
ছবিঃ সংগৃহীত
একটু বৃষ্টি হলেই মিরাশী-রাজাকোনা সড়ক যেন রূপ নেয় চরম দুর্ভোগের প্রতীক কাদামাটিতে ঢেকে যায় পুরো পথ, সৃষ্টি হয় ছোট-বড় গর্ত আর জলাবদ্ধতা। মানুষ তো দূরের কথা, রিকশা-ভ্যান থেকে শুরু করে কোনো ধরনের যানবাহন চলাচলই সম্ভব হয় না।
অথচ এই সড়ক দিয়েই প্রতিদিন চলাচল করেন হাজারো মানুষ—সরকারি-বেসরকারি কর্মকর্তা, কৃষক, শ্রমিক, শিক্ষার্থীসহ নানা শ্রেণি-পেশার জনগণ।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে সড়কটির বেহাল দশা থাকলেও কোনো স্থায়ী সমাধান নেয়া হয়নি। প্রতিবার নির্বাচনের আগে জনপ্রতিনিধিরা—এমপি থেকে শুরু করে ইউনিয়ন চেয়ারম্যান ও মেম্বার পর্যন্ত—দেন উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি। বলেন, “নির্বাচন জিতলেই প্রথম কাজ হবে মিরাশী-রাজাকোনা রাস্তা পাকা করা।” কিন্তু নির্বাচন শেষ হলে সেই প্রতিশ্রুতি কোথায় হারিয়ে যায়, খোঁজ মেলে না।
রাস্তার পাশে থাকা বিস্তীর্ণ কৃষিজমির মালিকেরা জানান, রাস্তার করুণ অবস্থার কারণে তারা ঠিকমতো ফসল ঘরে তুলতে পারেন না। পাকা ধান জমিতে থেকে নষ্ট হয়ে যায়। এতে তাদের যেমন আর্থিক ক্ষতি হয়, তেমনি খাদ্য উৎপাদনেও পড়ছে বিরূপ প্রভাব।
স্থানীয় কৃষক আব্দুল জলিল বলেন, “এই রাস্তার কারণে আমাগো অনেক ক্ষতি হয়। ধান কাইড়া ঘরে নিতে পারি না, গাড়ি ঢোকে না, কাঁধে কাঁধে বইয়া নিই। অনেক সময় ধান মাঠেই পচে যায়।”
একইভাবে অফিসগামীদের ভোগান্তিও চরম। একজন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা জানান, “বর্ষা মৌসুমে বাড়ি থেকে অফিস যাওয়া মানে একপ্রকার যুদ্ধ। কাদামাটি লেগে পুরো জামা-কাপড় নোংরা হয়, অনেকে পড়ে গিয়ে আহতও হন।”
এলাকাবাসীর একটাই দাবি—দ্রুত এই সড়কটি সংস্কার করে চলাচলের উপযোগী করা হোক। তারা মনে করেন, উন্নয়ন হোক কাগজে নয়, বাস্তবে। আর জনপ্রতিনিধিদের উচিত প্রতিশ্রুতি নয়, কাজ দিয়ে মানুষের আস্থা অর্জন করা।
স্থানীয় সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তর ও প্রশাসনের কাছে প্রশ্ন, “আর কতকাল এভাবে অবহেলিত থাকবে মিরাশী-রাজাকোনা সড়ক?”
উন্নয়নের কথায় কথায় স্লোগান উঠলেও মিরাশী-রাজাকোনা সড়ক যেন সে স্লোগানের বাইরে রয়ে গেছে। ভোটের সময় প্রতিশ্রুতির ফুলঝুরি, আর ভোট শেষে চরম বাস্তবতা—এভাবেই বঞ্চিত হচ্ছেন হাজারো পথচারী ও কৃষক। উন্নয়নের দাবি আজ সময়ের দাবি নয়, এটি এখন মানুষের ন্যায্য অধিকার।
আলীম