ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

লক্ষ্মীপুরে ঘূর্ণিঝড় মোখা মোকাবিলায় সর্বোচ্চ সতর্কতা 

নিজস্ব সংবাদদাতা,লক্ষ্মীপুর

প্রকাশিত: ১৩:৫৪, ১৩ মে ২০২৩

লক্ষ্মীপুরে ঘূর্ণিঝড় মোখা মোকাবিলায় সর্বোচ্চ সতর্কতা 

নিরাপদ আশ্রয়ে মাছ ধরার নৌকা। ছবিটি মজু চৌধুরী হাট মাছ ঘাট থেকে তোলা

ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’র সর্বোচ্চ সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে লক্ষ্মীপুর জেলা প্রশাসন। জেলা সদরের মজুচৌধুরী হাট ফেরিঘাট ও লঞ্চঘাট থেকে দক্ষিণাঞ্চলের ভোলা-বরিশালসহ ২৩টি জেলার সঙ্গে নৌ-রুটে সকল প্রকার ফেরি ও লঞ্চসহ সকল প্রকার নৌ-যান চলাচল বন্ধ ঘোষণা করেছে স্থানীয় প্রশাসন। পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত বন্ধ এ আদেশ বলবৎ থাকবে। 

ফলে বরিশালসহ দক্ষিনাঞ্চলগামী ফেরি পারাপারের অপেক্ষায় মাল বোঝাই বহু যানবাহন ফেরিঘাটে আটকা পড়েছে। নৌ-যান চলাচল বন্ধ থাকায় এতে অনেক যাত্রীও ওপাড়ে যাওয়ার জন্য অপেক্ষা করে দূর্ভোগের শিকার হয়েছে। 
                     
ঘূর্ণিঝড় মোখার মোকাবেলায় জেলা দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভা হয়েছে। বর্তমানে উপকূলীয় জেলা লক্ষ্মীপুর ৮নং মহাবিপদ সংকেতের আওতায় রয়েছে জানান জেলা প্রশাসন। এতে ব্যাপক প্রস্তুতিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’ মোকাবিলায় আগাম প্রস্তুতিমূলক ব্যবস্থা গ্রহন করেছে ল²ীপুর জেলা প্রশাসন ও দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটি। জেলা প্রশাসক আনোয়ার হোছাইন আকন্দ এর সভাপতিত্বে শনিবার দুপুরে দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির জরুরী সভা অনুষ্ঠিত  হয়েছে। 

এ ব্যাপারে উপকূলীয় এলাকায়  মহাবিপদ সংকেতের লাল পতাকা উত্তোলন করা হয়েছে। জেলার রামগতি,কমলনগর, রায়পুর, সদরসহ এই চারটি উপকূলীয় উপজেলায় ইউএনওদের আশ্রয় কেন্দ্র গুলো প্রস্তুত করতে বলা হয়েছে। উপকূলীয় বাসিন্দাদের আশ্রয় কেন্দ্রে আনতে উপকূলীয় নদীতে নৌকা, ট্রলার প্রস্তুত রাখতে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। মাছ ধরার নৌকা এবং ট্রলারগুলো নিরাপদ আশ্রয় নেয়ার কূলে ফিরে আসছে। মাঠের আধাপাকা ধান কেটে ফেলছে কৃষক।

এ ছাড়া মাইকিং করে উপকূলবাসীকে নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নেয়ার নির্দেশ দেয়া হচ্ছে। আশ্রয় কেন্দ্র ছাড়াও স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা, মসজিদ গুলো আশ্রয় কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা হবে। সভায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। তিনি উপকূলীয় এলাকায় ২৮৫ টি আশ্রয় কেন্দ প্রস্তুত করা হয়েছে। 

রেড ক্রিসেন্টের সিপিপি’র এক হাজার ৬০ জন স্বেচ্ছাসেবী কর্মী প্রস্তুত রাখা হয়েছে। ৬৪ টি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে। জরুরী ভিত্তিতে বিতরনের জন্য ৪২০ মে.টন চাল বরাদ্ধ রাখা হয়েছে। এতে প্রায় ৮১ হাজার ২০০ লোক আশ্রয় নিতে পারবে। এতে নগদ আট লাখ ১২ হাজার রাখা হয়েছে। জেলা সদর, রামগতি, কমলনগর এবং রায়পুর উপজেলায় কন্ট্রোলরুম ৫টি কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। 

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সার্বিক নূর এ আলমের সঞ্চালনায় এতে আরো উপস্থিত ছিলেন, সদর উপজেলা সিভিল সার্জন ডা. আহমেদ কবির, নির্বাহী কর্মকর্তা এমরান হোসেন, জেলা ত্রান ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা, মো. ইউনুছ মিয়া, জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আমিনুল হক, ফায়ার সার্ভিসের উপসহকারী পরিচালক এনায়েতুর রহমান, রেডক্রিসেন্টসহ বিভিন্ন বিভাগীয় কর্মকর্তা এবং মিডিয়া কর্মীগণ। সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে।

সিপিপি কমলনগর টিম লিডার মো.সামছুদ্দোহা জানান, রেডক্রিসেন্টের সিপিপি’র এক হাজার ৬০জন স্বেচ্ছাসেবী কর্মী প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এরমধ্যে ৬৩০জন মহিলা এবং ৬৩০জন পুরুষ কর্মী রয়েছেন। সবকটি উপকূলীয় স্থানে প্রাথমিক সতর্ক সংকেত ৪নং পতাকা উত্তোলন করা হয়েছে জানান। মাইকিং করে মানুষকে নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নেয়ার জন্য আহবান জানানো হচ্ছে।

এসআর

×