
বাগেরহাটের আকাশে বিরল প্রাকৃতিক দৃশ্য ‘ইরিডিসেন্ট ক্লাউড’ বা রামধনু মেঘ দেখা গেছে। বিকেল সাড়ে ৫ টার দিকে জেলা শহরের পশ্চিম আকাশে এ মনোমুগ্ধকর দৃশ্যটি দেখা যায়।
কালো মেঘের উপরের অংশে হালকা গোলাপি, সবুজ, কমলা, বেগুনি ও সোনালি রঙের ঝলমলে আভা প্রায় ১৫ মিনিট ধরে আকাশে দৃশ্যমান ছিল। এরপর রঙের আভা হালকা হয়ে গেলেও কিছুক্ষণ পর্যন্ত তা দেখা গেছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ইরিডিসেন্ট ক্লাউড এক ধরনের অপটিক্যাল (আলোক-সংক্রান্ত) মেঘীয় ঘটনা। সাধারণত উচ্চ স্তরের স্ট্রাটোকিউমুলাস বা সিরাস মেঘে এটি দেখা যায়। সূর্যের আলো যখন মেঘের ভেতরের ক্ষুদ্র ও অভিন্ন জলকণার মধ্য দিয়ে প্রতিফলিত ও প্রতিসরিত হয়, তখন রংধনুর মতো এই মেঘের সৃষ্টি হয়। এটি ‘ক্লাউড ইরিডিসেন্স’ নামেও পরিচিত।
বাগেরহাট শহরের মুনিগঞ্জ এলাকার আল আমীন বলেন, প্রথমে মনে হচ্ছিল কেউ কৃত্রিম আলো ফেলেছে। পরে বুঝি এটি প্রকৃতিরই সৃষ্টি। জীবনে এই প্রথমবার এমন রঙিন মেঘ দেখলাম।
কলেজ শিক্ষিকা নার্গিস আক্তার লুনা উচ্ছাস প্রকাশ করে বলেন, জীবনে এই প্রথম দেখলাম। সত্যি অসাধারণ।
আবহাওয়াবিদদের মতে, ইরিডিসেন্ট ক্লাউড সাধারণত হিমালয় অঞ্চল বা উপসাগরীয় এলাকায় দেখা যায়। এটি খুবই বিরল এবং স্বল্প সময়ের জন্য দৃশ্যমান হয়। বাংলাদেশে এ ধরনের ঘটনা খুব বেশি দেখা না গেলেও, উপকূলীয় অঞ্চলে গ্রীষ্মকালীন সন্ধ্যায় আবহাওয়ার পরিবর্তনের সময় এটি ঘটতে পারে।
বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের অবসরপ্রাপ্ত সহকারী আবহাওয়াবিদ মো. আমিরুল আজাদ বলেন, এটি মূলত এক ধরনের মেঘ, বৈজ্ঞানিক ভাষায় যাকে কোটরা (COTRA) বলা হয়। বাংলাদেশের আকাশে সচরাচর দেখা যায় না। তবে বৈশাখের শেষ থেকে জ্যৈষ্ঠ মাস পর্যন্ত মাঝে মধ্যে এ ধরনের দৃশ্য দেখা যেতে পারে। সাধারণত বৃষ্টি থেমে যাওয়ার পর, সূর্যাস্তের ঠিক আগ মুহূর্তে এটি দেখা যায়।
রাজু