
জিও ব্যাগ ফেলে করোতোয়া নদীর বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধ রক্ষার চেষ্টা
গত কয়েকদিনের টানা বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার মধ্য দিয়ে বয়ে যাওয়া করতোয়া ও বাঙ্গালী নদীতে পানি বেড়েছে অস্বাভাবিক হারে। এর ফলে উপজেলার দুই ইউনিয়নের তিন-চারটি পয়েন্টে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধ। করতোয়া নদীর কাটাখালী পয়েন্টে শুক্রবার দুপুরে বিপৎসীমার ২৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। গত ২৪ ঘণ্টায় এখানে পানি বৃদ্ধি পেয়েছে ১১ সেন্টিমিটার। শুক্রবার ওই এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, উপজেলার মহিমাগঞ্জ ইউনিয়নের বালুয়া ও বোচাদহ এলাকায় বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধের একাধিক স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছে। এর মধ্যে বোচাদহ এলাকায় প্রায় ৬শ’ মিটার অংশ ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে।
পাশর্^বর্তী রাখালবুরুজ ইউনিয়নের বিষপুকুর এলাকাতেও বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধে ফাটল দেখা দিয়েছে। ওই এলাকার বাসিন্দারা আশঙ্কা করছেন, যে কোনো মুহূর্তে বাঁধ ভেঙে বিস্তীর্ণ ফসলি জমি ও বাড়িঘর তলিয়ে যেতে পারে। তারা অভিযোগ করেন, শুষ্ক মৌসুমে পানির উন্নয়ন বোর্ডের কোনো কার্যক্রম না থাকায় দীর্ঘদিন ধরে বাঁধটি ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে। বন্যার সময় আপৎকালীন ব্যবস্থা হিসেবে কিছু বালুভর্তি বস্তা ফেলা হলেও স্থায়ীভাবে ভাঙন প্রতিরোধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয় না। এ কারণে প্রায় প্রতি বছরই বাঁধ ভেঙে নদীর পানি ঢুকে পড়ায় স্থানীয়রা চরম ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন। চরবালুয়া গ্রামের বাসিন্দা খায়রুল আলম রাজা বলেন, ভাঙন রোধে অবিলম্বে স্থায়ী ও কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ না করলে মহিমাগঞ্জ, কোচাশহর, শিবপুর, শালমারা ও রাখালবুরুজ ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের শত শত একর জমির আখ, কলা, আগাম সবজি ও আমন ধানের আবাদসহ বিভিন্ন ফসল এবং বাড়িঘরের ব্যাপক ক্ষতি হয়ে যাবে।
গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. হাফিজুর রহমান জানান, গোবিন্দগঞ্জ ও পলাশবাড়ি উপজেলার কয়েকটি পয়েন্টসহ বিভিন্ন স্থানের বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধের আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত ও ঝুঁকিপূর্ণ কয়েকটি স্থানে জিও ব্যাগ নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে উপজেলার বিষপুকুর, বালুয়া, বোচাদহ ও পলাশবাড়ির কিসামত চেরেঙ্গা পয়েন্টে জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙন পরিস্থিতি রোধ করা হচ্ছে।