
ছবি: দৈনিক জনকন্ঠ
মাধবপুর উপজেলার তেলিয়াপাড়ায় নিশান সোসাইটি কয়েক হাজার গ্রাহকের টাকা আত্মসাতের ঘটনায় সাড়া জেলা জুড়ে তোলপাড় চলছে।
এরই মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন ছাড়া তেলিয়াপাড়া বন্ধু সঞ্চয় ও ঋনদান সমবায় সমিতি লি: নামে একটি এনজিও অতি মুনাফার লোভ দেখিয়ে মানুষের কাছ থেকে কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। নিশান সোসাইটি পালিয়ে যাওয়ার পর পরই বন্ধু সোসাইটির চেয়ারম্যান আবু সায়েদ অফিস বন্ধ রেখে কৌশলে পালিয়ে গেছে। এখন টাকা ফেরত আমানতকারিরা অফিসে ধরনা দিচ্ছিন। মাধবপুর সমবায় অফিসের লোকজনের সহযোগীতায় তেলিয়াপাড়ায় নিশান সোসাইটির মত বন্ধু সোসাইটিও ১০ কোটির টাকার অধিক টাকা পকেটস্থ করেছেন।
স্থানীয় ভুক্তভোগী আমানতকারিরা জানান, বন্ধু সোসাইটিটির চেয়ারম্যান আবু সায়েদ ৭ বছর আগে নিশান সোসাইটিতে চাকরি নিয়ে বাগানের লোকজনের কাছ থেকে আমানত সংগ্রহ করত। পরে আমানত সংগ্রহের বিদ্যা রপ্ত করে নিজেই মাধবপুর সমবায় অফিস থেকে বন্ধু ঋনদান সমবায় সমিতির লাইসেন্স নিয়ে ব্যাংকের কায়দায় প্রতি লাখে মাসে ২ থেকে ৩ হাজার মুনাফার অফার দেয়।
এই অফার সাধারণ চা বাগান সহ সাধারণ মানুষ বন্ধু সোসাইটিতে টাকা আমানত রাখে। প্রথমে আমানতকারিদের মুনাফার টাকা সময় মত দিয়ে সবার বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জন করে। এই খবরে এলাকার বিভিন্ন পেশার লোকজন কোটি কোটি টাকা জমা রাখে। টাকা জমা নিয়ে কৌশলে সুদাসল ফেরত দেওয়া বন্ধ করে দেয় বন্ধু সোসাইটি।
মাধবপুর উপজেলার বাঘাসুরা গ্রামের শাহ মোঃ মুরাদ বন্ধু সোসাইটির লোভের প্রলোভনে পড়ে ৩৮ লাখ টাকা জমা করে এখন পথে বসেছেন। বারবার টাকা চেয়ে টাকা ফেরত পাচ্ছেনা। টাকা ফেরত পেতে মাধবপুর উপজেলা নিঁর্বাহী অফিসারের সহযোগীতা চেয়ে তিনি লিখিত অভিযোগ করেছেন। শাহ মোঃ মুরাদ জানান, বন্ধু সোসাইটি লোভ ও লাভ দেখিয়ে তার কাছ থেকে ৩ শ টাকার জুডিশিয়াল ষ্টাম্পে লিখিত দিয়ে ৩৮ লাখ টাকা নিয়েছে। কিন্তু ৬ মাস ধরে টাকা ফেরত চাইতে গেলে নানা তালবাহানা শুরু করে। এখন তারা অফিস বন্ধ করে পালিয়ে গেছে।
তিনি বলেন তার মত শত মানুষের কাছ থেকে কয়েক কোটি টাকা পকেটস্থ করেছে তারা। বন্ধু সোসাইটির চেয়ারম্যান আবু সায়েদের সাথে এ ব্যাপারে বিভিন্ন মাধ্যমে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে কোন সাড়া মেলেনি।
মাধবপুর উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা ইসমাইল হোসেন তালুকদার জানান,তিনি যোগদানের পর বন্ধু সোসাইটি পরিদর্শন করতে তেলিয়াপাড়া কার্যালয়ে গেলে তাদের কার্যালয় বন্ধ পাওয়া যায়। বন্ধু সোসাইটির নানা অনিয়মের বিষয়ে কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। বেশ কয়েকজন বন্ধু সোসাইটির অনিয়ম ও আমানতের টাকা আত্বসাতের বিষয়ে অভিযোগ করেছেন।
মাধবপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার জাহিদ বিন কাসেম জানান, বন্ধু সোসাইটির অনিয়মের অভিযোগ পেয়েছি। সমবায় অফিসারকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
মিরাজ খান