ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ০৭ মে ২০২৫, ২৩ বৈশাখ ১৪৩২

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে হলের ডাব পাড়ায় পাঁচ শিক্ষার্থীকে শোকজ  

রাবি সংবাদদাতা

প্রকাশিত: ২১:১৬, ৬ মে ২০২৫

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে হলের ডাব পাড়ায় পাঁচ শিক্ষার্থীকে শোকজ  

ছবি: জনকণ্ঠ

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে শেরে বাংলা ফজলুল হক হলের ৫ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে বহিরাগতদের নিয়ে হলের শতাধিক ডাব পাড়ার অভিযোগ এসেছে। বিষয়টিকে হলের ‘শৃঙ্খলা পরিপন্থি’ কাজ উল্লেখ করে হলে টানানো নোটিশ বোর্ডে প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক মুহাম্মদ শরীফুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে ৫ আবাসিক শিক্ষার্থীর কাছে আগামী বৃহস্পতিবারের (৮ মে) মধ্যে লিখিত জবাব চাওয়া হয়েছে।

অভিযুক্ত শিক্ষার্থীরা হলেন, হলের ১৩৬ নম্বর কক্ষের তিন আবাসিক শিক্ষার্থী ব্যাংকিং ও ইন্সুইরেন্স বিভাগের মাস্টার্সের সুমন মিয়া, বাংলা বিভাগের ৩য় বর্ষের শিক্ষার্থী রাকিব মোল্লা, উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের ২য় বর্ষের শিক্ষার্থী মো. সিয়াম, ১৩৯ নম্বর কক্ষের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের শিক্ষার্থী ইয়াসির আরাফাত উৎস এবং ৩২৮ নম্বর কক্ষের উর্দু বিভাগের শিক্ষার্থী মোহা. সবুর আলী। তবে বহিরাগতদের নাম-পরিচয় জানা যায়নি।

এ বিষয়ে শেরে বাংলা ফজলুল হক হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক মুহাম্মদ শরীফুল ইসলাম জানান, আমি দায়িত্বে এসে হলের ফলজ গাছসমূহ পরিচর্যা ও তদারকির জন্য আবাসিক ছাত্র-শিক্ষক ও কর্মচারীদের সমন্বয়ে একটি তদারকি কমিটি গঠন করি। পরে হলের গাছগুলোর পরিচর্যার জন্য হল প্রশাসন থেকে মোটা অঙ্কের ব্যয় বহন করা হয়। কিন্তু হঠাৎ একদিন আমরা লক্ষ্য করি হলের নারিকেল গাছগুলোতে ডাব নেই। পরে আমরা সিসি ক্যামেরার ফুটেজ থেকে হলের পাঁচ শিক্ষার্থীকে শনাক্ত করি। তাদের সঙ্গে বহিরাগত দুইজনও জড়িত ছিল। আমরা জানতে পেরেছি তাদের মধ্যে একজন পূর্বেও হলে এমন ঘটনার সঙ্গে যুক্ত ছিল।

বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, হলের সিসিটিভি ফুটেজ পর্যবেক্ষণ করে নিম্নবর্ণিত ছাত্রদের উক্ত অনাকাঙ্ক্ষিত কাজে জড়িত থাকার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে। সে প্রেক্ষিতে হল প্রশাসনের গত ২৭ এপ্রিলে অনুষ্ঠিত সভার ৩ নম্বর সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে বহিরাগতদের নিয়ে গভীর রাতে হলের নারিকেল গাছসমূহের ডাব পেড়ে অন্যের অধিকার হরণের মত গর্হিত কাজ করায় কেন তাদের বিরুদ্ধে হলের শৃঙ্খলা পরিপন্থি কাজে সম্পৃক্ততার জন্য আবাসিকতা বাতিল করা হবে না, তা আগামী বৃহস্পতিবার (৮মে) অফিস চলাকালীন সময়ের মধ্যে তাদেরকে প্রাধ্যক্ষের কাছে লিখিতভাবে জানাতে বলা হচ্ছে।

অভিযোগের বিষয়ে ব্যাংকিং ও ইন্স্যুরেন্স বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী সুমন মিয়া বলেন, আমরা মজা করে বন্ধুরা মিলে মাত্র একটি গাছ থেকে অল্প কিছু ডাব পেরেছিলাম। কিন্তু প্রাধ্যক্ষ স্যার যেভাবে শতাধিক ডাব পাড়ার অভিযোগ করেছে আমাদের বিরুদ্ধে সেটা ভিত্তিহীন। আমাদের কাছে সেদিন রাতের ছবি ও ভিডিও আছে। যেহেতু রাতের বেলায় আমরা এ কাজ করেছি, সেজন্য দোষ স্বীকার করে প্রাধ্যক্ষ স্যারের কাছে বার বার ক্ষমা চেয়েছি। কিন্তু তিনি আমাদের ক্ষমা না করে হল থেকে নামিয়ে দেওয়ার ‘হুঁশিয়ারি’ দিয়েছেন। এ ঘটনার পর থেকে আমি মানসিকভাবে বিকারগ্রস্ত হয়ে আছি। হল প্রশাসন যদি আগে থেকেই এসব কর্মকাণ্ডের বিষয়ে নোটিশ দিয়ে রাখতো তাহলে আর এরকম কাজ আমাদের দ্বারা হতো না।

অভিযোগের বিষয়ে অন্যদের কল দেয়া হলেও সাড়া পাওয়া যায় নি।

এ বিষয়ে হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক মুহাম্মদ শরীফুল ইসলাম আরও বলেন, হলের ফল-ফলাদি ছাত্র-শিক্ষক-কমর্চারী সকলের অধিকার। বিগত সময়েও এসব ফল চুরির ঘটনা হলে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেছে। পুনরায় যাতে আর কেউ এমন বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে না পারে এজন্য তাদের বিরুদ্ধে এমন ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

লুবনা/রবিউল

×