ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ০৪ মে ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১

তীব্র তাপপ্রবাহের বিরূপ প্রতিক্রিয়া

যশোরে পোনা উৎপাদন কেন্দ্রে মারা যাচ্ছে মা মাছ, নষ্ট হচ্ছে ডিম

স্টাফ রিপোর্টার, যশোর অফিস

প্রকাশিত: ২৩:৩০, ২২ এপ্রিল ২০২৪

যশোরে পোনা উৎপাদন কেন্দ্রে মারা যাচ্ছে মা মাছ, নষ্ট হচ্ছে ডিম

দাবদাহে যশোরে পোনা উৎপাদন কেন্দ্রে মা মাছ মারা যাচ্ছে

তীব্র তাপপ্রবাহে দক্ষিণাঞ্চলে সর্ববৃহৎ মৎস্য  পোনা উৎপাদন ও বিক্রয়  কেন্দ্র যশোরে চাঁচড়া মৎস্য হ্যাচারি ও ঘেরগুলোতে চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে মাছের  পোনা উৎপাদন। এ সেক্টরটি থেকে প্রায় সকল প্রকার দেশীয় সাদা মাছের চারা ও রেণু পোনা উৎপাদন করে দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করা হয়।
এখানকার মৎস্য পোনা চাষি ও হ্যাচারি মালিকদের দাবি তীব্র তাপপ্রবাহে পানিতে মাছের ডিম ও ব্রুট (মা মাছ) নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। ফলে মাছের পোনা উৎপাদন হচ্ছে না। তাদের দাবি চলতি এপ্রিল মাসের শুরু থেকে বেচাকেনা নেই এই বৃহৎ মৎস্য সেক্টরটিতে।
যশোর হ্যাচারি মালিক সমিতির তথ্যমতে যশোরে মাছের পোনা উৎপাদনকারী হ্যাচারি রয়েছে ৪০টি। এর মধ্যে বর্তমানে সচল রয়েছে ২৫টি। এদিকে রবিবার দুপুর তিনটায় যশোরের তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর আগের দিন যশোরের তাপমাত্রা ছিল ৪২ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
চাচড়া মৎস্যপল্লির পোনা চাষি, হ্যাচারি মালিকরা জানান, এপ্রিল মাসের শুরু থেকে যশোরে তীব্র দাপপ্রবাহ শুরু হয়েছে। একদিকে যেমন পানির সংকট অন্যদিকে পুকুরের পানি রোদে গরম হয়ে স্বাভাবিক তাপমাত্রা হারিয়ে ফেলছে। ফলে পানিতে ডিম বা ব্রুট (মা মাছ) ছাড়লে তা থেকে পোনা মাছ উৎপাদন হচ্ছে না। সব ডিম বা ব্রুট পানিতেই নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। ফলে লাখ লাখ টাকা লোকসানের সম্মুখীন হচ্ছেন পোনা চাষি ও হ্যাচারি মালিকরা।
চাঁচড়া মৎস্য পোনা বাজারের পোনা চাষি ও ব্যবসায়ী শাহাজাহান হোসেন বলেন, ‘আমার দুটি পুকুর আছে। দুটি পুকুরে সাদা মাছের পোনা উৎপাদন করে থাকি। বিগত এক মাস ধরে পোনা উৎপাদন করতে পারছি না। প্রচ- গরম এবং তাপপ্রবাহে পানি গরম হয়ে মাছের ডিম, ব্রুট নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘অতি খরতাপে অনেক জলাশয় শুকিয়ে গেছে। ফলে পাইকাররা মাছ সংরক্ষণ বা বিক্রি করার স্থান পাচ্ছে না। এজন্য পাইকাররাও এ চাঁচড়া মৎস্য হ্যাচারিতে পোনা কিনতে আসছে না।

মৎস্য ব্যবসায়ী ও রেণু পোনা চাষি আবির হাসান শিহাব বলেন, ‘পুকুরে পোনা মাছ উৎপাদনের জন্য ডিম বা ব্রুট ফেললেই মারা যাচ্ছে। অন্যদিকে কোনো টিউবওয়েল বা পাম্পে পানি উঠছে না, ফলে পোনা চাষের পানি পেতেও বেগ পেতে হচ্ছে।’ 
যশোর হ্যাচারি মালিক সমিতির সভাপতি ফিরোজ খান বলেন, ‘তীব্র তাপদাহে আমরা যারা মৎস্য চাষি বা পোনা চাষি আছি তারা চরম বিপদে রয়েছি।

আমার নিজেরও অনেক ব্রুট মারা গেছে। তাপদাহে পানির তাপমাত্রা বেড়ে গিয়ে পোনা মাছ মারা যাচ্ছে। প্রায় সকল ব্যবসায়ী এবং মৎস্য চাষিরা এ তীব্র তাপপ্রবাহে অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।’ যশোর জেলা মৎস্য অফিসার সরকার মুহাম্মদ রফিকুল আলম বলেন, বর্তমানে যশোরে তীব্র তাপপ্রবাহ চলছে।

×