ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২২ মে ২০২৫, ৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

আধুনিকতার ছোঁয়ায় বিলুপ্তির পথে বেত শিল্প

মো.আমজাদ হোসেন, কন্ট্রিবিউটিং রিপোর্টার,নবীনগর,ব্রাহ্মণবাড়িয়া

প্রকাশিত: ২২:০৫, ২১ মে ২০২৫

আধুনিকতার ছোঁয়ায় বিলুপ্তির পথে বেত শিল্প

জনকণ্ঠ

ব্রাহ্মণবাড়িয়া নবীনগরে ঐতিহ্যবাহী বেত শিল্প এখন বিলুপ্তির পথে। এক সময় গ্রাম-গঞ্জে পাড়া মহল্লায় দেখা মিললেও এখন আর চোখে পড়ে না বেতের কারুকার্য।  বেতের বিভিন্ন কিছু তৈরি করে  বহু পরিবার জীবিকা নির্বাহ করলেও আধুনিকতার ছোঁয়ায় প্লাস্টিকের প্রসারে এ  পেশা আজ হুমকির মুখে।

উপজেলার শিবপুর গ্রামের আয়নাল হক বলেন- আগে  বাঁশর তৈরি আনতা (মাছ ধরার যন্ত্র), চাই , পাথি(ঝুড়ি) , ডোলা বিক্রি করে সংসার চলত। এখন বাঁশের দাম ও বেশি বাজারে বাঁশের তৈরি জিনিসপত্রের চাহিদা ও তেমন নেই। এখনকার যুগে কেউ আর বেতের জিনিস কিনতে চাই না প্লাস্টিকের জিনিসে উপর নির্ভর করে।

তাই অনেক কষ্টে দিন কাটে পরিবার নিয়ে। শ্রীঘর গ্রামের আব্দুর রশিদ, শাহবাজপুর গ্রামের দুলাল মিয়া , বড়িকান্দির সোনা মিয়া, জুলাইপাড়া গ্রামের আব্দুস সামাদ এদের মতো বহু কারিগরই এখন দুর্বিষহ জীবনযাপন পার করছেন। এক সময় তাঁরা বাঁশ ও বেত দিয়ে নান্দনিক সামগ্রী তৈরি করে জীবিকা নির্বাহ করতো। কাঁচামালের দাম বেড়ে যাওয়ায়, তৈরিকৃত মাল বিক্রি করে লাভ না হওয়ায় তারা পরিবার নিয়ে সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হয়। অনেকেই এই পেশা ছেড়ে অন্য পেশায় বেছে নিয়ে জীবিকা নির্বাহ করে।

 আব্দুর রশিদ আক্ষেপ করে বলেন - "আগে বাপ-দাদার এই  পেশায় কাজ করে ভালো ভাবে সংসার চলতো ছেলে- মেয়েদের লেখাপড়া করাতাম কিন্তু এখন বাপ-দাদার এ পেশা ছেড়ে দিতে হবে ভাবিনি। এখন আর সংসার চলে না।" দুলাল মিয়া জানান -"কাজ জানি, মন চায় কাজ চালিয়ে যেতে, কিন্তু ক্রেতা নেই, পরিশ্রম করে লাভ পাই না । "সরকারি সহায়তা না পেলে এই শিল্প হয়তো খুব শিগগিরই হারিয়ে যাবে, কারিগররা অন্য কাজ বেছে নিতে বাধ্য হবেন। ঐতিহ্য রক্ষায় প্রয়োজন সরকারি উদ্যোগ  যাতে এই শিল্প আবারও নতুন করে প্রাণ ফিরে পেতে পারে। বাংলাদেশে এক সময় ছিল যখন গ্রামের আনাচে কানাচে প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষের অন্যতম আয়। ঐতিহ্যবাহী বাঁশ ও বেত শিল্প এখন প্রায় বিলুপ্তির পথে।

সাব্বির

×