
ছবি:সংগৃহীত
বিশিষ্ট রাজনৈতিক বিশ্লেষক ড. ফয়জুল হক এক ভিডিও সাক্ষাৎকারে বলেন, বর্তমান সরকারের দুর্বলতা ও রাজনৈতিক ব্যর্থতার জন্য সরকারের অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাস এবং কিছু ভুল কৌশল দায়ী। তিনি অভিযোগ করেন, সরকারের কিছু উপদেষ্টা এবং সমর্থক অতিরঞ্জিত বক্তব্য ও কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে নিজেদের অবস্থান নষ্ট করেছে এবং জনগণের আস্থা হারিয়েছে।
ড. ফয়জুল বলেন, "বাংলাদেশের জনগণ সরকারকে ব্ল্যাঙ্ক চেক দিয়েছে। কিন্তু সেই আস্থা ধরে রাখতে পারেনি তারা।" তিনি আরও বলেন, বর্তমান সরকার যদি ৫ জানুয়ারির পরপরই নির্যাতিতদের মুক্তি ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করত, তাহলে তাদের প্রতি আস্থা অনেক বেশি থাকত।
তিনি মনে করেন, ২০১৩ সালের শাহবাগ আন্দোলনের সময় ইসলামপন্থী রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিক্রিয়া ও আন্দোলন না থাকলে, আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের প্রশ্নই উঠত না। "আমি চ্যালেঞ্জ দিয়ে বলছি, ইসলামপন্থীরা ওই সময় শাহবাগে না নামলে, আওয়ামী লীগকে কেউ নিষিদ্ধ করত না। জামাত, শিবির, হেফাজত, ইসলামী আন্দোলন ও অন্যান্যরা একত্রে আন্দোলন করেছিল বলেই পরিস্থিতি পাল্টেছে," বলেন তিনি।
তিনি অভিযোগ করেন, বর্তমান সরকারের মধ্যে কিছু "জুলুমবাজ" উপদেষ্টা আছে যারা জনগণের দৃষ্টিভঙ্গিকে অন্ধকারাচ্ছন্ন করেছে। তিনি বলেন, "যে সরকার সাগর-রুনি, সিনহা রাশেদ, ইলিয়াস আলীর ঘটনার বিচার করতে পারেনি, সে সরকার জনগণের আস্থা হারাবে এটাই স্বাভাবিক।"
তিনি আরো বলেন, "আজ যারা সরকারের সঙ্গে সংলাপে গেছে, যারা তাকে সহযোগিতা করছে, তাদের শত্রু বানিয়ে দুর্বলতা বাড়ানো হচ্ছে।" তিনি আহ্বান জানান, সরকার যেন দলমত নির্বিশেষে সকল নির্যাতিত রাজনৈতিক দল ও ব্যক্তির সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তোলে এবং একটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতা হস্তান্তরের পথ তৈরি করে।
চরমোনাইয়ের মেয়র ইস্যু প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “মুফতি ফয়জুল করিম নির্বাচনে হাজারো ভোট পেয়েও আজ নানাভাবে হয়রানির শিকার হচ্ছেন। শুধুমাত্র দাড়ি, টুপি বা ইসলামী দলের প্রতীক থাকার কারণেই যেন বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন।”
সাক্ষাৎকারের শেষাংশে তিনি স্পষ্ট করে বলেন, “আমার কোনো শত্রু নেই, আওয়ামী লীগ ব্যতীত। খুনি, লুটেরা, সন্ত্রাসী ছাড়া কেউ শত্রু হতে পারে না। দেশকে এগিয়ে নিতে হলে সরকারকেও এই কনসেপ্ট নিয়ে আগাতে হবে।”
আঁখি