বিশ্বজুড়ে রূপচর্চার জগতে সেলিব্রিটিদের দখল ক্রমেই বাড়ছে। কেবল ক্যামেরার সামনে নয়, এবার তারা জায়গা করে নিচ্ছেন বিউটি ব্র্যান্ডের মালিকানায়ও। রিহানা, কাইলি জেনার, দীপিকা পাড়ুকোন কিংবা ক্যাটরিনা কাইফ—তারা শুধু অভিনয় কিংবা গ্ল্যামারে নয়, বিউটি ব্যবসায়ও গড়েছেন সফল সাম্রাজ্য।
সোশ্যাল মিডিয়া এবং ডাইরেক্ট-টু-কনজ্যুমার প্ল্যাটফর্মের উত্থানে সেলিব্রিটিরা এখন নিজেরা ব্র্যান্ড গড়ার মতো শক্তিশালী প্ল্যাটফর্ম পাচ্ছেন। নিজেদের ব্যক্তিত্ব, স্টাইল ও জনপ্রিয়তাকে কাজে লাগিয়ে তাঁরা রূপচর্চার দুনিয়ায় তৈরি করছেন দৃষ্টান্ত। চলুন জেনে নেওয়া যাক, কোন কোন তারকা তৈরি করেছেন বিশ্বব্যাপী আলোচিত বিউটি ব্র্যান্ড:
রিহানা – ফেন্টি বিউটি
২০১৭ সালে রিহানা শুরু করেন ফেন্টি বিউটি। তার ৫০টির বেশি শেডের ফাউন্ডেশন রেঞ্জ মেকআপ ইন্ডাস্ট্রিতে বৈচিত্র্যের দৃষ্টান্ত হয়ে ওঠে। এই ব্র্যান্ডই রিহানাকে নিয়ে গেছে বিলিয়ন ডলারের তালিকায়।
সেলেনা গোমেজ – রেয়ার বিউটি
২০২০ সালে যাত্রা শুরু করা রেয়ার বিউটি তরুণদের কাছে দ্রুতই জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। হালকা টেক্সচারের মেকআপ ও নিজেকে গ্রহণ করার বার্তা এই ব্র্যান্ডের প্রধান আকর্ষণ।
কাইলি জেনার – কাইলি কসমেটিকস
মাত্র ১৮ বছর বয়সে ২০১৫ সালে কাইলি জেনার গড়েন কাইলি কসমেটিকস। লিপ কিট দিয়ে শুরু হলেও পরে তিনি স্কিন কেয়ারের জগতেও প্রবেশ করেন ‘কাইলি স্কিন’-এর মাধ্যমে।
হেইলি বিবার – রোড স্কিন
২০২২ সালে আত্মপ্রকাশ করে হেইলি বিবারের স্কিনকেয়ার ব্র্যান্ড ‘রোড’। এর মিনিমালিস্ট প্যাকেজিং এবং ‘গ্লেজড ডোনাট’ লুক তুমুল জনপ্রিয়তা পেয়েছে জেন জি-দের মধ্যে।
লেডি গাগা – হাউস ল্যাবস
২০১৯ সালে ‘হাউস ল্যাবরেটরিজ’ নামে মেকআপ ব্র্যান্ড চালু করেন লেডি গাগা। ২০২২ সালে এটি পুনরায় ব্র্যান্ডিং করে হয় ‘হাউস ল্যাবস বাই লেডি গাগা’। পরিবেশবান্ধব ও ক্লিন বিউটির ধারণায় কাজ করছে ব্র্যান্ডটি।
বলিউড সেলিব্রিটিদের বিউটি ব্র্যান্ড
ক্যাটরিনা কাইফ – কে বিউটি
২০১৯ সালে নাইকা-র সঙ্গে অংশীদার হয়ে ক্যাটরিনা চালু করেন ‘কে বিউটি’। ভারতীয় ত্বক ও গড়নের কথা মাথায় রেখে এই ব্র্যান্ডে রয়েছে বৈচিত্র্যময় মেকআপ পণ্য।
দীপিকা পাড়ুকোন – ৮২°ইস্ট
২০২২ সালে দীপিকা পাড়ুকোন শুরু করেন স্কিনকেয়ার ব্র্যান্ড ‘৮২°ইস্ট’। বিজ্ঞান ও আয়ুর্বেদিক উপাদানের মিশেলে তৈরি এই ব্র্যান্ড তুলে ধরছে আত্ম-উপচারণার বার্তা।
প্রিয়াঙ্কা চোপড়া – অ্যানোমালি
২০২১ সালে যুক্তরাষ্ট্রে চালু হয় প্রিয়াঙ্কার হেয়ার কেয়ার ব্র্যান্ড ‘অ্যানোমালি’। এটি ২০২৩ সালে ভারতেও প্রবেশ করে। নিরামিষভিত্তিক, টেকসই এবং সাশ্রয়ী মূল্যের এই ব্র্যান্ড সব ধরনের চুলের যত্নে কাজ করে।
শিল্পা শেঠি – মামা আর্থ (সহ-অংশীদার)
যদিও প্রতিষ্ঠাতা নন, তবু ‘মামা আর্থ’-এর সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত শিল্পা শেঠি। তিনি এই প্রাকৃতিক ও টক্সিন-মুক্ত বিউটি ব্র্যান্ডে বিনিয়োগ করেছেন এবং এর সক্রিয় প্রচারকও।
মাসাবা গুপ্তা – লাভচাইল্ড বাই মাসাবা
ফ্যাশন দুনিয়া থেকে বিউটিতে পা রাখেন মাসাবা গুপ্তা। তার ব্র্যান্ড ‘লাভচাইল্ড’ ত্বকসুলভ লিপস্টিক, স্কিন কেয়ার ও বডি কেয়ার পণ্যে ভারতীয় ব্রাউন স্কিনের সৌন্দর্যকে উদ্যাপন করে।
সেলিব্রিটিদের বিউটি দুনিয়ায় প্রবেশ আজ শুধুই ব্র্যান্ডিং নয়, বরং এটি হয়ে উঠেছে ব্যক্তিত্ব, গ্রহণযোগ্যতা এবং স্বপ্নকে বাস্তব করার মাধ্যম। আগামী দিনে সৌন্দর্যচর্চার দুনিয়ায় আরও অনেক নামী তারকার দেখা মিলবে, যাঁরা তাদের নিজস্ব ভাবনা ও প্রভাব দিয়ে গড়বেন আরও অনেক অনন্য বিউটি ব্র্যান্ড।
সেলিব্রিটিদের বিউটি ব্র্যান্ডগুলো আজ শুধু জনপ্রিয় নয়, বরং তারা বিশ্বব্যাপী বিউটি ইন্ডাস্ট্রির গতিপথ বদলে দিচ্ছে। তাদের হাতে গড়া এই ব্র্যান্ডগুলো শুধু রূপচর্চার পণ্যই নয়, বরং হয়ে উঠেছে আত্মবিশ্বাস, আত্মস্বীকৃতি ও বৈচিত্র্যকে তুলে ধরার শক্তিশালী মাধ্যম।
সূত্র:https://tinyurl.com/93c68ws3
আফরোজা
