ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

পরাজিত নৌকার প্রার্থীর ৩০টি বাড়িঘরে ভাংচুর-লুটপাট

নিজস্ব সংবাদদাতা, নাটোর

প্রকাশিত: ১৩:৪৪, ৮ জানুয়ারি ২০২৪

পরাজিত নৌকার প্রার্থীর ৩০টি বাড়িঘরে ভাংচুর-লুটপাট

বাড়িঘরে ভাংচুর-লুটপাট

নির্বাচনোত্তর সহিংসতায় নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় বাড়ি ও দোকানে হামলা, ভাংচুর ও টাকা লুটের ঘটনা ঘটেছে। সোমবার সকাল পর্যন্ত অন্তত ৩০টি এসব বাড়িঘর ও দোকানে হামলা করা হয়েছে। 
এসব বাড়িঘর ও দোকানপাট সদ্য সাবেক সংসদ সদস্য শহিদুল ইসলাম বকুলের অনুসারীদের।নবনির্বাচিত সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদের অনুসারিরা ও স্থানীয় বিএনপির কিছু নেতাকর্মী এ সহিংসতায় অংশ নিয়েছে বলে ভুক্তভোগীদের অভিযোগ। ঘটনার পর থেকে সাবেক সংসদ সদস্য শহিদুল ইসলাম বকুলের অনুসারীরা আত্নগোপনে আছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, রবিবার রাত ৯টায় ভোটের ফলাফল ঘোষণার পর স্বতন্ত্র প্রার্থী আবুল কালাম আজাদ নির্বাচিত হবার পর তার কর্মী হিসেবে পরিচিত দয়ারামপুর ইউনিয়নের চানপুর এলাকায় ইউপি সদস্য আক্কাস আলীর নেতৃত্বে তার ছেলে সবুজ, আওয়ামী লীগ কর্মী জাহিদুল, লিটন, শাহজালাল, কালুসহ ৮/৯ জন উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক উপ-পাঠচক্র সম্পাদক  জাকারিয়া হোসেনের বাড়িতে হামলা চালায়। 

এ সময় তার বাড়িতে ছিলেন মা আলেয়া বেগম ও দুই ভাই। এসময় তারা হাসুয়ার কোপে বাড়ির টিনের দেয়াল কেটে ঘরে ঢুকে ঘরের আসবাব ও টেলিভিশন ভাংচুর করে। এমন ঘটনা লালপুর ও বাগাতিপাড়া উপজেলার বিভিন্ন স্থানে ঘটছে।

জাকারিয়া বলেন, আমাকে যেখানে পাওয়া যাবে সেখানেই মেরে ফেলা হবে বলে আমার মা কে শাসিয়েছে মেম্বারের লোকজন।আমার বাসার সামনে এখনো মেম্বারের লোকজন আমার খোঁজে বসে আছে।

ফলাফল ঘোষণার পর দুই দফা হামলার ঘটনা ঘটে সাবেক সংসদ সদস্য শহিদুল ইসলাম বকুলের অনুসারী যুবলীগ কর্মী রুহুল আমিন রুবেলের বাড়িতে। 

বাগাতিপাড়া পৌরসভার টুনিপাড়া এলাকায় রুবেলের বাড়িতে প্রথমে স্থানীয় বিএনপি কর্মীরা ও পরে স্বতন্ত্র প্রার্থী আবুল কালামের সমর্থকরা হামলা চালায়। এসময় বাড়িতে থাকা এক লাখ ৬০ হাজার টাকা ও দুটি স্বর্ণের চেইন নিয়ে যায় বিএনপির কর্মীরা।

রুবেল বলেন, রাত থেকে আমার বাসায় আমাকে কয়েক দফা খুঁজতে এসেছে বিএনপি ও স্বতন্ত্র নির্বাচিত এমপির লোকেরা। আমার বাবা কুয়েত প্রবাসী।বাসার নারীদের বলে গেছে আমি বাসায় এলে পরিণতি খারাপ হবে। আমি এখন অন্য একজনের বাড়িতে অবস্থান করছি।

এছাড়া রবিবার রাতেই ভাংচুর করা হয়েছে দয়ারামপুর ইউনিয়নের সোনাপুর বাজারের মিস্টারের মুদি দোকান ও চাস্টল, বাগাতিপাড়া পৌর ১ নং আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বেলাল হাজি, আওয়ামী লীগ কর্মী কাচু ও তুষারের বাড়ি।

বকুল এমপির কর্মী সমর্থক নাসির উদ্দিন জানান, ফজরের নামাজশেষে সোনা পুর বাজারে চা খেতে গেলে আমার বাবার উপর হামলা চালিয়েছে কালামের লোকজন। পরে তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। 

বাগাতিপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নুরুল ইসলাম ঠান্ডু জানান, আওয়ামী লীগের কর্মীদের ২০টি বাড়িঘর ভাংচুর করা হয়েছে। আমাদের কর্মীরা বাড়ি ঘরে থাকতে পারছে না। দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে পরিস্থিতি আরো খারাপ হবে।

নৌকার প্রার্থী শহিদুল ইসলাম বকুল জানান, ফলাফল ঘোষনার পর থেকেই আমার অন্তত ৩০ জন নেতাকর্মীদের বাড়ী ঘরে ভাংচুর ও লুটপাট করা হয়েছে। কর্মী সমর্থকের উপর হামলা চালিয়ে আহত করা হচ্ছে। তারা হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছে। 

রবিবার রাত থেকে দুই উপজেলার বিভিন্ন স্থানে এমন হামলা চালানো হচ্ছে। এসব ঘটনায় জড়িতদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানান তিনি।

বাগাতিপাড়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নান্নু খান বলেন, আওয়ামী লীগের কিছু কর্মীর বাড়িতে হামলা করা হয়েছে। মৌখিকভাবে অভিযোগের পর পুলিশ পাঠানো হয়েছে। সকাল থেকেই পুলিশের টহল বাড়ানো হয়েছে।

এ বিষয়ে পুলিশ সুপার তারিকুল ইসলামের সাথে মুঠোফোনে কল দিলে তিনি ধরেননি।


 

তাসমিম

×