ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২২ মে ২০২৫, ৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

নারী যাত্রীদের শ্লীলতাহানি, যমুনা সেতু মহাসড়কে বাস ডাকাতি

নিজস্ব সংবাদদাতা, টাঙ্গাইল

প্রকাশিত: ১৭:৪৩, ২১ মে ২০২৫

নারী যাত্রীদের শ্লীলতাহানি, যমুনা সেতু মহাসড়কে বাস ডাকাতি

ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা-টাঙ্গাইল-যমুনা সেতু মহাসড়কে আবার বাস ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১১টা থেকে বুধবার ভোর ৫টা পর্যন্ত একটি যাত্রীবাহী বাসের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ডাকাত দল যাত্রীদের সবকিছু লুটে নেয়। লুটপাটের সময় নারী যাত্রীদের শ্লীলতাহানি ঘটে।

বাসের চালক, সুপারভাইজার ও যাত্রীদের সঙ্গে আলাপ করে জানা যায়, মঙ্গলবার রাত ৮টার দিকে ঢাকার আব্দুল্লাহপুর থেকে আল ইমরান পরিবহনের একটি বাস রংপুরের উদ্দেশে যাত্রা করে। বাসের সহকারী আতিকুর রহমান জানান, পথে সাভারের নরসিংহপুর, বাইপাইল, আশুলিয়া থেকে কিছু যাত্রী উঠে। প্রায় ১০ জন নারীসহ ৪৫ জন যাত্রী নিয়ে বাসটি রাত সাড়ে ১১টার দিকে টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার এলেঙ্গা অতিক্রম করে।

যমুনা সেতুর পূর্বপ্রান্তের সংযোগ সড়কে কয়েক কিলোমিটার যাওয়ার পর যাত্রীবেশী ৮-১০ জন ডাকাত ছুরি, চাপাতিসহ দেশীয় অস্ত্রের মুখে চালকের কাছ থেকে বাসটির নিয়ন্ত্রণ নেয়। পরে তারা যাত্রীদের ও চালকসহ সবার চোখ-মুখ বেঁধে ফেলে। যমুনা সেতুর পূর্বপ্রান্তের গোলচত্তর এলাকায় গিয়ে বাসটি ঘুরিয়ে আবার ঢাকার দিকে চলতে থাকে। চলাচলের সময় প্রত্যেক যাত্রীকে তল্লাশি করে মুঠোফোন, নগদ টাকা, সোনার গয়না ও অন্যান্য মালামাল লুটে নেয়। ডাকাতরা বাসটি নিয়ে সাভারের চন্দ্রা-আশুলিয়া পর্যন্ত যায়। পরে রাতভর কয়েকবার বাসটি নিয়ে ওই এলাকা থেকে টাঙ্গাইল পর্যন্ত চক্কর দেয়।

বাসের চালক আবেদ আলী জানান, সারা রাত বাসটি নিয়ে ডাকাতরা ৪-৫ বার টাঙ্গাইল ও চন্দ্রা-আশুলিয়া এলাকায় যাওয়া-আসা করে। পরে ভোর সাড়ে ৫টার দিকে টাঙ্গাইল শহর বাইপাস সড়কের শিবপুর এলাকায় বাসটি রেখে ডাকাতদল পালিয়ে যায়। পরে বাসের যাত্রীরা সকালবেলায় টাঙ্গাইল সদর থানায় যান। সেখানে দেখা যায়, পুলিশ সুপার মিজানুর রহমানসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বাসের স্টাফ ও যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলছেন।

বাসের যাত্রী বগুড়ার আদমদীঘির জুয়েল মিয়া জানান, টাকা-পয়সা ছিনিয়ে নেওয়ার সময় নারী যাত্রীদের তল্লাশির অজুহাতে শ্লীলতাহানি করা হয়। তার চোখমুখ বাঁধা ছিল, তবে নারী যাত্রীদের কান্না ও কাকুতি শুনতে পান। অন্য এক যাত্রী রংপুরের কাউনিয়ার আকাশ মিয়া জানান, ডাকাতরা হাত-পা, চোখ-মুখ বেঁধে প্রত্যেক যাত্রীর শরীর কয়েকবার করে তল্লাশি করে। যার যা ছিল, সবই লুটে নেয়।

টাঙ্গাইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তানবীর আহমদ বলেন, মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে। ডাকাত দলকে চিহ্নিত করতে পুলিশ কাজ শুরু করেছে।

প্রসঙ্গত, এর আগে গত ১৭ ফেব্রুয়ারি একই মহাসড়কে ইউনিক রয়েলস পরিবহনের একটি বাসে ডাকাতি ও নারী যাত্রীদের শ্লীলতাহানির ঘটনা ঘটে। ২০২২ সালের ২ আগস্ট একই কায়দায় কুষ্টিয়াগামী একটি বাসে ডাকাতি ও নারী যাত্রীকে ধর্ষণের ঘটনাও ঘটেছিল।
 

শহীদ

×