
ছবি: দৈনিক জনকণ্ঠ
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার মানিকপুর ইউনিয়নের মায়রামপুর গ্রামের সুজন আহমেদ (২২) বিদ্যুতের নতুন খুঁটিতে খোলা তারে হাত দিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে দুই হাত হারিয়েছেন। দুর্ঘটনার পর তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল (ঢামেক) হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ৩ মাস চিকিৎসা করা হয়েছিল। বর্তমানে তিনি পঙ্গুত্ববরণ করে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। নিজের পায়ে দাঁড়াতে এবং নতুন করে জীবন শুরু করতে কৃত্রিম হাত ও কর্মসংস্থানের জন্য সহযোগিতা চেয়েছেন তিনি।
এলাকাবাসী ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ২০১৭ সালের (শনিবার ৩ জুন) উপজেলার মায়রামপুর গ্রামের ওপর দিয়ে যাওয়া বিদ্যুতের নতুন খুঁটিতে খোলা তারে হাত দিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন। তার আগের দিন সুজনের বন্ধুরা নতুন খুঁটিতে উঠে খোলা তারে হাত দিয়েছিল বিদ্যুৎ সঞ্চালন বন্ধ থাকায় কিছুই হয়নি তাদের। তবে নতুন খুঁটিতে বিদ্যুৎ সঞ্চালন বন্ধ থাকার কথা থাকলেও আকস্মিক বিদ্যুৎ চালু হয়ে যায়। এতে সুজন খুঁটি থেকে পড়ে গুরুতর আহত হন। তার দুই হাত কেটে ফেলতে হয়, পা এবং শরীরের অন্যান্য অংশেও ক্ষত হয়।
‘সুজনের পিতা গিয়াস উদ্দিন জানান, ‘সারাদিন চা বিক্রি করে যে টাকা আয় হয় তা দিয়ে কোন রকম সংসার চালাই। ৪ ছেলে এক মেয়েসহ আমরা ৬জন পরিবারের সদস্য। তার মধ্যে সুজন আমার বড় ছেলে। সে এখন কোনো কাজ করতে পারেন না। একা খেতে পারেন না, গোসল করতেও অন্যের সাহায্য লাগে। ছোট শিশুর মতো তার দেখভাল করতে হয়।
’সুজনের প্রতিবেশীরা জানান, পরিবারটি অত্যন্ত দরিদ্র, চিকিৎসা বা কৃত্রিম হাতের ব্যবস্থা করা তাদের পক্ষে সম্ভব নয়।
‘কান্নাজড়িত কণ্ঠে সুজন বলেন, ‘দুই হাত হারিয়ে সব স্বপ্ন ভেঙে গেছে। কাজ করতে পারি না, নিজের কোনো চাহিদা পূরণ করতে পারি না। কৃত্রিম হাত পেলে নতুন করে জীবন শুরু করতে পারতাম।
’উপজেলা সমাজসেবা অফিসার মোঃ জালাল উদ্দিন বলেন, ‘ভিডিওটা দেখলাম। বিষয়টা নিয়ে ইউএনওর সঙ্গে কথা বলতে হবে। (রবিবার) অফিস খুললে সুজন ও তার বাবাকে আসতে বলেন। তবে, সুজন প্রতিবন্ধী ভাতা পায় বলে জেনেছি।’
ফারুক