যে। তবে যাদুকাটা বালুমহাল বন্ধ থাকায় শ্রমিকদের হাতে নগদ টাকা নেই বললেই চলে। আর ঈদের কেনাকাটায় ক্রেতাদের বড় অংশ জুড়ে থাকে এই নিম্নআয়ের শ্রমিকরাই। তাই ঈদের কেনাকাটায় নদীতে কাজ বন্ধ থাকার একটা প্রভাব পড়বে এটা বলাই যায়।
মিরাজ খান