ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

ব্রীজের অভাবে দুর্ভোগে দুই উপজেলার লক্ষাধিক মানুষ

রফিকুল ইসলাম রনি, চাটমোহর (পাবনা)

প্রকাশিত: ১১:৩৯, ৩১ মার্চ ২০২৩; আপডেট: ১১:৪৬, ৩১ মার্চ ২০২৩

ব্রীজের অভাবে দুর্ভোগে দুই উপজেলার লক্ষাধিক মানুষ

নদীতে ব্রীজ না থাকায় পাড় হতে হচ্ছে নৌকা ও বাঁশের সাঁকোয়। ছবি: জনকণ্ঠ

পাবনার চাটমোহর ও ভাঙ্গুড়া উপজেলার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত গুমানী নদীটি ভাটিতে যমুনা নদীতে গিয়ে মিশেছে। নদী পাড়েই অবস্থিত চাটমোহরের নিমাইচড়া ইউনিয়নের জন গুরুত্বপূর্ণ বৃহত্তর মির্জাপুর হাট। নদীর দুই পাড়ে দুই উপজেলার লক্ষাধিক মানুষের পারাপারের একমাত্র ভরসা বাঁশের সাঁকো আর বর্ষা মৌসুমে নৌকা। এই চরম দুর্ভোগ লাঘবে নদীর উপর একটি ব্রিজ নির্মাণের দীর্ঘদিনের দাবি এলাকাবাসীর। 

নদীর উত্তর পাড়ে পাবনা জেলার চাটমোহর উপজেলার নিমাইচড়া ইউনিয়ন। এই নদী পাড়েই ইউনিয়ন পরিষদ, ভূমি অফিস, মির্জাপুর ডিগ্রী কলেজ, মাদরাসা, উচ্চ বিদ্যালয়, ব্যাংক সহ বেশ কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। মির্জাপুরসহ নিমাইচড়া ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রাম এবং প্রাচীন ও ব্যবসা প্রসিদ্ধ বৃহত্তর মির্জাপুর হাটও নদীর উত্তর পাড়ে অবস্থিত। সপ্তাহে রবিবার ও বৃহস্পতিবার দুইদিন হাট বসে। হাট থেকে সরকার লাখ লাখ টাকা রাজস্ব আদায় করছেন। কিন্তু ব্রীজের অভাবে যোগাযোগ ব্যবস্থা না থাকায় এখন হাটটি বন্ধের উপক্রম।

দক্ষিণ পাড়ে একই জেলার ভাঙ্গুড়া উপজেলার অষ্টমনিষা ইউনিয়ন অবস্থিত। এখানেও নদী পাড়েই অষ্টমনিষা ইউনিয়ন পরিষদ, ইউনিয়ন ভূমি অফিস, হাসিনা মোমিন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, অষ্টমনিষা দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয়, অষ্টমনিষা বাজার, পোস্ট অফিসসহ সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। হাট বাজার, স্কুল কলেজ সহ বিভিন্ন প্রয়োজনে প্রতিনিয়ত দক্ষিণ পাড়ের মানুষকে উত্তর পাড়ে এবং উত্তর পাড়ের মানুষকে দক্ষিণ পাড়ে আসা-যাওয়া করতে হয়। 

অষ্টমনিষা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সুলতানা জাহান বকুল বলেন, হাট বাজার, ছাত্র ছাত্রীদের স্কুল ও কলেজসহ বিভিন্ন প্রয়োজনে আমাদের নদীর উত্তর পাড়ে যেতে হয়। অষ্টমনিষা ও মির্জপুরের মধ্যবর্তী গুমানী নদীতে ব্রীজ না থাকায় আমাদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। জন দুর্ভোগ লাঘবে এ স্থানে অতি দ্রুত ব্রীজ নির্মাণ প্রয়োজন। 

তিনি আরো বলেন, গত বর্ষায় মির্জাপুর গ্রামের এক প্রসুতি মা’র প্রসব বেদনায় ভুগছিলেন। তখন বাজে রাত ৯টা, নদীতে খেয়া নৌকা না পাওয়ায় চরম বিপদে পড়েন। তখন তাকে নদী পাড়েই একটি বাড়িতে নিয়ে প্রসব (সন্তান জন্ম) করানো হয়। 

নিমাইচড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নূরজাহান বেগম মুক্তি বলেন, মির্জাপুর একটি বড় ব্যবসা কেন্দ্র। নিমাইচড়া ইউনিয়ন পরিষদসহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা মির্জাপুরে অবস্থিত। পাশাপাশি নদীর অপর পাড় অষ্টমনিষাও একটি ইউনিয়ন সদর। এ দুই ইউনিয়নসহ দুই উপজেলার প্রায় লক্ষাধিক মানুষকে এ নদী পারাপার হতে হয়। 

উপজেলা সদরে যাতায়াতসহ বিভিন্ন প্রয়োজনে প্রতিদিন এ নদী পার হতে হয় আমাদের। ব্রীজ না থাকায় প্রতিনিয়ত ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে এলাকাবাসিদের। জনগুরুত্বপূর্ণ এ স্থানে একটি ব্রীজ হওয়া অতীব জরুরি প্রয়োজন। 

চাটমোহর উপজেলা প্রকৌশলী সুলতান মাহমুদ জানান, মির্জাপুর-অষ্টমনিষা ব্রীজের প্রস্তাবনা পাঠানো আছে ঊর্ধতন মহলে। ডিপিপি’র অন্তর্ভুক্ত হলে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে।

এসআর

×