ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ২৫ মে ২০২৫, ১০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

ঈশ্বরদী রেলগেট ব্রীজের নিচে আন্ডারপাস নির্মাণ সময়ের দাবি, জনদূর্ভোগ চরমে !

প্রকাশিত: ২০:১১, ২৪ মে ২০২৫; আপডেট: ২০:১২, ২৪ মে ২০২৫

ঈশ্বরদী রেলগেট ব্রীজের নিচে আন্ডারপাস নির্মাণ সময়ের দাবি, জনদূর্ভোগ চরমে !

চীনের হোয়াংহো নদীর সাথে তুলনাকারী ঈশ্বরদী রেলগেট এর নিকটস্থ 210 নং ব্রীজের নীচ দিয়ে আন্ডারপাস নির্মাণ করা জরুরি হয়ে পড়েছে। প্রায় এক’শ বছর আগ থেকেই রেলগেটটি ঈশ্বরদী শহরকে পূর্ব ও পশ্চিম দু’ভাগে বিভক্ত করে রেখেছে। এতে করে ঈশ্বরদীতে বসবাসকারী প্রায় পাঁচ লাখ মানুষকে প্রতিদিন অন্ততঃ 35 বার ভোগান্তির শিকার হতে হয়। প্রতিবার ট্রেন চলাচলের কারণে 30 মিনিট করে রেলগেটের দু’পাড়ে দুরপাল্লার বাস, ট্রাকসহ বিভিন্ন প্রকার যানবাহনকে অসংখ্য যাত্রী ও মালামাল নিয়ে ভোগান্তিতে পড়তে হয়। একইভাবে রেলগেটের উভয় পাড়ের বিভিন্ন পেশাজীবি অসংখ্য স্থানীয় মানুষ ও রোগীবাহী এ্যাম্বুলেন্সকে আটকে থাকতে হয়। রেলগেটে আটকে থেকে অনেক রোগীকে মৃত্যু বরাণও করতে হয়েছে। শুধু তাইনা, এই রেলগেট দিয়ে খুলনা,যশোর এবং চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও বাঘা রাজশাহী অঞ্চলের যাত্রীবাহী বাস ও মালবাহী ট্রাককে আটকে থাকতে হয়। এতে করে প্রতিদিন মানুষের শ্রমঘন্টা নষ্ট হয়ে আর্থিক ক্ষতিরও শিকার হতে হচ্ছে। এই জনভোগান্তি থেকে রক্ষার জন্য প্রায় সাত বছর আগে দৈনিক জনকন্ঠসহ স্থানীয় বিজয়দীপ্ত পত্রিকায় নানাভাবে রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়। একই কারণে রেলওয়ের তৎকালিন পাকশীর ডিআরএম এবং বর্তমান ডিজি আফজাল হোসেনসহ উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের  সহযোগিতা চাওয়া হয়। কর্মকর্তাদের আন্তরিকতা থাকলে ও সে সময় 210 নং ব্রীজের নীচে টানেল তৈরীর বিষয়টি মুখ থুবড়ে পড়ে থাকে। অবশেষে 2024 সালের মে মাসের দিকে ঈশ্বরদী রেলগেটের প্রতিদিনের জনভোগান্তির বিষয়টি দেশপ্রেমী ও দায়িত্বশীল কর্মকর্তা বলে পরিচিত পাকশী রেলওয়ে বিভাগীয় প্রকৌশলী দুই বীরবল মন্ডলের নজরে আসে। তখন থেকে তিনি জনভোগান্তি লাঘবে ব্রীজের নীচে টানেল তৈরীর চেষ্টা অব্যাহতভাবে চালিয়ে যাচ্ছেন। সর্বশেষ তিনি পাকশী বিভাগীয় রেলওয়ে ব্যবস্থাপকের নিকট টানেল তৈরীর অনুমতি চেয়ে আবেদন করেছেন। এর আগে তিনি পাকশী বিভাগীয় রেলওয়ে ব্যবস্থাপক লিয়াকত শরীফ খানকে সরেজমিন ব্রীজটি পরিদর্শন করান। পাকশী বিভাগীয় রেলওয়ে ব্যবস্থাপকের নিকট 210 নং ব্রীজের নীচে টানেল তৈরীর  অনুমতি চেয়ে আবেদন পত্রে লিখেছেন, 

ঈশ্বরদী জংশন স্টেশনটি বাংলাদেশ রেলওয়ে সবচেয়ে বড় জংশন স্টেশন। এই জংশন স্টেশন হতেই প্রতিদিন শুধু খুলনা অভিমুখে ০৯ জোড়া ট্রেন চলাচল করে থাকে। এছাড়াও অন্যান্য মালবাহী ট্রেনও চলাচল করে থাকে।
ঈশ্বরদীর এই স্টেশন সংলগ্ন রেলগেট দিয়েই বাঘা, রাজশাহী, পাবনা, ঢাকা ও অন্যান্য অঞ্চলে চলাচলের একমাত্র পথ। কিন্তু এই রেলগেট এর উপর দিয়ে ০৯ জোড়াসহ অন্যান্য ট্রেন চলাচল করায় প্রতিবার ট্রেন অতিক্রমকালে ন্যূনতম ৩০ মিনিট রেলগেট বন্ধ থাকে। এর ফলে প্রতি ট্রেন অতিক্রম করলে মারাত্মক যানজট সৃষ্টিসহ জনমানবের দুর্ভোগ পোহাতে হয়। তাই এই স্থানে একটি আন্ডারপাস নির্মাণ প্রয়োজন। জানা যায় ঈশ্বরদী রেলগেট সংলগ্ন কিঃমিঃ ২০৪/১-২ তে অবস্থিত ব্রীজ নং ২১০ এর নিচ দিয়ে পূর্বে আন্ডারপাস নির্মাণ করা হয়েছিল। যা দিয়ে ছোট যানবাহন তথা রিক্সা/ভ্যান, অটো-রিক্সা, মটর সাইকেল, সাইকেল ইত্যাদি চলাচল করা যায়। কালের বিবর্তনে উক্ত আন্ডারপাসটি বন্ধ রয়েছে। যদি এই আন্ডারপাসটি পুনরায় সচল/মেরামত করে চালু করা যায় তাহলে ঈশ্বরদী রেলগেটে প্রতি ট্রেন অতিক্রমকালে সৃষ্ট জান-জট হতে এই অঞ্চলের মানুষ রক্ষা পাবে। তাই ঈশ্বরদী রেলগেট সংলগ্ন কিঃমিঃ ২০৪/১-২ তে অবস্থিত ব্রীজ নং ২১০ এর নিচ দিয়ে আন্ডারপাস নির্মাণ/সচল করা প্রয়োজন।

সায়মা

×