ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২০ মে ২০২৫, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়ার কথা বলে ৮৬ হাজার টাকা আত্মসাৎ

নিজস্ব সংবাদদাতা, আমতলী, বরগুনা

প্রকাশিত: ২১:৪৫, ১৯ মে ২০২৫

মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়ার কথা বলে ৮৬ হাজার টাকা আত্মসাৎ

নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের এক আসামিকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে নিজেকে পেশকার পরিচয় দিয়ে মো. মোশারফ বিশ্বাস নামে এক ব্যক্তি ৮৬ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। আসামির মা খাদিজা বেগম বিষয়টি বরগুনা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারকের নজরে আনেন। বিচারক লায়লাতুল ফেরদৌস বিষয়টি শুনে অভিযুক্ত ভুয়া পেশকারকে পুলিশে সোপর্দ করেন।

ঘটনাটি ঘটেছে রবিবার দুপুরে বরগুনা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে। পরদিন সোমবার পুলিশ মোশারফ বিশ্বাসকে প্রতারণা মামলায় বরগুনা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করে।

জানা গেছে, আমতলী পৌর শহরের খোন্তাকাটা এলাকার বাসিন্দা খাদিজা বেগমের নাবালক ছেলের বিরুদ্ধে ২০১৭ সালে প্রতিবেশী নুরু মিয়া তার শিশু কন্যাকে উত্ত্যক্তের অভিযোগে আমতলী থানায় মামলা করেন। মামলাটি (নম্বর ৩৫৭/১৭) বর্তমানে বরগুনা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালতে বিচারাধীন।
এ মামলায় অব্যাহতি দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে মো. মোশারফ বিশ্বাস ও তার আত্মীয় রফিক বিশ্বাস খাদিজার কাছ থেকে ৮৬ হাজার টাকা নেন। কিন্তু ছেলের মামলার কোনো অগ্রগতি না হওয়ায় খাদিজার সন্দেহ হয়।

রবিবার মামলার নির্ধারিত তারিখে খাদিজা আদালতে গিয়ে বিষয়টি বিচারকের কাছে প্রকাশ করেন। এরপর বিচারক লায়লাতুল ফেরদৌস মোশারফ বিশ্বাসকে ডেকে পুলিশের হাতে তুলে দেন। তার বিরুদ্ধে বরগুনা থানায় প্রতারণার অভিযোগে মামলা হয় এবং সোমবার তাকে আদালতে পাঠানো হয়।

প্রতারক মো. মোশারফ বিশ্বাস পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়া উপজেলার চাকামইয়া গ্রামের বাসিন্দা। তার পিতার নাম মো. মোসলেম বিশ্বাস। বর্তমানে তিনি আমতলী পৌর শহরের একে স্কুল এলাকায় বসবাস করছেন।

ভুক্তভোগী খাদিজা বেগম বলেন, “আমি একজন হতদরিদ্র নারী। মানুষের বাড়িতে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করি। আমার ছেলেকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। মোশারফ বিশ্বাস ও তার ভাই রফিক বিশ্বাস পেশকার সেজে আমার কাছ থেকে ৮৬ হাজার টাকা নিয়েছে। কিন্তু এতদিনেও আমার ছেলে মামলা থেকে অব্যাহতি পাচ্ছে না—এতেই সন্দেহ হয়। পরে বিষয়টি আমি বিচারককে জানাই।”

রফিক বিশ্বাস বলেন, “মোশারফ আমার চাচাতো ভাই। তিনি আমাকে বলেছিলেন, তিনি ঢাকার একটি আদালতে পেশকার। একদিন তিনি আমাকে নিয়ে খাজিদার কাছ থেকে টাকা আনেন। আমি তখনও বুঝতে পারিনি, তিনি একজন প্রতারক।”

বরগুনা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিশেষ পিপি রনজুয়ারা শিপু বলেন, “মোশারফ বিশ্বাস একটি প্রতারক চক্রের সদস্য। তারা মানুষের দুর্বলতা ও ভয়ভীতি কাজে লাগিয়ে টাকা হাতিয়ে নেয়। এদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত।”

বরগুনা থানার ওসি দেওয়ান জগলুল হাসান বলেন, “ভুয়া পেশকার পরিচয়ে প্রতারণার অভিযোগে মোশারফ বিশ্বাসের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। তাকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।”

শিলা ইসলাম

×