
অ্যাডভোকেট সুলতান আহমেদ মৃধা
পটুয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের জনপ্রিয় নেতা অ্যাডভোকেট সুলতান আহমেদ মৃধা। ত্যাগী, একনিষ্ঠ, কর্মীবান্ধব এবং মানবতাবাদী। সমাজ সেবা ও মানবিক গুণাবলি দিয়ে তিনি হয়ে উঠেছেন সাধারণ মানুষের আশা-ভরসার প্রতীক। সদর উপজেলা পরিষদ ও পৌরসভার সাবেক চেয়ারম্যান, বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ সুলতান আহমেদ মৃধা শুধু মূল দল আওয়ামী লীগই নয়, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের কাছেও জনপ্রিয়।
রাজনীতির জন্য অনেক ত্যাগ ও জেল-জুলুমের শিকার হয়েছেন তিনি। দলীয় নেতাকর্মীরা মনে করেন, আগামী সংসদ নির্বাচনে পটুয়াখালী-১ আসনে তার কোনো বিকল্প নেই। যেকোনো কঠিন পরিস্থিতি মোকাবিলায় মাঠের রাজনীতিবিদ হিসেবে সকলের কাছে তিনি গ্রহণযোগ্য। রাজনৈতিক জীবনে তিনি হারিয়েছেন তার বড় ছেলে যুবলীগ নেতা মাহামুদুল হক পলাশকে।
সুলতান আহমেদ মৃধা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমএ এবং সেন্ট্রাল ‘ল’ কলেজ থেকে এলএলবি পাস করেন। ছাত্রজীবন থেকেই সক্রিয় ছিলেন ছাত্রলীগের রাজনীতিতে। তিনি ১৯৭৩ সালে পটুয়াখালী সরকারি কলেজ ছাত্র সংসদ নির্বাচনে ছাত্রলীগ প্যানেলে সাহিত্য বিষয়ক সম্পাদক নির্বাচিত হন। রাজনীতির পাশাপাশি তিনি সবসময় সামাজিক কাজ করে যাচ্ছেন। করোনাকালে তিনি অসহায় ও কর্মহীন পরিবারের মাঝে খাদ্য সামগ্রী ও বিভিন্ন উপকরণ বিতরণ করেন।
পটুয়াখালীতে করোনা আক্রান্ত রোগীদের উন্নত চিকিৎসার জন্য ছয়টি আধুনিক কনসেনট্রেটর মেশিন ও বিভিন্ন সুরক্ষা সামগ্রী এবং পটুয়াখালী ২৫০ শয্যা হাসপাতালে চারটি কনসেনট্রেটর মেশিন এবং তিনটি ভেন্টিলেশন মেশিনসহ বিভিন্ন সুরক্ষা সামগ্রী বিতরণ করেন।
এ ছাড়া তিনি ব্যক্তিগতভাবে প্রতিনিয়তই দলীয় অসহায় নেতাকর্মী, কন্যাদায়গ্রস্ত দরিদ্র পিতা, বিভিন্ন ধর্মীয় ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সহযোগিতা করে চলছেন। গত শীতে তিনি সদর দুমকি ও মির্জাগঞ্জে নেতাকর্মী ও অসহায় দরিদ্র মানুষের মাঝে ১২ হাজার কম্বল বিতরণ করেছেন। গত কয়েক বছর ধরে দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে গিয়ে জেলার বিভিন্ন এলাকার হাট-বাজার, ধর্মীয় ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মতবিনিময়, গ্রাম বৈঠক ও পথসভা করে চলেছেন।
১৯৯৩ সালে তিনি বিএনপি সরকারের আমলে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়ে পটুয়াখালী পৌরসভা নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিপুল ভোটে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। বরিশাল বিভাগের ছয়জন পৌরসভা চেয়ারম্যানের মধ্যে তিনিই একমাত্র আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে জয়লাভ করেছিলেন। ছয় বছর পৌরসভা চেয়ারম্যান থাকাকালে পটুয়াখালী পৌর শহরে বিদ্যুৎ, ওয়াটার সাপ্লাই ও স্যানিটেশনের আওতায় ছয়টি পাম্প মেশিন স্থাপন এবং তিনটি ওভার হেড ট্যাঙ্ক নির্মাণের ব্যবস্থা করেন। তার একান্ত প্রচেষ্টায় ১৯৯৭ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের সময় পটুয়াখালী শহরের লঞ্চঘাট সংলগ্ন পৌর মার্কেট নির্মাণসহ ব্যাপক উন্নয়ন কাজ হয়েছে।
সুলতান আহমেদ মৃধা ২০০৯ সালে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান পদে বিপুল ভোটে বিজয়ী হন। প্রাথমিক শিক্ষায় বিশেষ অবদানের জন্য ২০১২ সালে জেলায় শ্রেষ্ঠ উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। এ ছাড়াও তিনি বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদানের জন্য একাধিক পদক পেয়েছেন।
রাজনীতিতে তার অবদানের কারণে সহধর্মিণী মিসেস লুৎফুন নেছাকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দশম জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত আসনে এমপি নির্বাচিত করেছিলেন। পাঁচ বছর এমপি থাকাকালে এলাকায় মসজিদ, মন্দির, মাদ্রাসাসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, অসহায় গৃহহীনদের পুনর্বাসনসহ অনেক উন্নয়নমূলক কাজ করেছেন।
ব্যক্তিগত জীবনে তার দুই ছেলে ও এক মেয়ে। বড় ছেলে জেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মাহামুদুর রহমান পলাশ ২০০৫ সালে জেলা যুবলীগের সম্মেলনে সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী ছিলেন। এই সময় একদল দুর্বৃত্তের হাতে তিনি নিহত হন। ছোট ছেলে আতিকুর রহমান মাসুম বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে সহকারী পরিচালক (অর্থ ও হিসাব) পদে কর্মরত আছেন। মেয়ে শামিমা নাসরিন শিল্পী ঢাকায় থাকেন এবং তার স্বামী বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে কর্মরত।
সুলতান আহমেদ মৃধা জেলা আওয়ামী লীগের অন্যতম সদস্য। এ ছাড়া, তিনি প্রায় ৪০টি সামাজিক সেবামূলক সংগঠন ও সংস্থার সঙ্গে সক্রিয়ভাবে জড়িত থেকে দক্ষতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে- হাজী হামেজ উদ্দিন মৃধা ডিগ্রি কলেজের প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি, পটুয়াখালী টাউন উচ্চ বিদ্যালয়ের সভাপতি, রেডক্রিসেন্ট সোসাইটি পটুয়াখালীর ভাইস-চেয়ারম্যান, পটুয়াখালী ডায়াবেটিক সমিতির অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ও সহ-সভাপতি, পটুয়াখালী বিএনএসবি চক্ষু হাসপাতালের আজীবন সদস্য, জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য, শহীদ মাহমুদুর রহমান পলাশ বৃত্তি ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি, পটুয়াখালী ক্লাবের সদস্য, দৈনিক পটুয়াখালী পত্রিকার প্রকাশক ও সম্পাদক এবং পটুয়াখালী প্রেস ক্লাবের সদস্য।
এম হাসান