ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ০১ জুন ২০২৫, ১৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

বিলুপ্তির পথে চড়ুইপাখি

মো. সাইফুল ইসলাম, কন্ট্রিবিউটিং রিপোর্টার, মধুপুর, টাঙ্গাইল

প্রকাশিত: ০১:২৪, ৩১ মে ২০২৫

বিলুপ্তির পথে চড়ুইপাখি

সূর্য অস্ত যাওয়ার আগে ঝাঁকে ঝাঁকে চড়ুইপাখিদের কিচিরমিচির শব্দ আগমনী বার্তা ছড়িয়ে দেয় চারপাশে, আর সেই পাখিদের কলতানে মুখরিত ছিল মধুপুরের প্রায় প্রতিটি গ্রাম্য এলাকা।

কিচিরমিচির শব্দে প্রতিদিন সকাল ও সন্ধ্যায় থমকে দাঁড়ায় পথিক, যা পাখিপ্রেমিদের হৃদয় ছুঁয়ে যাওয়ার এক বিরল দৃশ্য। ভোর হতেই আহারের সন্ধানে পাখিরা বেরিয়ে যায়, আর গোধূলি লগ্নে বিকেল হলেই তারা ফিরে আসে তাদের গন্তব্য অভয়ারণ্যের নীড়ে।

পাখিপ্রেমিক সাব্বির আহমেদ শরীফ জানান, “আমাদের বাড়ির টিনের চালে চড়ুইপাখিদের বাসা রয়েছে। পূর্বে অনেক পাখির দেখা মিললেও বর্তমানে খুবই অল্প সংখ্যক চড়ুইপাখি দেখতে পাওয়া যায়। ধীরে ধীরে চড়ুইপাখির সংখ্যা কমছে। আমি নিজেই তাদের দেখভাল করি এবং কেউ যেন তাদের বিরক্ত না করে, সে দিকেও খেয়াল রাখি।”

স্থানীয়রা জানান, বৃষ্টি পড়লে সবচেয়ে বেশি কষ্ট হয় চড়ুইপাখির জন্য। বর্তমানে চড়ুইপাখি বাসা বাঁধতে পারে না, কারণ তারা সবসময় কড়িকাঠ বা বড় বড় বাড়ির উঁচু কোনো ঘুলঘুলিতে বাসা বাঁধে। কিন্তু পুরনো ধরনের অট্টালিকা ভেঙে ফেলা হচ্ছে বা নতুন করে তৈরি করা হচ্ছে না, বরং বড় বড় কংক্রিটের দালান নির্মাণ হচ্ছে।

জানা গেছে, চড়ুইপাখি গাছের ডালে বসে ঘুমায় এবং ঝড়-বৃষ্টিতে গাছের ডালেই আশ্রয় নেয়। ফলে ঝড়বৃষ্টিতে মৃত্যুর ঝুঁকি ও বংশবৃদ্ধিতে বাধা সৃষ্টি হয়। তাই এদের আর সচরাচর ঝাঁকে ঝাঁকে দেখা যায় না।

চড়ুইপাখি পরিবেশবান্ধব ও কৃষকবান্ধব পাখি। এরা ক্ষতিকারক পোকামাকড় যেমন শুককীট, ল্যাদাপোকা ইত্যাদি খেয়ে ফসলের উপকার করে। এছাড়াও বিভিন্ন আগাছার দানা খেয়ে কৃষকের সহায়ক হয়। যদিও তারা সামান্য পরিমাণ শস্য দানা খায়।

মানুষের কাছাকাছি থাকা এই পাখিটি প্রতিকূল পরিবেশে দ্রুত খাপ খাইয়ে নিতে সক্ষম, তবে মানুষের কার্যকলাপের কারণে এখন বিলুপ্তির পথে যাচ্ছে চড়ুইপাখি।

 

রাজু

×