ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ০৭ মে ২০২৫, ২৩ বৈশাখ ১৪৩২

পানির মূল্য পুননির্ধারণে পৌরবাসীর অসন্তুষ্টি

মনোয়ার হোসেন লিটন, কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ২২:৫৭, ৬ মে ২০২৫

পানির মূল্য পুননির্ধারণে পৌরবাসীর অসন্তুষ্টি

ছবিঃ সংগৃহীত

কুড়িগ্রাম পৌরসভার নাগরিকদের জন্য সরবরাকৃত পানির বিল পুননির্ধারণে ডাকা মতবিনিময় সভায় সরবরাহ ও সেবার মান নিয়ে অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন উপস্থিত পৌরবাসী। তবে প্রথমবারের মতো এমন মতবিনিময় সভার আয়োজন করায় কর্তৃপক্ষকে সাধুবাদও জানায় অংশীজনরা।

মঙ্গলবার (৬ মে) বিকালে কুড়িগ্রাম পৌরভবনে এই মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় পানির মান, সরবরাহ লাইনের ত্রুটি এবং বিল নির্ধারণে বৈষম্য সহ বিভিন্ন সমস্যার কথা তুলে ধরে আগে সেবার মান ঠিক করার দাবি জানান উপস্থিত সেবাগ্রহীতারা।

পৌরসভার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হোসাইন মোহাম্মদ হাই জকীর সভাপতিত্বে সভায় পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী আতিকুর রহমান ও পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা শামীমা আক্তার সহ পৌরসভার বিভিন্ন ওয়ার্ডের বাসিন্দারা উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও পৌর এলাকায় বসবাসকারী জেলা বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, এনসিপি ও বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নেতাকর্মীরাও উপস্থিত ছিলেন।

পৌরসভা কর্তৃক নাগরিকদের জন্য সরবরাহকৃত পানির বিল পুননির্ধারণে মতবিনিময় সভায় আয়োজন করা হলেও উপস্থিত পৌরবাসী পানি সরবরাহের মান নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। গ্রাহকদের অসন্তুষ্টিতে বিল পুননির্ধাণের বিষয়টি প্রধান আলোচ্য বিষয় থেকে সরে যায়। সকলে পানির মান, সরবরাহ লাইনের জীর্ণ দশা এবং পানির চাপের স্বল্পতা নিয়ে অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেন। কর্তৃপক্ষকে আগে সেবার মান ঠিক করে তারপর বিল পুননির্ধারণের পরামর্শ দেন।

পৌরএলাকার বাসিন্দা ছুটু বলেন, ‘পানির বিল পুননির্ধারণের আগে সেবা সপ্তাহ আয়োজন করা যেতে পারে। ব্যাপক প্রচারণার মাধ্যমে পানি নিয়ে পৌরবাসীর সমস্যা এবং সমাধানকল্পে পরামর্শ নেওয়া যেতে পারে। এতে করে সেবার মান উন্নত করে পৌরবাসীর মন জয় করা সহজ হবে।’

স্কুল শিক্ষক আসাদুজ্জামান বলেন, ‘পানির লাইনে সমস্যা। প্রায়ই ময়লা ও দুর্গন্ধযুক্ত পানি সরবরাহ করা হয়। বিলের পরিমাণ বাড়ার আগে সেবার মান নিশ্চিত করতে হবে। তখন বিল বাড়ালেও গ্রাহকরা অসন্তুষ্ট হবেন না।’

একই মত ব্যক্ত করেন জেলা জামায়াতের আমিন মাওলানা নিজাম উদ্দিন, বিএনপি নেতা আশরাফুল হক রুবেল ও এনসিপি নেতা রাশেদুজ্জামান তাওহীদ। তারা একই সাথে গ্রাহক পরিবারগুলোতে পানি ব্যবহারকারী সদস্য সংখ্যার ওপর ভিত্তি করে বিল নির্ধারণের পরামর্শ দেন।

সভায় পৌর কর্তৃপক্ষ জানায়, কুড়িগ্রাম পৌরসভার ২ হাজার ৭১৮ জন পানির গ্রাহক রয়েছেন। এতে প্রতিমাসে ৪ লক্ষ টাকা বিদ্যুৎ বিল সহ প্রায় ৬ লাখ ৬৯ হাজার টাকা ব্যয় হয়। কিন্তু আয় হয় মাত্র ৩ লাখ ৭৯ হাজার টাকা। এ অবস্থায় পানির বিল পুননির্ধারণ করা প্রয়োজন।

পৌরসভার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হোসাইন মোহাম্মদ হাই জকী বলেন, ‘পৌরসভার পানি উত্তোলন ও সরবরাহ ব্যায়ের সাথে আদায়কৃত বিলের পরিমাণে ব্যাপক ব্যবধান। ফলে প্রতি মাসে লোকসান গুনতে হয়। বিদ্যুৎ বিলের টাকাই আদায় হয় না। এ অবস্থায় পানির বিল পুননির্ধারণ করে সমন্বয় করা প্রয়োজন। সেবার মানও উন্নত করা হবে। তবে এ জন্য কিছুটা সময় প্রয়োজন। এই পৌরসভা আপনাদের। আপনাদের সহযোগিতা নিয়ে আমরা নাগরিক সেবার মান পর্যায়ক্রমে উন্নত করতে বদ্ধপরিকর।’

ইমরান

×