ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ০৪ মে ২০২৫, ২১ বৈশাখ ১৪৩২

কুড়িগ্রামে পানি শুন্য দুই শতাধিক খাল ও বিল, জীবন-জীবিকা বিপর্যস্ত

রাজু মোস্তাফিজ, কুড়িগ্রাম  

প্রকাশিত: ২১:১৬, ৩ মে ২০২৫

কুড়িগ্রামে পানি শুন্য দুই শতাধিক খাল ও বিল, জীবন-জীবিকা বিপর্যস্ত

কুড়িগ্রামের ওপর দিয়ে প্রবাহিত ধরলা, তিস্তা, ব্রহ্মপুত্র, দুধকুমারসহ ১৬টি নদ-নদীর পানি নব্যতা সংকটে পড়েছে। পানি শুন্য হয়ে পড়েছে দুই শতাধিক খাল ও বিল। এতে মারাত্মক প্রভাব পড়েছে জীবন-জীবিকা ও জীব-বৈচিত্রে। বছরের পর বছর ধরে এ অবস্থা চলতে থাকলেও এসব নদ-নদীতে পানি ধরে রাখার কোন পদক্ষেপই নেয়নি সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষ। একদিন হারিয়ে যাবে মাছ সহ বিভিন্ন জীব বৈচিত্র।

জেলায় রয়েছে ১৬টি নদ-নদী। এর সাথে রয়ছে অসংখ্য সংযোগ খাল। এবং নদ-নদীর তলদেশ শুকিয়ে গেছে। কোথাও কোথাও সামান্য পানি থাকলেও নেই প্রবাহ। নদীর বুক জুড়ে ধুধু বালু চর। চাষাবাদ হচ্ছে ফসলও। একই অবস্থা জেলার ওপর দিয়ে প্রবাহিত সবগুলো নদ-নদীর। কুড়িগ্রামের জেলায় জালের মতো বিস্তার করে আছে ধরলা, তিস্তা, ব্রহ্মপুত্র, দুধকুমারসহ ১৬টি নদ-নদী। এসব নদ-নদীর উৎসমুখ ভারতে পানি সরিয়ে নেয়ার ফলে প্রতি বছর বর্ষার পরপরই পানি শুন্য হয়ে পড়ছে এসব নদ-নদী। নদীতে পানি না থাকায় শুকিয়ে গেছে দুই শতাধিক খাল-বিলও। এমন পরিস্থিতিতে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন নদী পাড়ের মানুষেরা। কৃত্রিম সেচ দিয়ে করতে হচ্ছে চাষাবাদ। নদীতে মিলছে না মাছও। প্রকৃতি ও নদী নির্ভর জীবন বাঁচাতে যে কোন উপায়ে সারা বছরই নদীতে পানি ধরে রাখার দাবি তাদের।

ধরলা পাড়ের কৃষক আবু হাসান ও মোঃ লুৎফর রহমান জানান নদীতে পানি নেই পানির কারণে আবাদের সমস্যা হচ্ছে।  যে জমিতে ১ লিটার ডিজেল হলে পানি নিতে পারি সেখানে জমিতে পানি দিতে  ৩/৪ লিটার ডিজেল লাগে। এতে আমাদের উৎপাদন খরচও বেড়েছে। দীর্ঘদিন থেকে বৃষ্টি নেই। এ কারণে এবার ধানের আবাদে প্রচুর সমস্যা হচ্ছে। বৃষ্টি নাই এমন থাকলে আবাদের প্রচুর সমস্যা হচ্ছে।

কুলাঘাট এলাকার জেলে আবদুর রউফ ও হাসেম আলী জানান আমাদের বাপ-দাদার পেশা মাছ ধরা। ছোট বেলা থেকে মাছ ধরছি এই ধরলা নদীতে। কিন্তু এখন পানি নাই নদীতে মাছ নাই যে দু চারটি মাছ হয় বিভিন্ন জাল দিয়ে মাছ শেষ করে ফেলে।  আমরা যে মাছ মেরে খাব তার কোন বুদ্ধি নেই মরুভুমি হয়ে হয়ে আছে নদী। আমরা গরীব মানুষ কিভাবে আগামীতে সংসার চালাবো জানিনা।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো: রাকিবুল হাসান, জানান ধরলা ও তিস্তা খননের মাধ্যমে নাব্যতা ফিরিয়ে আনার পরিকল্পণার কথা জানালেও নদ-নদীর ভাটির দিকে স্থাপনা নির্মাণ করে পানি ধরে রাখার কোন প্রকল্প নেই বলে জানায় সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মকর্তা।

রাজু

×