ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১২ জুলাই ২০২৫, ২৮ আষাঢ় ১৪৩২

৭ ওয়ার্ড লাল জোনে

ডেঙ্গু ঝুঁকিতে চট্টগ্রাম নগরীর অধিকাংশ এলাকা

স্টাফ রিপোর্টার, চট্টগ্রাম অফিস

প্রকাশিত: ০০:০২, ৯ অক্টোবর ২০২৪

ডেঙ্গু ঝুঁকিতে চট্টগ্রাম নগরীর অধিকাংশ এলাকা

মহানগরীর বেশিরভাগ এলাকা ডেঙ্গু ঝুঁকিতে

মহানগরীর বেশিরভাগ এলাকা ডেঙ্গু ঝুঁকিতে। ৪১টি ওয়ার্ডের মধ্যে ৭টি ওয়ার্ডই রয়েছে অতি ঝুঁকিপূর্ণ তালিকায়। আর এ সাত ওয়ার্ড অতীব গুরুত্বপূর্ণ এবং জনঅধ্যুষিত। এসব এলাকায় মশক নিধন কর্মসূচি জোরদার করা উচিত বলে মনে করেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ও কীটতত্ত্ববিদরা।
চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় জানিয়েছে, শুধু সেপ্টেম্বর মাসেই ৫১৫ জন রোগী শনাক্ত হয়। যার মধ্যে অধিকাংশই নগরীর ৭টি ওয়ার্ডে। নগরীর ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বেড়ে চলায় উদ্বিগ্ন সকলে। চলতি বছরে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ১৬ জনের মৃত্যু হয়, তার মধ্যে শুধু সেপ্টেম্বরেই ১১ জন প্রাণ হারান। গত বছরের মতো মশাবাহিত এ রোগের প্রকট না হলেও অক্টোবরে আক্রান্ত  রোগীর সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে শঙ্কা করছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। 
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ, কীটতত্ত্ববিদ ও সিভিল সার্জন কার্যালয়ের মতে, এবার বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে শরৎকালে। তাই বর্ষা  মৌসুমে এবার ডেঙ্গুর হানা ছিল না। কিন্তু সেপ্টেম্বরে থেমে থেমে প্রচুর বৃষ্টিপাত হয়েছে, এজন্য মশাবাহিত এ রোগের বিস্তার ঘটেছে। তবে ডেঙ্গু এখন মৌসুমি রোগ নয় এর প্রকোপ সারাবছর -অক্টোবরে রোগী বৃদ্ধি পাওয়ায় উদ্বিগ্ন বাসিন্দারা।
সিভিল সার্জন কার্যালয়ের সূত্রমতে, ১ থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নগরীতে ৫১৫ জন রোগী শনাক্ত হয়। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি রোগী ১০৬ জন শনাক্ত হয়  কোতোয়ালিতে, ১০৩ রোগী বাকলিয়ায়, ৭৬ জন বায়েজিদ বোস্তামি, ৩৩ জন বন্দর, ৩২ পাহাড়তলী, ২৩ খুলশী এবং ২০ চকবাজার এলাকায়। ৭টি ওয়ার্ডই অতিঝুঁকিপূূর্ণ এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করেছে সিটি করপোরেশন ও সিভিল সার্জন কার্যালয়। এর বাইরে ঝুঁকিপূর্ণ রয়েছে পাঁচলাইশ, হালিশহর, পতেঙ্গা, চান্দগাঁও, ডবলমুরিং এলাকা। এর বাইরে যেসব কমঝুঁকিপূর্ণ এলাকা রয়েছে সেসব এলাকায়ও মশার তীব্র উৎপাত রয়েছে। 
চট্টগ্রামের ডেঙ্গুতে অতিঝুঁকিপূর্ণ ওয়ার্ডের বাসিন্দারা জানিয়েছেন, দিনে-রাতে মশার উৎপাত থেকে রেহাই মিলছে না। ঘন ঘন লোডশেডিংয়ের কারণে জনজীবন বিপর্যস্ত, যার ফলে মশারি ছাড়া ঘুমাতে হচ্ছে। শিশু ও বয়স্করা ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে পড়ছে। তীব্র জ¦র নিয়ে হাসপাতাল ও ল্যাবে ভিড় করছেন এসব এলাকার বাসিন্দারা। মশাবাহিত রোগ থেকে রক্ষা  পেতে চিকিৎসক ও সংশ্লিষ্টরা মশারি টাঙানোর পরামর্শ দিলেও রান্না ও গৃহস্থলী কাজের সময় মশার কামড় থেকে নিস্তার মিলছে না জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তাদের অভিযোগ, মশক নিধন কার্যক্রম নেই। নিয়মিত কোনো ওষুধ ছিটাচ্ছে না। সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্নতা কর্মীরাই কাজ করছে না। যার ফলে ঝিমিয়ে পড়েছে মশক নিধন কর্মসূচি। তবে বরাবরের মতো সিটি করপোরেশনের দাবি, তাদের ওষুধ ছিটানোর কার্যক্রম চলমান রয়েছে। 
এদিকে চট্টগ্রামে গেল ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আরও ২১ জন আক্রান্ত হয়েছে ডেঙ্গুতে। এ নিয়ে চলতি বছর আক্রান্তের সংখ্যা  পৌঁছল ১ হাজার ৮৬৭ জনে, যার মধ্যে শুধু সেপ্টেম্বরেই ৯০৭ জন। আর চলতি মাসের গেল ৭ দিনে আক্রান্ত হয়েছে ৩৬২ জন।

×