ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ২৫ মে ২০২৫, ১১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

চিরকুট লিখে মেডিক্যাল ছাত্রের আত্মহত্যা

“নিজের সঙ্গে যুদ্ধ করে করে ক্লান্ত আমি : একটু বিশ্রাম চাই”

প্রকাশিত: ১৮:৪৬, ২৫ মে ২০২৫

“নিজের সঙ্গে যুদ্ধ করে করে ক্লান্ত আমি : একটু বিশ্রাম চাই”

ছবি : জনকণ্ঠ

অতিরিক্ত পড়াশোনার চাপে চিরকুটে ‘নিজের সঙ্গে যুদ্ধ করে করে ক্লান্ত আমি। একটু বিশ্রাম চাই। ক্ষমা করে দিও। এত ভালোবাসার প্রতিদান দিতে পারলাম না।’ লিখে আত্মহত্যা করেছেন বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজের ছাত্র সজীব বাড়ৈ। নিজেই শরীরে বিষাক্ত ইনজেকশন পুশ করে তিনি আত্মহত্যা করেছেন।

আজ রবিবার (২৫ মে) সকালে জেলার আগৈলঝাড়া উপজেলার বাকাল গ্রামের পারিবারিক শ্মশানে নিহত সজীবের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়েছে। এ সময় পুরো এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে।

সজীবের প্রতিবেশী সাংবাদিক ওমর আলী সানী বলেন, নিহত সজীব ছিলেন বাকাল গ্রামের বাসিন্দা, দুরারোগ্যব্যাধিতে (ব্রেন টিউমার) আক্রান্ত সুধীর বাড়ৈর ছেলে। সজীবের বাবা ছিলেন আগৈলঝাড়া উপজেলা সদরের সাথী টেইলার্সের মালিক।

দীর্ঘদিন পূর্বে তিনি ব্রেন টিউমারসহ বিভিন্ন দুরারোগ্যব্যাধিতে আক্রান্ত হয়ে কর্মক্ষম হয়ে পড়েন। পরিবারের বড় সন্তান ছিলেন সজীব। এলাকার বিত্তশালীদের সহযোগিতায় চলছিল সজীবের পড়াশোনা।

নিহত সজীবের রুমমেট সুমন হালদার বলেন, পড়াশোনার অতিরিক্ত চাপ সামলাতে না পেরে নিজেই শরীরে ইনজেকশন পুশ করে আত্মহত্যা করেছে মেডিক্যাল ছাত্র সজীব বাড়ৈ। পড়াশোনার অতিরিক্ত চাপ সামলাতে না পেরে সজীব প্রায়ই অসুস্থ হয়ে পড়তেন। সে তৃতীয় বর্ষের মাইক্রোবায়োলজিতে আটকে ছিল। তার সঙ্গের শিক্ষার্থীরা সবাই এমবিবিএস পাস করে ইন্টার্নশিপ করছে।

ক্লাস, এক্সামে সজীব খুবই ভয় পেত। সে কারণে গত ২২ মে দিবাগত রাতে সজীব ক্লোনাজেপাম ও ফ্লুক্সেটিন গুঁড়া করে শিরায় পুশ করে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। সহপাঠীরা বিষয়টি টের পেয়ে তাকে প্রথমে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন।

সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকার একটি হাসপাতালে ভর্তি করার পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার (২৪ মে) বিকেলে সজীব বাড়ৈ মৃত্যুবরণ করেন।

সুমন হালদার আরও জানান, সজীব বাড়ৈ বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজের ৫০তম ব্যাচের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র ছিল। মারা যাওয়ার আগে সজীব একটি চিরকুটে লিখে গেছেন, ‘নিজের সঙ্গে যুদ্ধ করে করে ক্লান্ত আমি। একটু বিশ্রাম চাই। ক্ষমা করে দিও। এত ভালোবাসার প্রতিদান দিতে পারলাম না।’

আজ রবিবার (২৫ মে) দুপুরে কলেজের অধ্যক্ষ ফয়জুল বাশার জানান, মানসিকভাবে বিধ্বস্ত হয়ে সজীব কিছুদিন আগে শরীরে ইনজেকশন পুশ করে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। তাকে হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসা দেওয়া হয়। অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় মুমূর্ষু অবস্থায় সজীব বাড়ৈকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছিল।

সা/ই

×